সালেহ ইমরান: [২] শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সহিংস পরিস্থিতির মারাত্মক প্রভাব পড়েছে পাঁচ তারাকাসহ বিলাসবহুল হোটেল ব্যবসায়। অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে হোটেলগুলোতে আসছে না অতিথিরা। ইভেন্ট ও অনুষ্ঠানের বুকিংও নেই। বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় বিদেশি পর্যটক আসা প্রায় বন্ধ। এমনকি আগের বুকিংও বাতিল করছেন তারা।
[৩] বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা যায়, তারকা হোটেলগুলোতে অতিথি কমেছে ৯০ শতাংশ। রুম বুকিং নেমে এসেছে মাত্র ১০ শতাংশে। কক্সবাজারের সীগালসহ অভিজাত হোটেলগুলোর আগস্টের বুকিং প্রায় শতভাগই বাতিল করা হয়েছে। সবমিলিয়ে গত ১৫ দিনে ৫৫টি অভিজাত হোটেল হাজার কোটি টাকার বেশি লোকসান দিয়েছে।
[৪] সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইন্টারনেট বন্ধের কারণে এক সপ্তাহ বিদেশি অতিথিরা কোনো যোগাযোগ করতে পারেননি। এমনকি তারা হোটেল বুকিং বা বাতিল কিছুই করতে পারেননি। জুলাই মাসের মাঝামাঝির পর থেকেই শুরু হয়েছে এই বিপর্যয়। জুলাইয়ের শেষ দুই সপ্তাহে ৭০ শতাংশ বুকিং বাতিল হয়েছে। কর্পোরেট মিটিং, কনফারেন্স ও প্রদর্শনীর জন্য রুম ও হল বুকিং বাতিল হয়েছে প্রায় শতভাগ। চ্যানেল টুয়েন্টিফোর
[৫] দ্য ওয়েস্টিন হোটেলের জনসংযোগ বিভাগ জানায়, ১৬ জুলাইয়ের পর থেকে অভিজাত হোটেলগুলোতে অতিথি নেই বললেই চলে। তারকা হোটেলগুলোর আয়ের একটি বড় উৎস বলরুম ও হলরুমগুলোতে অনুষ্ঠিত সেমিবার-কনফারেন্স, যা এখন একেবারেই বন্ধ। বড় কোনো কর্পোরেট গ্রুপও ১৬-১৭ দিন ধরে কোনো অনুষ্ঠান করতে আসেনি। এছাড়া অতিথি না আসায় হোটেলের নিজস্ব রেস্তোরা ও বারগুলোর কার্য়ক্রমও সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে।
[৬.১] ঢাকা রিজেন্সি হোটেলের পরিচালক (বিক্রয় ও বিপণন) মাহমুদ হাসান বলেন, কোরবানীর ঈদের পর থেকে আমরা বেশ ভালে অবস্থায় ছিলাম। কিন্তু দুই সপ্তাহ ধরে ভয়াবহ অবস্থা। রুম বুকিং নেই, ইভেন্ট নেই কোনোকিছুই নেই। জুলাইয়ের ২০ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত সকল বুকিং বাতিল করতে হয়েছে। আগস্ট মাসের বুকিংও হচ্ছে না। আমাদের দেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন দেশে নেতিবাচক প্রচারণা চালানোয় আমরা এতোটা ক্ষতির শিকার হচ্ছি। এখন যে সামান্য সংখ্যক অতিথি আসছে তা দিয়ে হোটেলের দৈনিক রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালন ব্যয়ও মেটানো যাচ্ছে না। ঢাকা ট্রিবিউন
[৬.২] বনানীতে অবস্থিত গোল্ডেন টিউলিপ অ্যান্ড গ্রান্ডমার্ক ঢাকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ হক বলেন, ১৭ জুলই থেকে রুম ও হোটেল রিজার্ভেশন বাতিল শুরু হয়েছে। রিজার্ভেশন আগে যেখানে ৮০ শতাংশ ছিলো, সেটা এখন ২০ শতাংশে নেমে এসেছে।
[৭] বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি মহসিন হক হিমেল বলেন, গত ১৫ দিনে তারকামানের হোটেলগুলোর ব্যবসায়ে ধস নেমেছে। দেশের ৫৫টি অভিজাত ও তারকামানের হোটেল আমাদের সদস্য। আমরা এই বিপুল লোকসান কবে কাটিয়ে উঠতে পারবো জানি না। এসব হোটেলে বিদেশিরাই বেশি থাকে। দেশে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে অভিজাত হোটেলগুলো মহাবিপর্যয়ে পড়ে যায়। ইনকিলাব । সম্পাদনা: কামরুজ্জামান
এসবি২