মনজুর এ আজিজ: [২.১] জাতীয় সংসদে বড় পরিবর্তন ছাড়াই অর্থবিল ২০২৪ পাস হওয়ার পর রোববার পাস হয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট, যা ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। অর্থবিলে কিছু সংশোধনী আনার পাশাপাশি কিছু নতুন প্রস্তাবও পাস হয়েছে। এতে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আয় করমুক্ত করা হয়েছে।
[২.২] তবে একজন করদাতা ১৫ শতাংশের বেশি কর দিলে ওই করদাতার নথি নিরীক্ষায় ফেলা হবে না। এছাড়া ট্রাস্টের আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ কর বসবে। ব্যক্তিগত একাধিক গাড়ি থাকলেই সারচার্জ বসবে। কোম্পানির গাড়ির ক্ষেত্রে আগের মতোই মওকুফ থাকবে।
[৩] অর্থবিল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে এবারের বাজেটে। ধনীদের করছাড়ও রয়ে গেছে আগের জায়গায়। পাশাপাশি গত ৬ জুন প্রস্তাব করা বাজেটে এমপিদের কর দিয়ে গাড়ি আমদানি করার বিধানও টেকেনি।
[৪] বাড়তি রাজস্ব আদায়ের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ধনীদের ওপর করহার বাড়িয়েছিলেন। কিন্তু সেই অবস্থানে তিনি থাকতে পারেননি। ধনীদের আয়কর হার আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সর্বোচ্চ আয়কর হার ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে, যা বাজেট প্রস্তাবে ৩০ শতাংশ ছিল। বছরে যারা ৩০ লাখ টাকার বেশি করযোগ্য আয় করেন, তাদের ক্ষেত্রে হার আগের মতোই থাকলো।
[৫] গত ৬ জুন বাজেট ঘোষণার পর মুঠোফোনে বাড়তি কর, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া এবং করমুক্ত আয়সীমা না বাড়ানো নিয়ে সমালোচনা হয়। অন্যদিকে ধনীদের ওপর বাড়তি কর আরোপ এবং সংসদ সদস্যের শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুবিধা বাতিল করে কিছু শুল্ক আরোপের উদ্যোগের বিষয়টির প্রশংসা করা হয়। কিন্তু অর্থবিল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মুঠোফোনে কর কমেনি, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রয়েছে। করমুক্ত আয়সীমা বাড়েনি।
[৬] বাজেট প্রস্তাবের সময় শহর-গ্রাম নির্বিশেষে দেশের যেকোনো স্থানে কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করলে আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করেছিলেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, রিটার্ন জমার স্লিপ (প্রমাণপত্র) ছাড়া কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করা যাবে না। তবে শুধু সিটি করপোরেশন এলাকায় কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করতে এখন রিটার্ন জমার স্লিপ লাগবে।
[৭] বিয়ে, বিবাহবার্ষিকী, জন্মদিন, গায়েহলুদ, খতনাসহ সামাজিক অনুষ্ঠান করতে বর্তমানে ৪৩ ধরনের সেবা পেতে রিটার্ন জমার কপি লাগে। এই তালিকায় কমিউনিটি সেন্টার ও মিলনায়তন ছাড়া আরও কয়েকটি খাত যুক্ত করা হয়েছে। হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট, হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স নিবন্ধন ও নবায়নে রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা এনে বাজেটে পাস করা হয়েছে। অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্ক এলাকায় বিনিয়োগকারীরা বিনাশুল্কে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি করতে পারবেন। সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী
এমএএ/এসসি/এনএইচ
আপনার মতামত লিখুন :