গোবিন্দ শীল: [২] বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী এবং সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এই মুহূর্তে এ ধরনের পরিকল্পনা বাদ দিতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন।
[৩.১] বিসিআই সভাপতি আমাদের নতুন সময়কে বলেন, সরকার যদি এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে আমরা আরও বেশি ডলার সংকটে পড়ে যেতে পারি।
[৩.২] বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ডলারের মূল্য ক্রলিং পেগে ধার্য করার পর প্রকৃত মূল্যের সাথে পার্থক্য ৭/৮ টাকা (কম) থেকেই যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রবাসী আয়ের ওপর ট্যাক্স আরোপ করলে প্রবাসীরা হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠাতে উৎসাহিত হতে পারেন।
[৩.৩] বাস্তবতা হলো দেশে ডলারের রিজার্ভ কমে যাচ্ছে , তাই এখনই ডলারের আয়ের উপর, যেমন রপ্তানি আয় বা রেমিটেন্স খাতে রাজস্ব সুবিধা দিয়ে যেতে হবে। বিদেশি ঋণ বা বিদেশি সহায়তা থেকে আমাদের প্রবাসীদের আয় বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
[৩.৪] তিনি বলেন, যেহেতু যে কোন মূল্যে আমাদের জ্বালানি তেল ও খাদ্য আমদানি করতেই হয়, কাঁচামাল আনতেই হয়, তাই ডলার আমাদের লাগবেই। আর সেকারণেই প্রবাসীদেরকে প্রণোদনা দিতে হবে।
[৪.১] সিপিডির খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সরকার দেশের বিভিন্ন গোষ্ঠীকে নানা প্রণোদনা, কর সুবিধা ইত্যাদি দিয়ে থাকেন। এসব সুবিধা তাঁরা পান কারণ তাঁরা সরকারের ওপর অনেক সময় চাপ তৈরি করেন। স্বল্প আয়ের প্রবাসীদের কোনও প্রেসার গ্রুপ নেই। এই সময়ে তাঁদের পাঠানো অর্থের ওপর কর বসানো উচিৎ হবে না।
[৪.২] আমাদের নতুন সময়কে তিনি বলেন, পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক নয়। পাশাপাশি এও বিবেচনা করতে হবে যাঁরা বিদেশী মুদ্রা পাঠাচ্ছেন- তাঁরা যেখানে কাজ করছেন সেই দেশে কর দিয়ে থাকলে, তাঁদেরকে করের আওতায় আনলে প্রবাসীরা ডাবল ট্যাক্সেশনের শিকার হবেন।
[৪.৩] খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, এই মুহূর্তে বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভ স্বস্তিকর অবস্থায় নেই। এখন কর বসালে হিতে বিপরীত হতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যের ২৫ টি দেশের সাথে বংলাদেশের দ্বৈত কর পরিহার বিষয়ক চুক্তি রয়েছে।
[৫.১] বৈদেশিক মুদ্রার চাপ সামলাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে ৪৭০ কোটি বা ৪.৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিচ্ছে সরকার। ২০২৩ সালে শুরু হওয়া এ ঋণ প্রকল্পের শেষ কিস্তি ছাড় হবে ২০২৬ সালে। (বণিক বার্তা)
[৫.২] এরই মধ্যে সরকার সংস্থাটির দেয়া ঋণের সুদহার বাজারভিত্তিক করা, ডলারের বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া, টাকার রেকর্ড অবমূল্যায়ন, আর্থিক খাত সংস্কার, জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি ইত্যাদি শর্ত মেনে নিয়েছে।
[৫.৩] চলতি অর্থ বছরের প্রথম দশ মাসে ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসীরা ১৯ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন, যা আইএমএফের ঋণ প্যাকেজের চেয়ে অনেক অনেক বেশি।
[৫.৪] এক তথ্যে দেখা যাচ্ছে ২০১৯ সালের জুন থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ বছরেরও কম সময়ে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন প্রায় ১০৫ বিলিয়ন ডলার। এই রেমিটেন্স দেশের অর্থনীতির প্রাণ বাঁচিয়ে রেখেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব
আপনার মতামত লিখুন :