মনজুর এ আজিজ: [২] পোশাক শিল্পের টেকসই উন্নয়ন ও বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে এখনই ৩টি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা জরুরি বলে মনে করেন খাত সংশ্লিষ্টরা। এগুলো হচ্ছে: ডিকার্বোনাইজেশন, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পরের পরিস্থিতি মোকাবিলা ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বা উৎপাদন পদ্ধতিতে প্রযুক্তির স্বয়ংক্রিয়করণের প্রভাব। শনিবার গুলশানের একটি হোটেলে গোলটেবিল বৈঠকে ‘বুনন ২০৩০: নীতিনির্ধারণী আলোচনা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় এই তথ্য তুলে ধরা হয়। এটি উপস্থাপন করেন লাইটক্যাসল পাটনার্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক জাহেদুল আমিন।
[৩] মূল প্রবন্ধে বলা হয়, সবচেয়ে বেশি সংকট আসছে ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর। এলডিসির কারণে জেনারেলাইজড প্রেফারেন্স স্কিম (জিএসপি) সহ অন্যান্য বাণিজ্য সুবিধা কমে যাওয়া, শ্রমিকদের মজুরি বেড়ে যাওয়া, আন্তর্জাতিক ক্রেতা ও আমদানিকারকরা বাংলাদেশের চেয়ে তুলনামূলক কম খরচে পোশাক উৎপাদন করা দেশগুলোর দিকে ঝুঁকে পড়ার আশঙ্কা, পোশাক শিল্পের কিছুসংখ্যক মালিকরা কমপ্লায়েন্সসমূহ পুরোপুরি না মানার ফলে এই সংকট আরও বাড়বে।
[৪] রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী- বর্তমানে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। একই সূত্র অনুযায়ী, বাংলাদেশ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি করেছে।
[৫] বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য সূত্রে, ২০২৩ অর্থবছরে এই খাতে জিডিপির অবদান ১০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এতে কর্মরত রয়েছেন চার দশমিক এক মিলিয়ন বা ৪০ লাখের অধিক পোশাক শ্রমিক। যাদের ৬০ শতাংশই নারী। ফলে এখনই এই সমস্যাসমূহ মোকাবিলা করতে না পারলে এই শিল্পের পাশাপাশি সামগ্রিক অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
[৬] গোলটেবিল বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম. মাসরুর রিয়াজ। সূচনা বক্তব্য দেন এশিয়া ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম ডেভলপমেন্ট বিভাগের পরিচালক আইনি ইসলাম। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. সেলিম হোসেন বলেন, পোশাক শিল্পের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আওতায় (এফটিএ) রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি উৎপাদনভিত্তিক, সৃজনশীল ও সময়োপযোগী ব্যবসায়িক মডেল নিতে পারে।
[৭] বিডার মহাপরিচালক আরিফুল হক বলেন, দেশের পোশাক খাতের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চাহিদা অনুযায়ী কার্যকর রপ্তানিমুখী নীতি প্রয়োজন। এজন্য নীতিনির্ধারকরা দেশের বিখ্যাত কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠানের পরামর্শ নিতে পারেন।
[৮] কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক মো. আবদুর রহিম খান বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বাড়ানো ও বাজার সম্প্রসারণের জন্য ভারতের আদলে প্রোডাক্ট লিঙ্কড ইনসেনটিভ (পিএলআই) স্কিমের মতো সফল মডেলগুলো অনুসরণ করার তাগিদ দেন।
[৯] বিকেএমইএ এর নির্বাহী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ফাইবার উৎপাদনে বৈচিত্র্য আনতে, ম্যান-মেড ফাইবার (এমএমএফ) উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়া প্রয়োজন। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান
এমএএ/কে/এনএইচ
আপনার মতামত লিখুন :