মাসুদ আলম : নারায়ণগঞ্জে ফতুল্লায় স্ত্রীর সাবেক স্বামী ইউসুফ মিয়া ও মেয়ে ইয়াসমিন আক্তার ইমির হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন আবুল হোসেন সজিব (৩২) নামে এক ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় সজিবের বড় ভাই রাজীব বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় একটি মামলা করেন। এরপর পুলিশ ইউসুফ মিয়া ও ইমিকে গ্রেফতার করে গত মঙ্গলবার আদালতে পাঠালে আদালত তাদের কারাগারে পাঠান। এরআগে গত শুক্রবার সন্ধা ৭টায় ভুইগড় এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। এ সময় ইউসুফ মিয়া ও ইমি সজিবের উপর চাপাতি ও চাকু নিয়ে হামলা চালিয়ে এলোপাথারি কুপিয়ে মাথা, চোখে, চেহারায়,হাতে ও পায়ে গুরুতর জখম করে।
এক পর্যায়ে সজিবের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ইউসুফ ও ইমি পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় প্রো-একটিভ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। বর্তমানে সজিব চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত প্রাপ্ত হইয়ে ১০০ টিরও বেশি সেলাই দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, আহত সজিব সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল নয়াপাড়া এলাকার মৃত সামছুল হকের ছেলে। হামলাকারী ইউসুফ মিয়া জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার হাজীগন্জ পাঠানটুলি এলাকার মৃত ইয়াসিন চেয়ারম্যানের ছেলে। বর্তমানে ভুইগড় এলাকার সরদার বাড়ীতে ভাড়া থাকে। সজিবের স্ত্রী মিতুর সাবেক স্বামী ইউসুফ মিয়া। আর ইয়াসমিন আক্তার ইমি ইউসুফ মিয়া ও মিতুর মেয়ে। গত ৭ বছর আগে মিতু ইউসুফ মিয়াকে তালাক দেয়। এরপর মিতু সজিবের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বর্তমানে তাদের সংসারে মোহাম্মদ সাবিদ (৬) নামে এক পুত্র সন্তান রয়েছে। ইউসুফ তার শ্বশুরের ক্ষমতা ব্যবহার করে বেপরোয়া ছিলো। ইউসুফ আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতো।
গুরুতর আহত সজিবের স্ত্রী নাজিরা আক্তার মিতু জানায়, তার সাবেক স্বামী ইউসুফ মাদকাসক্ত ছিলো। তিনি মাদক সেবন করে তার সাথে প্রায়ই খারাপ ব্যবহার করত এবং মারধর করত। তিনি এ অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে ইউসুফকে তালাক দিয়ে সজিবকে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে ইউসুফ বিভিন্ন সময় মিতু ও সজিবকে মেরে ফেলার জন্য কয়েবার হামলা চালায়। রোজা ও ঈদকে কেন্দ্র করে মিতু স্বামী সজিবকে নিয়ে ভূইগড় এলাকায় পিত্রালয়ে বেড়াতে আসেন।
শুক্রবার সন্ধা ৭টার দিকে ইউসুফ ও ইমি মিতুর পিত্রালয়ে এসে মিতু ও তার স্বামী সজিবকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে ইউসুফ তার কাছে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়ে সজিবের মাথায় ও শরীরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে।এবং মেয়ে ইমির হাতে থাকা চাকু দিয়ে সজীবের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পোছাতে থাকে, সজীব একপর্যায়ে জীবন বাচাতে এইখান থেকে ছুটে সিড়ির উপর ঝাপিয়ে পড়ে নিচে চলে আসে এবং সজীবের ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে সজীবকে
উদ্ধার করে স্থানীয় প্রো-একটিভ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। বর্তমানে সজিব চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার মাথাসহ শরীরের আঘাত প্রাপ্ত বিভিন্ন স্থানে ১০০টিরও বেশি সেলাই দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ইউসুফ মাদকাসক্ত। তিনি এলাকায় মাদক ব্যবসা, ডিশ ও ইন্টারনেটের ব্যবসা করতো। আমাকে ও সজিবকে এর আগেও একাধিকবার হত্যার চেষ্টা করা হয়।
ফতুল্লা থানা পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার দুই আসামি কারাগারে রয়েছে।