শিরোনাম

প্রকাশিত : ১৬ মার্চ, ২০২৫, ১০:১৬ দুপুর
আপডেট : ১৬ মার্চ, ২০২৫, ০৩:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ডিবি হেফাজতে ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ এজাজের মৃত্যুর অভিযোগ, পুলিশের অস্বীকার

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে থাকা অবস্থায় ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ হেজাজ বিন আলম ওরফে এজাজের (৩৪) মৃত্যুর অভিযোগ তুলেছে পরিবারের সদস্যরা। শনিবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিহত এজাজের বাবা শাহ আলমের দাবি করে বলেন, ‘জামিনে থাকা সত্ত্বেও শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাতে ধানমন্ডির জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতাল থেকে এজাজকে ধরে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। পরে শনিবার সকালে অসুস্থ অবস্থায় তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে আজ সন্ধ্যায় তিনি মারা যান।’ 

তবে ডিবি হেফাজতে মৃত্যুর বিষয়টি অস্বীকার করেছে পুলিশ। ঢাকা মট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মোহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ‘এজাজ ডিবি হেফাজতে মারা যায়নি। কিছু দিন আগে গ্রেফতারের পর জামিনে বের হয় এজাজ। এরপর থেকে তিনি ধানমন্ডির জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখান থেকে হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে ঢামেক হাসপাতালে রেফার করেন। শনিবার ভোররাত ৪টা ৪০ মিনিটে তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় মারা যান এজাজ। যেহতু তার নামে মামলা রয়েছে, তাই ঢামেক হাসপাতালে তার সঙ্গে থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ উপস্থিত ছিল।’

ডিবি সূত্রে জানা যায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ওরফে ইমনের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হেজাজ ওরফে এজাজকে মোহাম্মদপুর থানার একটি মামলায় শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাতে তাকে জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার করে ডিবির ওয়ারী জোনাল টিম। পরে সেখান থেকে তাকে ডিবির কার্যালয়ে নেওয়ার পর আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে শনিবার সকালে তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিবির ওয়ারী বিভাগের (ওয়ারী জোনাল টিম) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ফজলুল করিম বলেন, ‘এ ব্যাপারে এখন ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলবো। এখন কিছু বলা যাচ্ছে না।’

এরআগে গত ১০ মার্চ (সোমবার) রাজধানীর রায়ের বাজার এলাকা থেকে এজাজকে গ্রেফতার করেছে যৌথ বাহিনী। পরদিন মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিকালে তাকে মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। পরেরদিন (বুধবার) আদালতের মাধ্যমে তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন। এরপর থেকে তিনি ধানমন্ডির জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন কারাভোগের পর গত ১৫ আগস্ট শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম, পিচ্চি হেলাল ও ইমনের সঙ্গে জামিনে মুক্তি পান এজাজ। মুক্তির পর থেকেই তিনি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, অপহরণ ও হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। কিছুদিন আগে এলিফ্যান্ট রোডে এক ব্যবসায়ীকে হত্যার উদ্দেশে গুলি ও কোপানোর ঘটনার মূল হোতা ছিলেন এজাজ। এছাড়া মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড ও কলাবাগান এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করতেন তিনি।

সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক

শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন ও পিচ্চি হেলাল বর্তমানে পলাতক থাকায় তাদের সন্ত্রাসী গ্যাং এজাজের নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছিলো। এলাকাবাসীর তথ্য অনুযায়ী, এজাজের নেতৃত্বে ১২০ থেকে ১৫০ জনের একটি সন্ত্রাসী চক্র সক্রিয় রয়েছে।

এজাজের বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় হত্যা, চাঁদাবাজি ও অপহরণসহ ১২ থেকে ১৫টি মামলা রয়েছে বলে জানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়