শিরোনাম
◈ নির্বাচনের আগে শর্ত দিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ ◈ হাজারীবাগের গণকটুলি সিটি কলোনী এলাকায় যৌথবাহিনীর অভিযান: আটক ১৫ ◈ নির্বাচনী সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে খুব দ্রুত আপনারা নির্বাচনের রোডম্যাপও পেয়ে যাবেন : প্রধান উপদেষ্টা  ◈ বিদেশে পাচার হওয়া ডলার ফেরত আনার জন্য ঢাকার প্রচেষ্টায় যুক্তরাজ্য সহায়তা দেবে ◈ অভিযুক্ত যতই শক্তিশালী হোক, যে বাহিনীরই হোক তাকে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই : প্রধান উপদেষ্টা ◈ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফারুকীর সাক্ষাৎ ◈ অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় সময়ের একটি দিনও বেশি থাকতে চাই না :মৎস্য উপদেষ্টা ◈ লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে সরে নিউইয়র্কে যেতে পারে অলিম্পিক ক্রিকেট ◈ ১৬ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৫ হাজার কোটি টাকা ◈ রাতে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে মাঠে নামছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ১৭ নভেম্বর, ২০২৪, ০৬:১০ বিকাল
আপডেট : ১৭ নভেম্বর, ২০২৪, ০৮:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ কাটছে না

মহসিন কবির: রাজধানী ঢাকাসহ কয়েক জেলায় খুনের ঘটনা বেড়েছে। ঢাকার মোহাম্মদপুরে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আসলেও অন্য এলাকায় অহরহ ঘটছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। কেউ ধরা পড়েছে আবার কেউ পালিয়ে গেছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে আইনশৃঙ্ঘলা বাহিনী।  

ডিএমপির তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ঢাকা মহানগরীর ৫০টি থানার দেড়শ'র বেশি স্পটে ঘটে এমন ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা। যাতে গত দুই মাসে খুন হয় অন্তত ৬৮ জন, এরমধ্যে শুধু মোহাম্মদপুরেই ১০ জন। 

গত ২৪ ঘণ্টায় খুন, ডাকাতি ও আট মাসের শিশু অপহরণের মতো চাঞ্চল্যকর তিনটি ঘটনা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। গত দুই মাসে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন অন্তত ৬৮ জন, আহত হয়েছেন অনেকে। 

১৪ নভেম্বর পশ্চিম ধানমন্ডি এলাকায় গভীর রাতে বাসায় ঢুকে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী এক চিকিৎসককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। পুলিশের ধারণা, চুরিতে বাধা দেওয়ায় এ কে এম আব্দুর রশিদকে (৮২) হত্যা করা হয়। আশপাশের ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে সন্দেহভাজন তিন যুবককে ওই বাসায় ঢুকতে ও বের হতে দেখা গেছে। 

এদিকে আজিমপুর এলাকার এক বাসা থেকে টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটের পাশাপাশি গৃহকর্তার ছোট্ট শিশুকেও তুলে নিয়ে গেছে ডাকাতরা।

হাজারীবাগ থানার ওসি সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেছেন, চিকিৎসক খুনের ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন নিহতের চাচাতো ভাই রেজাউল করিম। পুলিশ জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে। পুলিশ ও ভবনটির বাসিন্দাদের সূত্রে জানা যায়, পশ্চিম ধানমন্ডির ৮/এ নম্বর সড়কের ২৯৪/এ নম্বর বাসার দোতলায় থাকতেন আব্দুর রশিদ ও তাঁর স্ত্রী সুফিয়া রশিদ। তারাই ভবনটির মালিক। দু’জনই পেশায় চিকিৎসক। বছরের বেশির ভাগ সময় তারা যুক্তরাজ্যে থাকেন। 

তিনি আরও বলেন, তারা দেশটির নাগরিকত্বও পেয়েছেন। তাদের দুই সন্তানের মধ্যে ছেলে প্রকৌশলী মাহবুবুর রশিদ ও মেয়ে তামান্না রশিদও ওই দেশেই স্থায়ী বসত গেড়েছেন। রশিদ দম্পতি প্রতিবছর কিছুদিনের জন্য দেশে এসে থাকেন। এবার সেপ্টেম্বরে তারা আসেন। বৃহস্পতিবার রাতে রশিদ বারান্দার দরজা খুলে নামাজ পড়ছিলেন। তখন সেদিক দিয়ে দুর্বৃত্তরা বাসায় ঢোকে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ঘটনাস্থল পাঁচতলা বাড়িটির প্রতি তলায় দুটি করে ইউনিট। মালিকের ফ্ল্যাট ছাড়া বাকিগুলোয় শিক্ষার্থীরা ভাড়া থাকেন। নিউমার্কেট এলাকায়ও রশিদের মালিকানাধীন একটি ভবন রয়েছে। 

ঘটনাস্থলের পাশের ২৯৫ নম্বর ভবনের দোতলার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম জানান, আনুমানিক রাত পৌনে ৩টার দিকে তিনি রশিদ দম্পতির চিৎকার শুনতে পান। তখনই তিন যুবককে ভবন থেকে লাফ দিয়ে নেমে পালাতে দেখেন। খারাপ কিছু ঘটেছে অনুমান করে তিনি তখনই ওই ভবনের শিক্ষার্থীদের ডেকে বিষয়টি দেখতে বলেন। 

দোতলায় রশিদের পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া ঢাকা কলেজের দর্শন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী শোয়েব আহমেদ ও শাহেদ আরেফিন জানান, তারা দ্রুত মালিকের ফ্ল্যাটে ছুটে যান। তবে তখন বহিরাগত কেউ সেখানে ছিল না। সুফিয়া স্বামীর রক্তাক্ত দেহ নিয়ে বসেছিলেন। স্বামীর মাথায় পানি ঢালছিলেন তিনি। 

পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইদুর রহমান বাঁধন জানান, দ্রুত আব্দুর রশিদকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে গতকাল শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পাশের ২৯৭ নম্বর ভবনের বাসিন্দা শিক্ষার্থী রাফিন ইসলাম জানান, ঘটনার পরপর তিন যুবককে দৌড়ে পালাতে দেখেছেন। তাদের মুখে মাস্ক এবং একজনের গায়ে চাদর ছিল। তাদের বয়স আনুমানিক ২২-২৩ বছর। 

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, জিন্সের প্যান্ট পরা তিন যুবক ভবনটিতে ঢুকছে। আরেকটি ফুটেজে তাদের ভবন থেকে লাফ দিয়ে পালাতেও দেখা যায়। তবে তাদের চেহারা পরিষ্কার বোঝা যায়নি। নিহতের স্ত্রী ডা. সুফিয়া রশিদ জানান, স্বামীর চিৎকার শুনে তিনি এগিয়ে যান। কিছু বুঝে ওঠার আগেই কয়েকজন অন্ধকারের মধ্যে পালিয়ে যায়। আর রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন তাঁর স্বামী।

রশিদের গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের জালকুড়ি এলাকায়। 

হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে হাজারীবাগ থানা পুলিশ ছাড়াও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করেন। পিবিআইর এক কর্মকর্তা জানান, চুরি করতে গিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে তাদের মনে হচ্ছে না। বরং তুচ্ছ কোনো ঘটনার জের ধরে এমনটা ঘটে থাকতে পারে। এতে ভবনে থাকা শিক্ষার্থীদের কারও সম্পৃক্ততা রয়েছে বলেও তারা ধারণা করছেন। সিসিটিভি ফুটেজে যে তিনজনকে দেখা গেছে, তাদের পেশাদার অপরাধী বলে মনে হয়নি।

এদিকে গতকাল হাজারীবাগ এলাকায় সাইকেল চুরিতে বাধা দেওয়ায় কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে শাহাদাত আকবর হোসেন শান্ত (১৭) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

রাজধানীর আজিমপুরের একটি বাসা থেকে টাকা ও স্বর্ণালংকারের সঙ্গে আট মাসের শিশু জাইফাকেও তুলে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। ১৫ নভেম্বর সকালে আজিমপুর মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টার এলাকার বাসায় এ ঘটনা ঘটে। ওই বাসায় সাবলেট থাকা এক নারী এতে জড়িত বলে ধারণা করছে পুলিশ। অবশেষে ১৬ নভেম্বর শিশুটিকে উদ্ধার করেছে র‌্যা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার জসীম উদ্দিন বলেছেন, এমন একটি ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। গৃহকর্ত্রী ফারজানা আক্তারের ভাষ্য, পরিচিত এক নারীকে তিনি বাসার একটি ঘরে সাবলেট দিয়েছেন। এক সপ্তাহ আগে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয়। বৃহস্পতিবার থেকে তিনি বাসায় থাকতে শুরু করেন। এর পর শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ওই নারী আরও তিনজনকে সঙ্গে নিয়ে ফারজানার ঘরে ঢোকেন। এর পর তাঁকে বেঁধে রেখে মারধর করা হয়। তারা টাকা-গহনা লুট করে। শেষে ফারজানার শিশুসন্তানকেও নিয়ে যায় তারা। 

শিশুটির মায়ের এক সহকর্মী জানান, ফারজানা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে সাঁটমুদ্রাক্ষরিক হিসেবে কাজ করেন। তাঁর স্বামী আবু জাফর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। ওই বাসা থেকে দেড় লাখ টাকা ও চার ভরি স্বর্ণালংকার লুট হয়েছে বলে শুনেছেন তিনি।

বাসা থেকে শিশু অপহরণের ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকে পোস্ট দিয়েছেন। শিশুটির মায়ের এক সহকর্মী ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘আজ শুক্রবার আজিমপুর মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টার, লালবাগ টাওয়ারের পাশের গলি থেকে আমার অফিস কলিগ ফারজানার বাসায় ডাকাতি হয়েছে। ডাকাত (একজন মহিলা আর দু’জন পুরুষ) জিনিসপত্র ও একমাত্র বাচ্চা নিয়ে গেছে।’

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, সকাল ৮টা ৫৯ মিনিটে তিনজন বাসায় ঢোকে। লুটপাট শেষে শিশুটিকে নিয়ে ৯টা ২৪ মিনিটে বাসা থেকে বেরিয়ে যায় তারা।

রাজধানীর পল্লবীতে দুই ছেলেকে গলা কেটে হত্যার পর বাবা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৬ নভেম্বর) পল্লবীর হাজিরটেকে এ ঘটনা ঘটে। শিশু দুটির বয়স ৭ ও ৫ বছর বলে জানা গেছে। পুলিশ জানিয়েছে, পারিবারিক কলহের জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত ঘাতক বাবার নাম মো. আহাদ (৪০)। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পল্লবী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাজেদুল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে। মরদেহ দুটি মর্গে পাঠানো হবে।

রাজধানীর হাজারীবাগ পার্কের পাশে ছুরিকাঘাতে শাহাদাত হোসেন আকবর ওরফে শান্ত (১৭) নামে এক কিশোর খুন হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে হাজারীবাগ পার্কের পাশে মাদ্রাসার গলিতে গিয়াস উদ্দিনের বাড়ির সামনে এই ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ নভেম্বর বেলা ১১টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সে মারা যায়। নিহত শাহাদতের বাবা আফজাল হোসেন বলেন, হাজারীবাগ পার্ক এলাকায় সাইকেল চুরি করতে গেলে এলাকাবাসী কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের ধাওয়া করে।

নতুন মোড় নিয়েছে বগুড়া দুপচাঁচিয়ায় গৃহবধূ উম্মে সালমাকে হত্যার পর ডিপ ফ্রিজে রাখার ঘটনাটি। বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার নিহত গৃহবধূর ছেলে সাদ নয়, বাসার ভাড়াটিয়া মাবিয়া আক্তার এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছে দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশ।

পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের সময় ওই বাসা থেকে চুরি হওয়া মোবাইল ও ওয়াইফাই রাউটারের সূত্র ধরে ওই বাসার ভাড়াটিয়া মাবিয়া আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে উপজেলার গুনাহার ইউনিয়নের আব্দুর রহিমের ছেলে মোসলিম এবং তালুচ বাজারের নারায়ণ চন্দ্র দাসের ছেলে সুমনকেও গ্রেপ্তার করা হয়। মাবিয়া আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, চার মাস আগে উম্মে সালমার (৫০) বাসা ভাড়া নিয়ে মাদক ও অনৈতিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। বিষয়টি টের পেলে বাসা ছাড়ার নির্দেশ দেন উম্মে সালমা। ভাড়ার পাওনা টাকাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ক্ষুব্ধ হন মাবিয়া। এর জেরে দুই সহযোগী মুসলিম ও সুমন চন্দ্র সরকারকে নিয়ে হত্যার পর মরদেহ ফ্রিজে রেখে বেরিয়ে যান তারা।

গত ১০ নভেম্বর বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়ক সংলগ্ন ‘আজিজিয়া মঞ্জিল’ বাড়িতে খুন হন উম্মে সালমা। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে সময় র‌্যাব জানিয়েছিল, বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় হাত খরচের টাকা নিয়ে বিরোধে ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজুর (১৯) তার মা উম্মে সালমা খাতুনকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে। শুধু তাই নয়, ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে লাশ বাড়ির ডিপ ফ্রিজে রাখে। পুলিশ বলছে, নিহতের ছেলে নয়, বাড়ির ভাড়াটিয়াই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় চাঁদ ডাইং কারখানার মালিক, শিল্পপতি জসিম উদ্দিন মাসুমকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন তার কথিত প্রেমিকা রুমা আক্তার (২৮) ও রুমার বান্ধবী রোকসানা রুকু (২৬)।

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে ১৬৪ ধারায় দেয়া দুজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন নারায়ণগঞ্জ আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হায়দার আলী। লোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ডের আদ্যোপান্ত বর্ণনা দিয়ে সব তথ্য স্বেচ্ছায় ও অকপটে আদালতের বিচারকের খাস কামড়ায় স্বীকার করেন রুমা ও রুকু। রাতে আদালতে দুই আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান।

তিনি বলেন, পরকীয়া প্রেমিকা রুমা ও তার বান্ধবী রুকু ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। পরে আদালতের নির্দেশে আসামিদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। ১৩ নভেম্বর সকালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল উপশহরের লেকের পাড় থেকে কালো রঙের তিনটি পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় শিল্পপতি জসিম উদ্দিন মাসুমের মরদেহের ৭ টুকরো উদ্ধার করে পুলিশ। 

সিলেটের কানাইঘাট থেকে নিখোঁজ হওয়া শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিনকে (৫) অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষক শামীমা বেগম মর্জিনার পরিকল্পনায় অপহরণের পর বস্তাচাপা দিয়ে শিশুটিকে হত্যা করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন শামীমা। 

এ ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলেন মুনতাহার প্রতিবেশী কানাইঘাট সদরের বীরদল ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীমা বেগম মর্জিনা, তার মা আলিফজান বেগম, প্রতিবেশী নাজমা বেগম ও ইসলাম উদ্দিন। মর্জিনার নানিসহ আরও কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে। তবে তাদের নাম-পরিচয় জানায়নি পুলিশ। নিহত মুনতাহা কানাইঘাট সদরের বীরদল ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মুনতাহার পরিবারের সঙ্গে কারও বিরোধ ছিল না। কয়েক মাস আগে গৃহশিক্ষক হিসেবে মুনতাহাকে পড়াতেন প্রতিবেশী শামীমা। তার চলাফেরা ভালো মনে না হওয়ায় মুনতাহাকে আর পড়াতে হবে না বলে শামীমাকে নিষেধ করেন শিশুটির বাবা শামীম। সেই থেকে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। পরিকল্পনা করেন হত্যার। ৩ নভেম্বর সকালে বাবার সঙ্গে স্থানীয় একটি মাহফিল থেকে বাড়ি ফিরে প্রতিবেশী শিশুদের সঙ্গে খেলতে গিয়েছিল মুনতাহা। বিকাল হলেও বাড়িতে না ফেরায় খোঁজ নিতে গিয়ে আর সন্ধান পাওয়া যায়নি। নিখোঁজের পর থেকে পরিবার দাবি করে আসছিল, পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়