শিরোনাম
◈ লিভারপুলকে হারিয়ে নিউক্যাসল ৭০ বছর পর ঘরোয়া ফুটবলের শিরোপা জিতলো  ◈ টেনিসের আদলে ৫ বিলিয়ন ডলারের ক্রিকেট লিগ চালু করছে  সৌদি আরব ◈ লাকসামে আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেফতার ৫ ◈ দেশের কোচদের নিয়ে জাতীয় দলের ছায়া কোচিং প্যানেল চান খালেদ মাহমুদ সুজন ◈ কর্মবিরতিতে যাওয়া মেট্রোরেলের স্টাফরা কাজে ফিরেছেন, মেট্রোরেলের কার্যক্রম স্বাভাবিক ◈ ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে মার্কিন যুদ্ধজাহাজে হুথির ‘হামলা’ ◈ উর্দু ভাষায় আলাপচারিতার ভাইরাল ভিডিও নিয়ে বিএনপি ও হেফাজত নেতা যা বলছেন ◈ ব্যাংকের প্রতিটি শাখায় স্কুল ব্যাংকিং চালু করতে হবে ◈ দুটি কারণ পাওয়া গেছে এসএসসিতে পরীক্ষার্থী কমে যাওয়ার ◈ যে কারনে কর্মবিরতির ঘোষণা মেট্রোরেল কর্মীদের

প্রকাশিত : ১৫ আগস্ট, ২০২৪, ০১:৩৯ রাত
আপডেট : ১৬ মার্চ, ২০২৫, ০৮:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আমি ভেবেছিলাম তারা আমাকে মেরে ফেলবে, ‘আয়না ঘর’ নিয়ে মুখ খুললেন ব্যারিস্টার আরমান

গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরই আয়না ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন সাবেক এক সেনা কর্মকর্তাসহ গুম হওয়া বেশ কয়েকজন। 

এ তালিকায় আছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন নেতা মীর কাশেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আরমান। সেখানে প্রায় ৮ বছর আটক ছিলেন তিনি।

বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই বন্দিশালাকে শেখ হাসিনার ‘গোপন কারাগার’ আখ্যা দিয়েছেন আরমান। 

তিনি বলেন, চোখ বেঁধে, হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে দীর্ঘ ৮ বছর পর গোপন কারাগার থেকে তাকে বের করে নিয়ে আসা হয়। তবে কেন বের করা হচ্ছে তা জানতেন না তিনি, কী হয় এ নিয়ে বেশ আতঙ্কের মধ্যেই একটি পিস্তল লোড করার শব্দ শুনতে পান তিনি।

গুলি করার বদলে এদিন ঢাকার উপকণ্ঠের একটি কর্দমাক্ত জায়গায় গাড়ি থেকে জীবিত অবস্থায় ফেলে দেওয়া হয় ৪০ বছর বয়সী এই ব্যারিস্টারকে। তবে মুক্ত হওয়ার পর ব্যারিস্টার আরমান জানতেন না, দেশে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছিল। 

এএফপিকে ব্যারিস্টার আরমান বলেন, ‘আট বছরের মধ্যে সেদিন আমি প্রথমবারের মতো মুক্ত বাতাস পাই। আমি ভেবেছিলাম তারা আমাকে মেরে ফেলবে।’ব্যারিস্টার আরমানকে আটকে রাখা হয়েছিল একটি গোপন কারাগারের জানালাবিহীন একটি ঘরে। এই কারাগারে যারা থাকেন সেখানে তারা নিজেকে ছাড়া আর কাউকে দেখতে পান না। 

তিনি জানান, গোপন এ কারাগারের রক্ষীরা সারাক্ষণ উচ্চ শব্দে গান ছেড়ে রাখত। এজন্য আজান শুনা যেত না এবং কখন কোন নামাজের সময় হয়েছে তা বুঝা যেত না। এ ছাড়া কত সময় আটকে আছেন সেটিও বোঝার উপায় ছিল না। আর কারারক্ষীদের কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বাইরের কোনো খবরই যেন বন্দিদের কাছে না যায়। তবে গানের শব্দ বন্ধ হলে বুঝা যেত এ কারাগারে তিনি একা নন। আরও অনেকে আছেন। কারণ তিনি অন্যদের চিৎকার ও কান্নাকাটির শব্দ ভেসে আসত।

ব্যারিস্টার আরমান আরও জানান, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ফাঁসি হওয়া তার বাবাকে ফাঁসি দেওয়ার কয়েকদিন আগে তাকে গুম করা হয়। ওই সময় তিনি তার বাবার পক্ষে আইনি লড়াই করছিলেন। তখন মিডিয়ায় প্রকাশ্যে বিভিন্ন কথা বলছিলেন তিনি। তার বাবার বিচার নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগও করছিলেন। তবে এসব করার জন্য তাকে টার্গেট করা হতে পারে এটা ভাবেননি তিনি।

ব্যারিস্টার আরমান জানান, একদিন রাতে তারা আমার বাড়িতে হানা দেয়। আমি কোনোদিন ভাবতেও পারিনি আমার বাবার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কয়েকদিন আগে আমাকে গুম করা হতে পারে। আমি তাদের বলতে থাকি, আপনারা জানেন আমি কে? আমাকে আমার মামলা চালিয়ে যেতে হবে। পরিবারের পাশে থাকতে হবে।

আরমানকে গুম করার চার সপ্তাহ পর মীর কাশেম আলীর ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করা হয়। কিন্তু সে খবর আরমান জানতে পারেন আরও তিন বছর পর। সেখানকার এক রক্ষী ভুলক্রমে তাকে জানিয়ে দেন তার বাবা মীর কাশেম আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তার বন্দিকালীন সময় পরিবার যেন গুমের ব্যাপারে কোনো কথা না বলে, সে ব্যাপারে প্রতি বছরই সতর্ক করে দেওয়া হতো।

নিজের মুক্ত জীবনের জন্য শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়ে ব্যারিস্টার আরমান বলেন, পুরো বিষয়টি সম্ভব হয়েছে কিছু তরুণের মাধ্যমে। যখন আমি এসব শিশু, বাচ্চাদের দেখি। আমি সত্যিই আশা দেখি এটি একটি সুযোগ হবে যেখানে বাংলাদেশ নতুন দিক খুঁজে পাবে। সূত্র : যুগান্তর

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়