সুজন কৈরী: [২] দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পোশাকে পণ্যবাহী গাড়ি থামার সংকেত দিত ডাকাত দলের সদস্যরা। এরপর গাড়ির চালক ও হেলপারের হাত-পা বেঁধে গাড়িসহ পণ্য ডাকাতি করতো তারা। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জে একটি ডিমের গাড়ি ডাকাতির ঘটনায় চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মতিঝিল বিভাগ।
[৩] গ্রেপ্তাকৃতরা হলো- আসলামুল হক আসলাম ওরফে বেলাল (৩৭), রমজান শেখ ওরফে কালু (৪০), মেহেদী শেখ হিরা (৩৩), জমির খান (৩৬) ও মো. জহিরুল ইসলাম চকিদার (৫০)।
[৪] এছাড়া সাভারের চান্দিনায় ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ফেরার পথে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে ডাকাতির ঘটনায় অপর ডাকাত দলের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- জাহাঙ্গীর আলম (৪২), মো. মিরন ওরফে সুজন (৫০), মো. মেহেদী হাসান রাজীব (৩০), আব্দুল মতিন (৪২), বাদল মুন্সী (৪৫) ও সাগর ইসলাম (২৪)। তাদের কাছ থেকে ডাকাতিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন মডেলের পাঁচটি গাড়ি, পুলিশের ওয়্যারলেস, জ্যাকেট উদ্ধার করা হয়েছে।
[৫] রোববার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবির কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, মহাসড়কে ডিবি পুলিশের পোশাক পরে লেজার লাইট দিয়ে সংকেত দিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি থামিয়ে ডাকাতি করছিলো তারা।
[৬] এই চক্রটি ধারাবাহিকভাবে মূল্যবান যেকোনো পণ্যবাহী গাড়ি দেখলেই সংকেত দিতো। সম্প্রতি রূপগঞ্জে ডিমবাহী গাড়ি থামিয়ে চালকের হাত-পা বেঁধে ডাকাতির ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই চক্রটি ডাকাতি করা পণ্য বিক্রি করত। পাশাপাশি ডাকতি করে নেওয়া গাড়ি দিয়ে তারা আবার ডাকাতি শুরু করে।
[৭] তিনি বলেন, আমাদের ধারাবাহিক অভিযানে সাভারের চান্দিনায় এক ব্যবসায়ী ব্যাংক থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়ে যাওয়ার পথে ডাকাতির শিকার হন। এই ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সব মামলা তদন্ত করতে গিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির ঘটনা বেশ কয়েকটি মামলা শনাক্ত করা হয়েছে। সে সব ঘটনায় এই দুই ডাকাত দলের সদস্যরা জড়িত।
[৮] ভুক্তভোগীদের দায়ের করা মামলায় দেখা গেছে, এই ডাকাত দলের সদস্যরা প্রতিদিনই মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি ডাকাতি করত। তারা প্রথমে পুলিশ সেজে গাড়ি থামার সংকেত দিতো। এরপর পুলিশ পরিচয়ে গাড়ির কাগজ ও মালামল সম্পর্কে জানতে চায়। এই সময়ের মধ্যে ডাকাত দলের অন্য সদস্যরা চালক ও তার সহকারীর হাত-পা বেঁধে নিজেদের অন্য গাড়িতে তুলি নিত। পরবর্তীতে তারা পণ্যবাহী গাড়ি নিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে পণ্য বিক্রি করে সটকে পড়ত।
[৯] অতিরিক্ত কমিশনার আরও বলেন, আমরা বলতে চাই দেশের কোথাও ডাকাতির ঘটনা ঘটলে অবশ্যই মামলা করবেন। কারণ মামলা হলে তখন এই সব চক্রের বিরুদ্ধে পুলিশ কাজ করতে পারবে। কারণ গ্রেপ্তার ডাকাত দলের প্রত্যেক সদস্যের বিরুদ্ধে পাঁচ থেকে ১২টি পর্যন্ত মামলা রয়েছে। তারা সবাই পেশাদার ডাকাত দলের সদস্য।
[১০] অভিযান সংশ্লিষ্ট মতিঝিল বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেপ্তার ডাকাত দলের সদস্যরা নিজেদের আড়াল করতে অত্যন্ত কৌশলী। তারা নানা প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করত। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান
এসকে/কে/একে
আপনার মতামত লিখুন :