শিরোনাম
◈ ইতিহাস গড়ে কোপার সেমিফাইনালে কানাডা ◈ বেড়েই চলেছে যমুনার পানি, ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি ◈ ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট হলেন মধ্যপন্থী মাসুদ পেজেশকিয়ান ◈ কেবল ঈশ্বরের আদেশ পেলেই আমি নির্বাচন থেকে সরবো: বাইডেন ◈ রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় ট্রেনে কাটা পরে এক ব্যক্তির মৃত্যু ◈ স্বাগতিক জার্মানিকে হারিয়ে সেমিফাইনালে স্পেন ◈ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য এই অনুষ্ঠান: শেখ হাসিনা ◈ কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা দাম বাড়ল সবজির, পেঁয়াজ ১১০, কাঁচামরিচের ত্রিপল সেঞ্চুরি ◈ দাবার আসরেই মারা গেলেন গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান ◈ নোবেলবিজয়ী কেনো এমডি পদের জন্য লালায়িত, বুঝলাম না: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০৩ জুলাই, ২০২৪, ০৬:৪৬ বিকাল
আপডেট : ০৩ জুলাই, ২০২৪, ০৬:৪৬ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নেশার টাকার জন্য চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই, গ্রেপ্তার ৭

সুজন কৈরী: [২] গ্রেপ্তার অভিযুক্তরা হলেন- নাহিদ শেখ (২২), মো. হুমায়ুন (৪০), লিটন খান (৪৫), জুবায়ের হাসান অমি (১৯), শাজিদুল ইসলাম হাসিব (১৯), রাকিবুল (২০) ও জুয়েল (২০)। তাদের মধ্যে নাহিদ, হুমায়ুন, লিটন, জুবায়ের ও হাসিব আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এই ঘটনায় আরও এক আসামি পলাতক রয়েছেন।  

[৩] মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মাদক ও অনলাইনে জুয়ার টাকা জোগাড় করতে তারা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে হত্যাকারীরা। এ জন্য তারা এমন ব্যক্তিকে টার্গেট করে যে ছিনতাইয়ের সময় বাধা দিতে পারবে না।

[৪] পরিকল্পনা অনুযায়ী, বন্ধুরা মিলে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে রবিউল ইসলামের অটোরিকশাটি ভাড়া করে। এরপর নরসিংদীর শিবপুর থানা এলাকার বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে যায় অটোরিকশা চালক রবিউলকে। সেখানে তাকে হত্যার পর অটোরিকশাটি ছিনিয়ে নেয় তারা।

[৫] সংবাদ সম্মেলনে নরসিংদী জেলার পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. এনায়েত হোসেন মান্নান বলেন, গত বছরের ২৯ অক্টোবর সকালে নরসিংদীর শিবপুরের সাতপাইকা পাঁকা রাস্তার পাশে ধানক্ষেত থেকে অজ্ঞাতনামা এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

[৬] খবর পেয়ে নরসিংদী জেলার পিবিআই ও ক্রাইম সিন দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরপর তথ্যপ্রযুক্তি ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ভুক্তভোগীর পরিচয় শনাক্ত করা হয়। ভুক্তভোগী রবিউল ইসলামের মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। 

[৭] গুরুত্ব বিবেচনায় মামলাটি নরসিংদীর পিবিআই গ্রহণ করে তদন্ত শুরু করে। এ সময় জানা যায়, ভুক্তভোগী একজন অটোরিকশা চালক। তিনি সেলফোন ব্যবহার করতেন না। ঘটনার কোনো ক্লু না থাকায় শিবপুর অঞ্চলে যাদের বিরুদ্ধে চোরাই অটো বাইক ও গাড়ি ক্রয়-বিক্রয়ের অভিযোগ রয়েছে তাদেরই একজন রাকিবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

[৮] জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আসামি ঘটনায় সংশ্লিষ্ট অটোরিকশাটি নাহিদের মাধ্যমে বিক্রিতে সহায়তা করার কথা স্বীকার করেন। কিন্তু হত্যার বিষয়ে কোন তথ্য দিতে পারেনি। তার দেওয়া তথ্যে, আসামি নাহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামি নাহিদ যে গ্যারেজে নিহত রবিউলের অটোরিকশাটি বেচাকেনা হয়েছিল সেটি শনাক্ত করে দেন। এরপর একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে হুমায়ুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যে লিটন খাঁনের গ্যারেজ থেকে ছিনতাই হওয়া অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়।

[৯] গাড়িটি যাতে কেউ চিনতে না পারে সে জন্য গাড়ির রং ও কিছু পার্টস পরিবর্তন করে অভিযুক্তরা। পরে গ্যারেজ মালিক লিটন খাঁন অটোরিকশাটি ৩০ হাজার টাকায় কেনেন। আসামি নাহিদকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে বাকি অভিযুক্তদের নাম জানায়।

[১০] পিবিআই নরসিংদীর জেলা পুলিশ সুপার বলেন, হত্যাকারী দুজনসহ গাড়ি ক্রয় বিক্রয়, রং ও মডেল পরিবর্তন ও সংরক্ষণের সংশ্লিষ্ট মোট ৫ আসামি ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, ভুক্তভোগী রবিউল হত্যাকাণ্ড ও অটোরিকশা ছিনতাইয়ে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামি অমি, নিহাল, হাসিব এক সঙ্গে চলাফেরা করতেন। তারা নিয়মিত মাদক সেবন করতেন ও অনলাইনে জুয়া খেলতেন। একপর্যায়ে আসামিরা মাদক ও জুয়ার টাকা সংগ্রহের জন্য অটোরিকশা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে।

[১১] তারা সহজ সরল অটোচালক রবিউল ইসলামকে চিনত বিধায় তাকেই টার্গেট করেন। ঘটনার দিন বিকেলে আসামি অমি, নিহাল, হাসিব শিবপুর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে ভুক্তভোগী রবিউলকে পেয়ে তার অটোরিকশা নিয়ে আসামি শাজিদুল ইসলাম হাসিবের বাড়ির সামনে থাকতে বলেন। অমি ও নিহাল এর আগেই হাসিবের বাড়ির সামনে উপস্থিত হন।

[১২] ভুক্তভোগী রবিউল হাসিবের বাড়ির সামনে গেলে অভিযুক্তরা তার অটোরিকশা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরি করে আড্ডা দেয়। একপর্যায়ে শিবপুরের সাতপাইকার ঘটনাস্থলে পৌঁছে ১০ থেকে ১৫ মিনিট আড্ডা দেয়। আড্ডা শেষে বাড়ির দিকে রওনা হওয়ার কথা বলে আসামিদের দুইজন পেছনে এবং একজন সামনের আসনে চালক রবিউলের পাশে বসেন। 

[১৩] পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, হাসিব ও নেহাল রবিউলের হাত পা জাপটে ধরে রাখেন। এ সময় আসামি অমি চাপাতি দিয়ে রবিউলের গলায় কোপ দেন। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান রবিউল। এরপর আসামিরা তার মরদেহ ধানক্ষেতে ফেলে দিয়ে অটোরিকশাটি নিয়ে পালিয়ে যান।

[১৪] এসপি এনায়েত হোসেন বলেন, আসামি অমির দেওয়া তথ্যে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতিটি উদ্ধার করা হয়। পলাতক আসামি নেহালকে ধরতে অভিযান অব্যাহত।

[১৫] তিনি আরও জানান, সম্প্রতি চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েছে। এমন ঘটনা প্রতিরোধে প্রত্যেকটি অটোরিকশার ৩ দিকে গ্রিলের তৈরি গেট নির্মাণ করতে হবে। চালকের পাশে কোনো যাত্রী তোলা যাবে না। প্রয়োজনের গাড়িতে জিপিএস ট্র্যাকার লাগাতে হবে। একই সঙ্গে এ ধরনের গাড়িগুলোকে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনতে হবে বলে জানান। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়