সুজন কৈরী: [২] কুমিল্লার তিতাসের তারা মিয়ার ছেলে আবু তাহের (২৬), কয়েক বছর আগেও ছিলেন ৬ হাজার টাকা বেতনে মোবাইলের দোকানের কর্মী। এখন তার নেতৃত্বেই চোরাই পথে দেশে আসছে হাজার হাজার অবৈধ মোবাইল ফোন। চক্রটি গত দেড় মাসে ৫টি চালানে আড়াই হাজারের বেশি অবৈধ মোবাইল ফোন দেশে এনে বাজারে ছেড়েছে।

[৩] শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ মোবাইল ফোনসহ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

[৪] গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- চক্রের মূলহোতা আবু তাহের (২৬), মো. মেহেদী হাসান (২২), মো. রুবেল হোসেন (২৯) ও মো. নুর নবী (৩২)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৮ শতাধিক ফিচার ও স্মার্ট ফোন এবং দুটি গাড়ি জব্দ করা হয়েছে।

[৫] রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফিরোজ কবীর বলেন, গোয়েন্দা তথ্য ছিলো একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে চোরাই মোবাইল কুমিল্লার ভারতীয় সীমান্ত থেকে এনে বিভিন্ন মার্কেটে বিক্রি করছে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৮০৮টি চোরাই মোবাইল ফোন ও দুটি প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়।

[৬] এই চক্রটি ভারতীয় কারখানায় তৈরি বিভিন্ন ব্রান্ডের মোবাইল ফোন চোরাকারবারিদের মাধ্যমে কুমিল্লা-ঢাকা রুট ব্যবহার করে রাজধানীতে আনতো। রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার কারণে কমদামে বিক্রি করা এ সব মোবাইল ফোনের বাজারে অনেক চাহিদা রয়েছে। এছাড়াও এ সব ফোনের আইএমআই নম্বর বিটিআরসির নথিভুক্ত না থাকায় অপরাধীরা বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমের জন্য চোরাইপথে আসা এধরনের মোবাইল ব্যবহার করে থাকে।

[৭] গ্রেপ্তার আবু তাহের চক্রটির মূলহোতা।  সে গত ৩ বছর আগে কুমিল্লা জেলার গৌরীপুর এলাকায় একটি মোবাইল শো-রুমে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করত। তখন থেকেই কুমিল্লার বিভিন্ন সীমান্ত পথে অবৈধভাবে সংঘবদ্ধ মোবাইল চোরাকারবারি চক্রের সাথে তার সখ্য গড়ে উঠে। একপর্যায়ে মোবাইলের শো-রুমে চাকরির পাশাপাশি  সে নিজেও ভারতীয় ব্রান্ডের চোরাই মোবাইলের চালান আনিয়ে কুমিল্লাসহ রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে সরবরাহ করতে শুরু করে। 

[৮] অল্প সময়ে অধিক অর্থ লাভের আশায় নিজেই একটি সংঘবদ্ধ চক্র গড়ে তোলে। তার নেতৃত্বে চক্রটি কুমিল্লা সীমান্ত এলাকা দিয়ে গত দেড়মাসে পাঁচটি বড় চালান ঢাকায় সরবরাহ করেছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।

[৯] গ্রেপ্তার মেহেদী চক্রটির মূলহোতা আবু তাহেরের অন্যতম সহযোগী।  সে কুমিল্লা সদর দক্ষিণের বাসিন্দা। তার এক পরিচিত ভাইয়ের মাধ্যমে চোরাইপথে মোবাইল আমদানির চক্রে তাহেরের সঙ্গে জড়িয়েছে বলে জানা যায়। তার দাবি সে কুমিল্লা সদরের জনৈক সাজ্জাদ ওরফে শাকিলের বেতনভুক্ত কর্মচারী। তবে তার এই দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান

এসকে/কে/এনএইচ