এমরান পাটোয়ারী, ফেনী: [২] টাকা চুরির অভিযোগে মাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নূর মোহাম্মদ (১৮) নামে এক ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার বিকালে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠান নগর ইউনিয়নের বাথানিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
[৩] নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য (১৪ এপ্রিল) রোববার ফেনী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তা মঈন উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
[৪] নিহত নুর মোহাম্মদ নোয়াখালীর সুধারাম থানার আন্দার চর গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে। সে ওই বাড়িতে দীর্ঘদিন যাবত কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করতেন।
[৫] ঘটনায় নিহতের মা খাতিজা আক্তার বাদি হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৫/৬ জনের নামে থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এজাহারভুক্ত এক আসামীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
[৬] নিহত নুর মোহাম্মদের মা বিবি খতিজা জানান, চার বছর আগে অভাবের কারণে নুর মোহাম্মদকে ব্যাংক কর্মকর্তা মঈন উদ্দিনের বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে দিয়ে যান তিনি। ছেলেটির মাসিক বেতন ধরা হয়েছিল দুই হাজার টাকা। চার বছরে তাকে কখনো ছুটি দিত না ওই পরিবার। সেই ক্ষোভে ২৭ রমজান ওই বাসা থেকে ৮০ হাজার টাকা ভর্তি একটি খাম নিয়ে নিজ বাড়ি চলে যান নুর মোহাম্মদ।
[৭] এরপর থেকে মোবাইল ফোনে হুমকি দিতে থাকেন ব্যাংক কর্মকর্তার পরিবারের সদস্যরা। তাদের অব্যাহত হুমকিতে ঈদের পরদিন ছেলেকে নিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তার বাড়িতে হাজির হন তিনি। একই সাথে চুরি করে নেওয়া টাকাগুলোও ফেরত দেন।
[৮] বিবি খতিজার অভিযোগ, বাড়ি ঢোকা মাত্রই ব্যাংক কর্মকর্তার চার ভাই মিলে তাঁর ছেলেকে মারধর শুরু করেন। বাঁধা দিলে তাঁকেও মারধর করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। এরপর সারারাত দফায় দফায় এবং পরদিনও তাঁর ছেলেকে মারধর করা হয়। তাদের মারধরের একপর্যায়ে শনিবার বিকেলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে নুর মোহাম্মদ।
[৯] বিবি খতিজা বলেন, আমার ছেলের যদি কোনো অন্যায় থাকতো, তাহলে তারা তাকে পুলিশে দিতো। আমি তাদের কাছে আমার ছেলের জীবন ভিক্ষা চেয়েছি। তবু তাদের মন গলেনি। এভাবে নির্যাতন করে আমার চোখের সামনেই ছেলেটিকে মেরে ফেলল। আমি এ হত্যার বিচার চাই।
[১০] ছাগলনাইয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান ইমাম বলেন, মরদেহের পিঠ, কোমর, হাত-পাসহ পুরো শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের মা বাদি হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৫/৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এজহারভুক্ত আসামী ব্যাংকার মঈন উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মারধরের কথা স্বীকার করেছেন। গ্রেপ্তার মঈন উদ্দিন বাথানিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে। সম্পাদনা: এ আর শাকিল
প্রতিনিধি/এআরএস
আপনার মতামত লিখুন :