সুজন কৈরী: [২] গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- মো. জহুরুল ইসলাম (৪১), সাবিদ চৌধুরী (৩৩), মো. হাসিব চৌধুরী (২৭), মোহাম্মদ আলী (৪১), মো. রাফিদ ইসলাম নুহিন (১৯) ও মো. জাকির নাসের(২২)। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি যশোর জেলাসহ রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিএমপির ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ।
[৩] চক্রটির কাছ থেকে বিভিন্ন মডেলের মোবাইল ফোন ৮ টি, সিম কার্ড ১৩ টি, ল্যাপটপ ৩ টি, সিপিইউ ১টি, ডায়া ফিক্স নামক ওষুধ ১৪০ বোতল বুস্টার বক্স ৪১০টি বোতল, লেবেল ছাড়া সবুজ রংয়ের ক্যাপসুলের বোতল-৩৭০ টি, যৌন উত্তেজক ১০০গ্রাম পাউডার ও বিভিন্ন ওষুধ ও সাপ্লিমেন্ট তৈরির ফরমুলা লেখা একটি ডায়েরি।
[৪] ডিবি জানায়, চক্রটি স্বনামধন্য চিকিৎসকদের নাম ব্যবহার করে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে ভেজাল ওষুধ বিক্রি করতো। তাদের কয়েক কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। চক্রটি মাসে প্রায় ৩৮লাখ টাকার ভেজাল ওষুধ বিক্রি করতো।
[৫] ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগের এডিসি আশরাফউল্লাহ বলেন, নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ, অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্তর চেম্বার সহকারী মামলার বাদি মোঃ বদরুল ইসলাম গত ৭ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে দেখতে পান, কুমিল্লা ৭ আসনের সংসদ সদস্য, নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ, অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্তর নাম ও ছবি ব্যবহার করে বিভিন্ন ফেসবুক আইডি ও পেইজ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ সম্বলিত পোস্ট ও কমেন্ট করে ডায়া ফিক্স নামক অননুমোদিত ডায়াবেটিসের কথিত ওষুধ- নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ প্রাণ গোপাল দত্ত’র উদ্ভাবিত বা নিজস্ব প্রোডাক্ট বলে বিক্রি করছে। বিক্রির জন্য যোগাযোগের তিনটি মোবাইল নাম্বারও দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ডাক্তার প্রাণ গোপাল দত্ত কিছুই জানেন না। প্রতারক চক্র তার নাম, ছবি ও বানোয়াট বিবৃতি ব্যবহার করে এহেন অপকর্ম করেছে।
[৬] পরে এ ঘটনায় প্রাণ গোপাল দত্তর চেম্বার সহকারী বিদরুল ইসলাম বাদি হয়ে রাজধানীর কলাবাগান থানায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি মামলা করেন। মামলাটি তদন্তকালে চক্রটিকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়।
[৭] আশরাফউল্লাহ জানান, চক্রের সদস্যরা সরকারি অনুমোদন ছাড়া সাধারণ ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে নিজেদের ইচ্ছামতো যৌন উত্তেজনা বর্ধক বিভিন্ন কেমিক্যাল মিশিয়ে শক্তিবর্ধক ওষুধ তৈরিসহ নিজেদের ইচ্ছামত বিভিন্ন ফর্মুলা তৈরি করে ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগের ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত করছিল। তারা বিভিন্ন নামে একাধিক ফেসবুক আইডি খুলে বিজ্ঞাপন বুষ্টিংয়ের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার চালিয়ে সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আর্কষণ করে।
[৮] প্রতারকচক্রটি স্বনামধন্য ডাক্তার প্রাণ গোপাল দত্তের নামে মিথ্যা সাক্ষাৎকার সম্বলিত বিজ্ঞাপন প্রচার করে সাধারণ রোগীদের মনোযোগ আকর্ষণ করে এবং বিশ্বাস অর্জনের জন্য তারা প্রাণ গোপাল দত্তের উদ্ভাবিত ওষুধ বলে প্রচার করতো। এমনকি তারা প্রাণ গোপাল দত্তের নামে ফেইক ফেইসবুক একাউন্ট খুলে বিজ্ঞাপনে কমেন্টকারীদের প্রশ্নের উত্তর দিতো।
[৯] দীর্ঘদিন ধরে তারা একই ধরনের প্রতারণামূলকভাবে অননুমোদিত ওষুধ বিক্রি করছিল। "নিখাদ" নামে তারা একটি ব্রান্ডের নামকরণ করেছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে তাদের উৎপাদিত সকল পণ্য কুরিয়ারের মাধ্যমে বিক্রি করতো।সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী
এসকে/এসসি/এসবি২
আপনার মতামত লিখুন :