শিরোনাম
◈ কবে দেশে ফিরবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান? (ভিডিও) ◈ যুবককে কুপিয়ে হত্যা, কেটে নিয়ে গেল হাত (ভিডিও) ◈ বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ: সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত ◈ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর হলেন তাজুল ইসলাম ◈ ‘দেহ ব্যবসা’র ভিডিও প্রতিবেদন ইস্যুতে সোহানা সাবার হুঁশিয়ারি ◈ বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা ইতালির মোনফ্যালকনে ◈ নিউইয়র্কে ইউনূস-মোদি সাক্ষাতে ঢাকার অনুরোধ, এখনো চুপ দিল্লি ◈ হদিস মিলছে না পলকের দুটি আগ্নেয়াস্ত্রের ◈ অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত যৌক্তিক ও সময়োপযোগী: ফখরুল ◈ ট্রাক থামিয়ে চাঁদাবাজি, যুবদল নেতাকে পুলিশে দিলো সেনাবাহিনী

প্রকাশিত : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০১:০৬ রাত
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০২:৪৪ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মেয়াদ শেষ হলেও টাকা পাচ্ছেন না গ্রাহকরা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে মেয়াদ শেষ হলেও শতশত গ্রাহকের টাকা না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

বাংলাদেশ বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) একাধিবার অভিযোগ দেওয়ার পরও সাড়া পাচ্ছেন না অভিযোগ কারীরা। 

এ ঘটনায় লক্ষ্মীপুরের গ্রাহকরা টাকা পাওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ কামনা করছে।

এ দিকে টাকা না পাওয়ার কারণে কোম্পানীর মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা প্রতিনিয়ত গ্রাহকদের হুমকি ধমকি শুনতে হচ্ছে গ্রাহকদের। সাবেক এক নারী কর্মী আকলিমা আক্তার শিল্পি এমন অভিযোগ করেন। 

তিনি আরও জানান, গ্রাহকদের হুমকির ভয়ে তিনি ঢাকা থেকে হামছাদী ইউনিয়নের বাড়িতে এসে থাকতে পারছেন না। সম্প্রতি তার ঘর মেরামতের সামগ্রীও নিয়ে যায় গ্রাহকরা।

বীমা কর্মী আকলিমা আক্তার শিল্পির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শিল্পি সদর উপজেলার দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নের জাহানাবাদ গ্রামের খোরশেদ আলমের স্ত্রী। তিনি বীমা কোম্পানী পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের কর্মী হিসেবে এক সময় কাজ করেন। তিনি আশপাশে বহু মানুষকে পলিসি করিয়ে দিয়েছে। ১০০ থেকে শুরু করে ৫০০ টাকার পলিসিও ছিল। বীমার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও কোম্পানী টাকা দিচ্ছে না গ্রাহকদের। কোম্পানী লোকেরা গা ঢাকা দিয়েছে লক্ষ্মীপুরের অফিস কার্যক্রম বন্ধ সাইন বোর্ড নেই। অনেকে কর্মকর্তা কর্মচারী মোবাইল বন্ধ। এতে করে ওই এলাকার গ্রাহকেরা তার বাড়িতে এসে ভিড় করেন তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে টাকা না পেলে বিভিন্নভাবে হয়রানি করার হুমকি দিয়ে আসছে।

সদর উপজেলার হামছাদী এলাকার বীমা গ্রাহক ছালেহা বেগম, কহিনুর বেগম, নাজমা বেগম, মনি বেগম ও দেলোয়ার হোসেন জানায়, আমাদের বীমার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২-৩ বছর হবে এখন কোম্পানী টাকা দিচ্ছেন না। কোম্পানীর লোককেও পাওয়া যাচ্ছে না। দুই-একজন ঢাকা বাংলামটর প্রধান কার্যালয় গিয়েও ব্যর্থ হয়ে ফিরে এসেছেন। লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী কার্যালয়ে গিয়ে দরজায় তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখেন। তাদের মোবাইল নাম্বারটিও বন্ধ পাওয়া যায়। একইভাবে তারাসহ একই এলাকার অন্তত ৩০-৫০ জন গ্রাহক বিপাকে রয়েছেন। 

সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের গর্ন্ধব্যপুর গ্রামের তোফায়েল আহমদ এর পুত্র মোঃ শাহজাহান বলেন, তিনি বছরে ১০ হাজার টাকা করে টাকা জমা দেয়। ২০২২ সালে তার বীমার মেয়াদ শেষ হয়।

তিনি সকল কাগজপত্র লক্ষ্মীপুর কার্যালয়ে জমা দিতে গেলে ওই অফিসের মোস্তফা কামাল তার কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা নিয়ে দ্রুত চেক নিয়া আসবেন বলেন জানান। এখন কার্যালয় ও ওই কর্মকর্তার মোবাইল বন্ধ। প্রায় ২ বছর হতে চলেছে এখনও তিনি টাকা পাননি। ইতিমধ্যে কোম্পানী উকিল নোটিস দিয়েছে তবুও কোম্পানী টাকা দিচ্ছেনা।  দ্রুত টাকা এনে দিবেন বিনিময়ে ২ হাজার নেওয়ার একই ব্যাক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের বিনোদধর্মপুর গ্রামের মোজাম্মেল হোসেন। তিনি বলেন লক্ষ্মীপুর অফিসের মোস্তফা কামাল আমার কাছ থেকে দ্রুত বীমার চেক এনে দিবেন বলে ২ হাজার নিয়েছেন। এখন তার মোবাইল ও অফিস বন্ধ আমার টাকা পাওয়ার কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

লক্ষ্মীপুর জজকোর্টের আইনজীবী অ্যাড. সোহেল মাহমুদ ও মহসিন কবির মুরাদ জানান, পদ্মা লাইফ তাদের অনেক গ্রাহকেরা মেয়াদ শেষেও টাকা দিচ্ছে না। আমরা অনেক গ্রাহকের পক্ষ থেকে কোম্পানীকে উকিল নোটিস করার পরও তাদের দিচ্ছে না। এখন আমরা গ্রাহকের বলেছি আদালতে মামলা করার জন্য। 

জেলা শহরের একতা সুপার মার্কেটের চতুর্থ তলায় বীমা কোম্পানীটির কার্যালয়ে গেলে দরজায় তালা ঝুলতে দেখা যায়। এসময় বাইরে কোম্পানীর নামে কোন সাইবোর্ড দেখা যায়নি। 

তবে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক অন্য একটি বীমা কোম্পানীর ম্যানেজার বলেন, পদ্মার কার্যালয় বাগবাড়ি এলাকায় ছিল। সেখান থেকে একতা সুপার মার্কেটে এসেছে। কিন্তু তাদের অফিস খুলতে কখনো দেখা যায়নি। 

দায়িত্বরত কর্মকর্তার মোবাইলফোনে একাধিকবার কল ও এসএমস দিয়েও বক্তব্য জানা সাড়া পাওয়া যায়নি। একই কার্যালয়ের কর্মকর্তা মোস্তফা কামালের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স লি: (ডিএমডি) হেফজুর রহমান গ্রাহকের টাকা না দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, কোম্পানী ফান্ডে টাকা না থাকার কারণে লক্ষ্মীপুরসহ বিভিন্ন জেলার গ্রাহকের টাকা দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। ফান্ড পেলে গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করা হবে। 

জেলা কার্যালয় বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন গ্রাহকের টাকা পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এই কারণে অনেকে কার্যালয়ে এসে ভিড় ও কর্মকর্তাদের সাথে খারাপ আচরণ করছে এই কারণে জেলা কার্যালয় কেউ বসতে চায় না।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়