রুবেল মজুমদার: [২] কুমিল্লা দেবীদ্বারে স্ত্রী’র গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া গৃহবধূ আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮ দিন পর মারা গেছেন।
[৩] শনিবার (৩০ এপ্রিল) ভোর রাতে রাজধানী’র শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন নিহতের চাচা- মোঃ আলমগীর হোসেন আলম।
[৪] মৃত সাদিয়া বেগম (৩০) উপজেলার গুনাইঘর ইউনিয়নের গুনাইঘর গ্রামের নুরুল ইসলাম সরকার’র ছেলে আসাদ সরকারের স্ত্রী ও একই উপজেলার পদ্মকোট গ্রামের ফরিদুল আলম অপু সরকারের মেয়ে।
[৫] শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ৮টায় সাদিয়ার স্বামী আসাদ সরকার হটাৎ ঝগড়ার এক পর্যায়ে সাদিয়ার শরীরে কেরোসিন ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে সাদিয়ার আত্ম চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে আগুন নিভিয়ে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে সাদিয়ার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। অবশেষে ৮ দিন আইসিইউতে মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করে শনিবার রাতে না ফেরার দেশে চলে গেলেন সাদিয়া।
[৬] লাইফ সাপোর্টে থাকা কালে অগ্নিদগ্ধ সাদিয়া ভিডিও বার্তায় জানায়, আমার স্বামী আমাকে এর আগেও কয়েকবার বলেছে যে পেট্রল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করবে। গত পাঁচ মাস ধরে যৌতুকের জন্য আমাকে প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছে। টাকা না দেওয়ায় আমার শরীরে কেরোসিন দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় আমার স্বামী।
[৭] পারিবারিক সৃত্রে জানা যায়, গত তিন মাস পূর্বে সাদিয়ারগর্ভে এক কন্না সন্তান জন্মনিলে ডেলিভারি করার পর নবজাতক শিশুটি মারা যায়।
[৮] সাদিয়ার মা শামসুন নাহার বলেন- গত কয়েক মাস ধরে সাদিয়াকে যৌতুকের জন্য চাপ সৃষ্টি করতো তার স্বামী। বিভিন্ন সময় শারিরিক নির্যাতনও সে করতো। মেয়ে আমার কাছে প্রায় সময় কান্না করে জানাতো। গত শনিবার হটাৎ করে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় ঘাতক আসাদ। পরে স্বামী আসাদ ঘটনাটি আড়াল করতে লোকসমাজের কাছে বলে আসছিলো রান্না করার সময় সাদিয়ার গায়ের ওড়নায় আগুন লেগে যাওয়ার কথা। ওই দিকে স্বামী আসাদ সরকারকে অভিযোগ করে সাদিয়ার বাবা ফরিদুল আলম (অপু) থানায় মামলা করলে বুধবার রাতে আসাদ সরকারকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করেন পুলিশ।
আপনার মতামত লিখুন :