আকাশ আহম্মেদ : [২] উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের মালিকুঁড়ি বিলের পানি নিস্কাশনের একমাত্র মাধ্যম লক্ষীপুর-দোদারা খালটি পুনঃখনন করা হয়েছে। এতে বিল পাড়ের ২০ হাজার কৃষক পরিবারের মনে স্বস্তি ও মুখে হাসি ফুটেছে। এখন ভাগ্য বদলে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় নতুন করে দৃঢ় প্রত্যয়ে স্বপ্ন বুনছেন তারা।
[৩] জানা যায়, উপজেলার কদমবাড়ি এলাকার মালিকুঁড়ি বিলের ৯টি মৌজার প্রায় ৪ হাজার একর জমির পানি নিস্কাশনের একমাত্র মাধ্যম লক্ষীপুর-দোদারা খাল। প্রায় তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যর খালটি বিগত ৩০ বছরেও খনন না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিপাতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে তলিয়ে যেত কৃষকের সোনালী ফসল। এতে কৃষকের কাছে অভিশপ্ত হয়ে ওঠে দোদারা খাল। তাই মালিকুঁড়ি বিলের পানি নিস্কাশনের জন্য খালটি পুনঃখনন ছিল বিলপাড়ের মানুষের প্রাণের দাবি। কৃষকদের কথা বিবেচনা ও বৃহত্তর এই বিলের ফসল রক্ষার্থে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন বৃহত্তর ফরিদপুর সেচ এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পের (৪র্ত পর্যায়) আওতায় খালটি পুনঃখননের উদ্যোগ নেয়। প্রায় ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ইতিমধ্যে খালটির শতভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এতে বিলপাড়ের প্রায় ২০ হাজার কৃষক পরিবারের স্বপ্ন পূরনের সাথে ভাগ্য বদলে যেতে শুরু করেছে। আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েছে কৃষকেরা।
[৪] কৃষক আতাহার বলেন, আমাদের এত দিন পানির জন্য ফসল ভালো হতনা। এখন আমরা সব সময় পানি পাবো আমাদের ফসল ভালো হবে। তাই সরকারের কাছে আমরা ঋনি।
[৫] মিন্টু শেখ বলেন, বৃষ্টি বাদলের দিনে জলাবদ্ধতার জন্য ফসল নষ্ট হতো। এখন আর সেই সমস্যা হবে না।
আনোয়ার হোসেন জানান, আমার এই এলাকায় অনেক জমি আছে। ভেবেছিলাম বিক্রয় করে দিবো। কিন্তু এখন আর বিক্রয় করবো না। এখন আল্লাহর রহমতে ভালো ফসল হবে।
রাজু শেখ বলেন, আমাদের স্বপ্ন ছিলো এই খাল খনন হবে, তা আজ সত্যি হলো। তাই আমরা অনেক খুশি।
[৬] রাজৈর উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী, বিএডিসি (ক্ষুদ্র সেচ) মো. রুহুল আমীন বলেন, খালটি পুনঃখনন করায় কৃষকরা রবিশষ্যর পাশাপাশি শুস্ক মৌসুমে সেচের মাধ্যমে চাষাবাদ করতে পারবে। এছাড়াও আগে যেখানে এই বিলে একটি ফসল তোলা সম্ভব হতো না, সেখানে এখন তিনটি ফসল উদপাদন করতে পারবেন।
[৭] মাদারীপুর জোন সহকারী প্রকৌশলী, বিএডিসি (ক্ষুদ্র সেচ) মো. নাসিম আহমেদ বলেন, খালটি পুনঃখননে বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন ও বন্যায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতা দূরীকরণের মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজার কৃষকের ফসল রক্ষা পাবে। তাছাড়া খালে ধারণকৃত পানি শুকনো মৌসুমে সেচ কাজে ব্যবহার করা সম্ভব ও প্রায় ৪ হাজার একর জমি তিন ফসলী জমিতে রুপান্তর হবে।
[৮] বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনায় নদী-নালা খনন হচ্ছে। এতে কৃষি খাত আরো এগিয়ে যাবে, কৃষকদের ফলস উৎপাদনে গতি আরো বাড়বে। তাই সরকার খাল খননের প্রতি ব্যাপক জোড় দিচ্ছেন। আমি মন্ত্রী থাকা কালিন ব্যাপক কাজ করেছি। বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকারের সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে কৃষি খাত এগিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে। সম্পাদনা : জেরিন
আপনার মতামত লিখুন :