মো. নুরুল করিম : [২] গত রোববার সকাল থেকে বান্দরবানের লামা উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি এলাকার মিনতুই ম্রো পাড়ার লোকজনের মধ্যে হঠাৎ করে দেখা দেয় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব। এরপর পাশের পমপং পাড়ার লোকজনের মাঝেও এ ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে সোমবার রাত ২টার দিকে অবস্থার অবনতি হলে মিনতুই পাড়ার বাসিন্দা মৃত পালেং ম্রো’র ছেলে মাংচি মুরুং (৫১) মারা যায় এবং শতাধিক পাড়াবাসী আক্রান্ত হয়।
[৩] এ সময় দুই পাড়ার আক্রান্ত ৩৩জনকে কলাগাছের ভেলায় করে অনেক কষ্টে লামা খাল হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে স্থানীয়রা। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ার কারণে বাকীদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এ প্রেক্ষিতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঈনুদ্দীন মোর্শেদ আক্রান্তদের চিকিৎসা নিশ্চিতে ওই পাড়া দুটির কাছাকাছি বড় কলার ঝিড়িরমুখে একটি দোকানঘর ও তামাকের গুদামে ১০শয্যা বিশিষ্ট অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপনের উদ্যোগ নেন।
[৪] এ ধারাবাহিকতায় গত বুধবার সরজমিন গিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঈনুদ্দীন মোর্শেদের নেতৃত্বে চিকিৎসা সেবা সহ স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদান করা হয়। এতে ডায়রিয়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং অনেকেই সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরে। বর্তমানেও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ফরহাদ উদ্দিনের নেতৃত্বে একজন সিনিয়র ষ্টাফ নার্স, মেডিকলে এসিসটেন্ট, উপসহকারি মেডিকেল অফিসার, সিএইচসিপি পর্যাপ্ত পরিমানে সেলাইন ও অন্যান্য ঔষধপাতিসহ নিরবিচ্চিন্ন চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এর আগে আলীকদম সেনাবাহিনীর একটি মেডিকেল টিম গত সোমবার দিনব্যাপী মিনতুই ও পমপং ম্রো পাড়া সহ আশপাশের মোট ১২৫ জন রোগিকে চিকিৎসা এবং বিনামুল্যে ঔষধ প্রদান করেন।
[৫] এ বিষয়ে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঈনুদ্দীন মোর্শেদ বলেন, দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বসবাসরত মানুষগুলো ঝিরি ও ঝর্ণার পানি পান করে থাকেন। মূলত এসব ঝিরি ও ঝর্ণার দূষিত পানি পান করার কারণেই পাড়াগুলোতে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্ত পাড়া দুইটিতে একজন মেডিলেক অফিসারের নেতৃত্বে ৭ জন স্বাস্থ্য কর্মী আক্রান্তদের সেবা দিচ্ছেন। বর্তমানে ডায়রিয়া পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। সম্পাদনা : জেরিন
আপনার মতামত লিখুন :