শিরোনাম
◈ ‘আপনি আমার রাজা নন’ চিৎকার করে ব্রিটিশ রাজাকে বললেন সিনেটর ◈ আওয়ামী লীগ কি সত্যিই প্রবাসী সরকার গঠন করছে আগরতলায়? ◈ মধ্যরাতে গ্রেফতার ব্যারিস্টার সুমন (ভিডিও) ◈ অক্টোবরেও ঊর্ধ্বমুখী  রেমিট্যান্সের গতি ◈ বাতিল হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ প্রকল্প  ◈ বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিচ্ছে ◈ ‘আমি কোন দলকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে নিই’: (ভিডিও) ◈ ফিল্মি স্টাইলে প্রকাশ্যে গুলি করে ছাত্রলীগ কর্মীকে হত্যা (ভিডিও) ◈ অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা প্রশ্নে যা বলেছিলেন সুপ্রিম কোর্ট ◈ রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে মশাল মিছিল (ভিডিও)

প্রকাশিত : ২৮ মে, ২০২৩, ০৪:৩৯ দুপুর
আপডেট : ২৮ মে, ২০২৩, ০৪:৩৯ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

স্কুলমাঠে পোড়ানো হচ্ছে বিটুমিন, বিষাক্ত ধোঁয়ায় সাত শিক্ষার্থী অসুস্থ

জহিরুল ইসলাম শিবলু, লক্ষ্মীপুর: সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের মুনছুর আহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সড়ক সংস্কারের কংক্রিটসহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী রাখা হয়েছে। অভিযোগ আছে, ঠিকাদার জসিম উদ্দিন ফারুক ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে মাঠে বিটুমিন পোড়ানো ও কংক্রিট মেশানোর কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছেন। বিটুমিনের বিষাক্ত ধোঁয়ায় সাত শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে।

এর প্রতিবাদে শনিবার দুপুরে বিদ্যালয় মাঠে উপস্থিত হয়ে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনকারীরা জানায়, বিদ্যালয় চলাকালে মাঠে বিটুমিন পোড়ানো হয়। এতে বিষাক্ত ধোঁয়ায় সাত শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পরে তারা বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছেন।

এ দিকে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন, পরিচালনা কমিটির সদস্য ইমাম উদ্দিন, স্থানীয় ইউপি সদস্য সফি উল্যাহ ঠিকাদারকে মালামালগুলো রাখার অনুমতি দিয়েছেন বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। ঠিকাদারকে নির্বিঘ্নে কাজ করতে সরকারি ছুটি না থাকলেও প্রধান শিক্ষক মৌখিকভাবে রোববার বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছেন। এ নিয়ে কোনো কথা বললে টিসি দেওয়ার হুমকি দিয়েছে প্রধান শিক্ষক।

অসুস্থ শিক্ষার্থীরা হলো- মিল্লাত হোসেন, আজিম হোসেন, সাকিব হোসেন, মো. রুবেল, মো. আদনান ও আবদুস শহীদ। মানববন্ধনে তারাসহ শিক্ষার্থী আবিদা সুলতানা ও মো. ফরহাদ বক্তব্য দিয়েছেন।

তারা জানায়, রমজানের আগে বিদ্যালয় মাঠে ঠিকাদার জসিম উদ্দিন ফারুক কংক্রিট এনে রাখেন। এরপর থেকে তারা মাঠে খেলাধুলা করতে পারছে না। হঠাৎ তারা বিটুমিনের ড্রাম এনে মাঠে রাখেন। এগুলো সরিয়ে নেওয়ার জন্য পরিচালনা কমিটির সদস্য ইমাম শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের জন্য বলেন। দু-একদিন পরে তিনি আবার শিক্ষার্থীদের বলে, এ নিয়ে কোনো কথা না বলার জন্য। কথা বললে মানবাধিকার লঙ্ঘন হবে। সরকারি কাজ, এসব ব্যাপারে কোনো কথা হবে না। এরপরও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করতে গেলে প্রধান শিক্ষক তাদের টিসি দেওয়ার হুমকি দেন।

শিক্ষার্থীরা আরো জানায়, কেমিক্যাল (বিটুমিন) পোড়ানোর ধোঁয়ায় তারা অনেকে অসুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে শিক্ষকদের জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিভিন্ন মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা জানতে পেরেছে, মাঠে মালামাল রাখতে ৪ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির দুই সদস্য জানান, ইউপি সদস্য সফি উল্যা বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎসাহী সদস্য। তিনিসহ কামাল ও ইমাম আলাদাভাবে ঠিকাদারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ঠিকাদার বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনটিও ব্যবহার করছেন। বিটুমিন গরম করার জন্য কাপড় পোড়ানো হচ্ছে। এতে পুরো এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন বলেন, কে বা কারা মাঠে নির্মাণ সামগ্রী রেখেছে তা আমি জানি না। এগুলো নিয়ে যেতে বলেছি। ঠিকাদারকে মোবাইল ফোনে বলে দিয়েছি, স্কুলমাঠে চলবে না এসব।

টাকা লেনদেন ও স্কুল বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কল কেটে দেন। এরপর একাধিকবার কল করলেও রিসিভ করেননি।

পরিচালনা কমিটির সদস্য ইমাম উদ্দিন প্রথমে কিছুই জানেন না বলে জানান। পরে তিনি বলেন, আমরা বৈঠক করে বলেছি মাঠে রাস্তা সংস্কারের কোনো মালামাল রাখা যাবে না। এরপরও ঠিকাদার আমাদের কথা শুনছেন না।

বক্তব্য জানতে ইউপি সদস্য সফি উল্যাহর মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি অসুস্থ বলে জানান।

ঠিকাদার জসিম উদ্দিন ফারুক বলেন, ফারাহ ট্রেডার্সের লাইসেন্সে প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয়ে নলডগী-চৌরাস্তা সড়কের সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার কার্পেটিং কাজ করছি। প্রায় তিন মাস আগে বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. শাহজাহানের সঙ্গে যোগাযোগ করে মাঠে কংক্রিট রাখি। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই স্থান দেখিয়ে দিয়েছে। পরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তারা অনুমতি দিয়েছিল। বিনিময়ে তারা কিছু দাবি করেছে। আমরা তাদের দাবি সমর্থন করেছি।

কুশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, আমিও ঠিকাদার। কিন্তু বিদ্যালয় মাঠে বিটুমিন পোড়ানো ও কংক্রিট-বিটুমিন মেশানো উচিত নয়। এর কালো ধোঁয়া ক্ষতিকর। শুনেছি রবিবার বিদ্যালয় বন্ধ দেওয়া হয়েছে। সরকারি কোনো ছুটি নেই, কিন্তু এ কর্মযজ্ঞের জন্য বিদ্যালয় বন্ধ দেওয়ার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে খতিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ করছি।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তালেব বলেন, ইউএনওর নির্দেশে বিদ্যালয় মাঠ দ্রুত খালি করতে প্রধান শিক্ষককে বলা হয়েছে। বিদ্যালয় বন্ধ দেওয়ার বিষয়টি জানা নেই। টাকার বিনিময়ের বিষয়ে কথা বলবো।

প্রতিনিধি/একে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়