গোলাম সারোয়ার, আশুগঞ্জ: ভাষা আন্দোলনের দীর্ঘ ৭১ বছর পরেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া আশুগঞ্জে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনো গড়ে উঠেনি শহীদ মিনার।
শহীদ মিনার না থাকার ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মহান ভাষা আন্দোলন ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সম্পর্কে ধারণাও তাই স্পষ্ট নয়।
অনেক কোমলমতি শিক্ষার্থী আছে যারা এ বিষয়ে কিছুই জানেনা। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনোটিতে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার বানিয়ে দিবসটি পালন করা হয়। আবার কোনো প্রতিষ্ঠানে দিবসটি পালনই করা হয় না।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ৪৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৫টি কলেজসহ পাঁচটি আলিয়া মাদ্রাসা রয়েছে।এর মধ্যে শুধুমাত্র দুটি কলেজ,১৬টি মাধ্যমিক ও ১০ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে। এছাড়া বাকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো শহীন মিনার নেই।
সরেজমিন ঘুরে শহীদ মিনার নেই এ রকম কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে দেখা যায়,অমর একুশে,ভাষা আন্দোলন,আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সম্পর্কে তাদের অনেকেরই ধারণা নেই। এর মধ্যে কয়েকজনে যা জানে তাও ভাসা-ভাসা।
তারা এও জানান একুশে ফেব্রুয়ারির দিন স্কুল বন্ধ থাকে।স্যারেরা বাঁশ দিয়া শহীদ মিনার বানায়। আমরা সকালে উঠে ফুল দেই।একাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান বিদ্যালয়ে কোন শহীদ মিনার না থাকায় নিজেরা অস্থায়ীভাবে তৈরি করে নতুবা পার্শ্ববতী বিদ্যালয়ে গিয়ে ছাত্রছাত্রীরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে আরো জানা যায়, উপজেলায় ৪০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোনোটিতেই শহীদ মিনার না থাকার কথা স্বীকার করে জানান, বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণে সরকারি কোনো আদেশ ও বরাদ্দ নেই। তবে স্থানীয়ভাবে জনগনকে উদ্বুদ্ধ করে ও জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে প্রতিটি স্কুলে একটি করে শহীদ মিনার নির্মাণ করার চেষ্টা করছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অরবিন্দ বিশ্বাস জানান, অচিরেই যেন তারা শহীদ মিনার স্থাপন করে এবং ভাষা শহীদদের প্রতি তাদের যে শ্রদ্ধা সেটি বজায় থাকে সে বিষয়ে আমরা খুব দ্রুতই পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
ভাষার জন্য আত্মদানকারী রফিক, সালাম, বরকত, জব্বারের অবদান সমুন্নত রাখতে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দ্রুত শহীদ মিনার স্থাপনের দাবী জানিয়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা।
প্রতিনিধি/জেএ
আপনার মতামত লিখুন :