রাজু চৌধুরী : [২] চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া থানার মিয়াখান নগরে আরাফ নামে একটি দুই বছরের শিশুকে হত্যার দায়ে তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
[৩] বুধবার (১৮ মে) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জসিম উদ্দিন এই রায় ঘোষণা করেন। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার ভট্টাচার্য।
[৪] দণ্ডিতরা হলেন, মো. ফরিদ, মো. হাসান ও হাসানের মা নাজমা বেগম। রায়ের সময় আসমিরা উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
[৫] উল্লেখ্য যে, ২০২০ সালের ৬ জুন চট্গ্রাম নগরীর বাকলিয়ায় এ নির্মম হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। আরাফের পিতা আবদুল কাইয়ুম। তিনি একটি বেসরকারি ওষুধ কোম্পানির কর্মচারী। ঘটনার দিন বিকেলে তার স্ত্রী ছেলেকে ঘরের সামনে পার্কিংয়ে চানাচুর খাওয়ানোর পর পানি আনতে ঘরের ভেতর যাওয়ার পর ফিরে এসে দেখে সেখানে ছেলে নেই। পরে ভবনটির বাসিন্দা নাজমা বেগম, তার ছেলে বাড়ির দারোয়ান হাসান ও তাদের পাশের ভবনের বাসিন্দা ফরিদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নাজমা বেগম আদালতে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।
[৬] তিনি বলেছিলেন, বাড়িওয়ালাকে ফাঁসাতে সেই শিশুকে কৌশলে ভবনের ছাদে নিয়ে পানির টাংকিতে ফেলে হত্যা করে। নাজমা আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আরো জানায়, ১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী নুরুল আলম মিয়া ছিলেন আটতলা ভবনটির মালিক। তাকে ‘মামলায় ফাঁসাতে’ ওই ভবনে বাস করা কোনো শিশুকে হত্যা করতে নাজমাকে ২০ হাজার টাকার প্রলোভন দেখায় ফরিদ।
[৭] অর্থের লোভে পাশের ভবনের বাসিন্দা ফরিদের প্রলোভনে পড়ে বাড়িওয়ালাকে ফাঁসাতে এ ঘটনা ঘটায়। নাজমার ছেলে ভবনটির দারোয়ান মো. হাসান (২৩) গেইট খুলে দিয়ে ছাদে উঠতে সুযোগ করে দেয় ।
[৮] এইদিকে জানা গেছে, মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি ফরিদ বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীর অনুসারী ছিলেন। আগে কাউন্সিলর প্রার্থী ও ভবন মালিক নুরুল আলম মিয়ার প্রচারণায় হামলায় ঘটনায় ফরিদকে আসামি করা হয় আর সে কারনে ফরিদের ক্ষোভ ছিল।
[৯] এর আগে গত ৩০ মার্চ এ মামলায় রায় ঘোষণার দিন নির্ধারিত থাকলেও সেদিন বিচারকের ব্যস্ততার কারণে তা পিছিয়ে নতুন দিন ঠিক করা হয়েছিল ২৮ এপ্রিল। কিন্তু এক আসামি শিশু আরাফের বাবা-মায়ের ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন করলে রায় পিছিয়ে যায়। সেই আবেদন নাকচ করে বিচারক তিন আসামির সবাইকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দিয়েছেন বলে জানান এ আদালতের এপিপি প্রদীপ কুমার ভট্টাচার্য।
আপনার মতামত লিখুন :