মোঃ অমিত খাঁন, শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ): মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার রাঢ়িখাল ইউনিয়নের তিন দোকান ও দামলা এলাকায় কাঁচা-পাকা সরকারি রাস্তা ছিদ্র করে অবৈধভাবে ড্রেজার পাইপ লাইনের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ভরাট করা হচ্ছে জলাশয় ও ফসলী জমি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, ড্রেজার সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যদের কাছে তারা অসহায়। তাদের সঙ্গে পেরে উঠা অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে রাঢ়িখাল এলাকার মো. রোকন ও সাবেক ইউপি সদস্য ফারুক ঢালীর নেতৃত্বে ড্রেজার সিন্ডিকেট মহলটি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ভরাট বাণিজ্য করে আসছে। প্রভাবশালী চক্রটির বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। ড্রেজার বাণিজ্যের ফলে স্থানীয় রাস্তাঘাটের ক্ষতি করা সহ সরকারের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ফসলী জমি কেটে জলাশয় ও বিভিন্ন কৃষি জমি ভরাট বাণিজ্য করা হচ্ছে। এতে উপজেলা প্রশাসনও ড্রেজার চক্রের সঙ্গে পেরে উঠছে না। উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় গুরুত্বের সঙ্গে অবৈধ ড্রেজার বাণিজ্য বন্ধের তাগিদের বিষয়টি আলোচনার টেবিলে গুরুত্বের সঙ্গে বার বার উঠে আসলেও এসব সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শ্রীনগর-দোহার আঞ্চলিক সড়কের তিন দোকানের সামনে ব্যস্ততম সড়কটি ছিদ্র করে ড্রেজার পাইপের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সড়কের উত্তর দিক থেকে পাইপ লাইনটি দামলার দিকে অথাৎ পূর্বদিকে কয়েকটি গ্রামীন রাস্তা কেটে ও ছিদ্র করে ড্রেজারের দীর্ঘ পাইপ লাইন ভরাটের জন্য সংযুক্ত করা হয়েছে। লক্ষ্য করা যায়, একটি জলাশয় ভরাট করা হচ্ছে। এ সময় উপস্থিত এক ব্যক্তির কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, রোকন ও ফারুক মেম্বার এ ড্রেজার আনছেন। এখানকার বিপ্লবের জায়গা ভরাট করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে সাবেক ইউপি সদস্য ফারুক ঢালীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তার সাক্ষাত পাওয়া সম্ভব হয়নি। মো. রোকনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবার সঙ্গে আলোচনা করেই ভরাট করা হচ্ছে। সড়ক কাটার বিষয়ে তিনি দম্ভ করে বলেন, সবখানে ড্রেজারের পাইপ লাইনের সংযোগ এভাবেই দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রশিদুজ্জামান লস্কর বলেন, রাস্তাঘাটের ক্ষতি করে ড্রেজারের লাইন টানা হয়েছে। আমি দেখেছি, বলেন আমার কি করার আছে?
এ ব্যাপারে রাঢ়িখাল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক খান বারী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ড্রেজার বাণিজ্য চোখের সামনে হচ্ছে। ফসলী জমি, পুকুর, খাল, জলাধার ভরাট হচ্ছে সবইতো দেখছি। আমি একা কি করবো। প্রতিবার আইন-শৃঙ্খলা মিটিংয়ে এসব বিষয়ে কথা হয়। উপজেলা প্রশাসন ড্রেজার চক্রের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে আমরা স্থানীয়ভাবে সহযোগীতা করতে পারি।
রাঢ়িখাল ইউনিয়ন ভূমির তহশিলদার উত্তম কুমার সাহার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কয়েকদিন যাবত অসুস্থ থাকায় কর্মস্থলে নেই। তিনি সহকারী তহশিলদারের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে জানতে সহকারী তহশিলদার এচই.এম. মাহমুদুল হাসানের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
প্রতিনিধি/এইচএ
আপনার মতামত লিখুন :