ইফতেখার আলম বিশাল : রাজশাহীর চন্দ্রিমা থানাধীন কালচিকা গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে সংঘবদ্ধভাবে কলা বাগান কেটে ও লুট করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মোজাম্মেল দাবি করেছেন, প্রায় তিন শতাধিক কলা গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং গাছ থেকে লুট হয়েছে হাজারো কাঁদি কলা, যার বাজারমূল্য আনুমানিক লাখ টাকার বেশি। এছাড়াও ধ্বংস করা হয়েছে পাশে থাকা ধানখেত।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৩ এপ্রিল (বুধবার) দুপুর আনুমানিক একটার সময়। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, আনসার, সেলিম, আনোয়ার, মিজান ও মাসুদ নামীয় দেশীয় অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলযোগে এসে দিনের আলোতেই নির্বিচারে কলা গাছ কাটে ও কলা লুট করে নেয়। এ সময় তারা পাশের ধানক্ষেতেও ব্যাপক ক্ষতি করে।
কৃষক মোজাম্মেল জানান, উক্ত জমি নিয়ে দির্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলছিলো, যা গড়ায় আদালত পর্যন্ত। মোজাম্মেল বলেন, “বিগত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে মামলা চলার পর বিজ্ঞ আদালত আমাদের অনুকূলে ডিক্রি প্রদান করেন এবং বিরোধপক্ষকে জরিমানাও করা হয়। কিন্তু তারপর থেকেই শুরু হয় একের পর এক হুমকি-ধামকি।
তিনি অভিযোগ করেন, ২৬ শতক জমি জোরপূর্বক দখলের জন্য অভিযুক্তরা ইতিমধ্যেই বাগান ঘিরে অস্থায়ী বেড়া নির্মাণ করেছে। বাধা দিলে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। “আমাদের বিরুদ্ধে যারা এসব করছে, তারা একই বংশের হলেও সংখ্যায় অনেক, এবং রাজনৈতিক ও পেশিশক্তিতে প্রভাবশালী। আমরা থানায় গেলে আগেই তারা অবস্থান নেয়। তাই জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে থানার সামনে গিয়েও ফিরে এসেছি কয়েকবার।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিবাদের মীমাংসায় একাধিকবার গ্রাম্য সালিশ বসানো হলেও অভিযুক্তরা কোনভাবেই আপস মেনে নেয়নি। বরং তারা প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে এসেছে এবং শেষ পর্যন্ত কলা বাগান ধ্বংস করে জোরপূর্বক জমি দখলে নিয়েছে। সরেজমিনে গেলে গাছ কাটার ও লুটপাটের চিহ্ন পাওয়া যায়।
এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবার ও স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন—অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি নিরীহ কৃষক পরিবারকে নিরাপত্তা দিতে হবে যাতে তারা নির্ভয়ে আইনের আশ্রয় নিতে পারে।
এই ধরনের ঘটনা শুধু একটি পরিবারের নয়, বরং গোটা কৃষক সমাজ ও গ্রামীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য বড় হুমকি। জমি বিরোধের নামে প্রকাশ্যে দিনের বেলায় এমন ধ্বংসযজ্ঞ এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দৃষ্টি এড়ালে তা আরও উদ্বেগজনক পরিস্থিতির জন্ম দিতে পারে।