শিরোনাম
◈ ‌‌‘পোপ ফ্রান্সিস জানতে চাইতেন কীভাবে মাইক্রোক্রেডিট মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনে’ ◈ দেশের ৮ জেলায় বজ্রপাতে ১৫ জনের মৃত্যু ◈ সারাদেশের সব পলিটেকনিকে টানা এবার শাটডাউন ঘোষণা ◈ সরকার যেসব শর্ত দিয়েছে মানবিক করিডোরের জন্য  ◈ কাঙ্ক্ষিত বাণিজ্যের জন্য পাকিস্তান-বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসতে হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা ◈ আমরা আরেকটা গাজা হতে চাই না: রাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ প্রসঙ্গে ফখরুল (ভিডিও) ◈ অভিনেতা ইরেশ জাকেরের বিরুদ্ধে মামলা প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল যা বললেন ◈ প্রথম আলোর ঈদ কার্টুন ইস্যুতে সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন, ৪ মে আদেশ ◈ সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য বেতন গ্রেড নিয়ে সুখবর ◈ বিল পরিশোধ না করায় ইউনাইটেড গ্রুপের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন

প্রকাশিত : ২৯ এপ্রিল, ২০২৫, ০১:১০ রাত
আপডেট : ২৯ এপ্রিল, ২০২৫, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দেশের ৮ জেলায় বজ্রপাতে ১৫ জনের মৃত্যু

দেশের আট জেলায় বজ্রপাতে ১৫ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে কুমিল্লায় পাঁচজন, কিশোরগঞ্জের তিনজন, নেত্রকোণা দুইজন এবং শরীয়তপুর, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, খুলনা ও চাঁদপুরে একজন করে মারা গেছেন।

আজ সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

এদিন সকালে বজ্রপাতে অষ্টগ্রাম উপজেলায় দুইজন ও মিঠামইন উপজেলায় একজন মারা যান।

তারা হলেন—অষ্টগ্রামের কলমা ইউনিয়নের হালালপুর গ্রামের মৃত যতিন্দ দাসের ছেলে ইন্দ্রজিত দাস (৩০) ও খয়েরপুর আব্দুল্লাপুর ইউনিয়নের খয়েরপুর গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার ছেলে স্বাধীন মিয়া (১৪)।

এছাড়া, মিঠামইন উপজেলার কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের রানীগঞ্জ গ্রামের মৃত আশ্রাব আলীর স্ত্রী ফুলেছা বেগম (৬০) প্রাণ হারিয়েছেন।

অষ্টগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইন্দ্রজিত ও স্বাধীন ধান কাটছিলেন, সে সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।'

'ফুলেছা বেগম বাড়ির পাশে ধান মাড়াই করছিলেন, সে সময় বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়,' বলেন মিঠামইন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অর্পণ বিশ্বাস।

নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নে বজ্রপাতে মো. দিদারুল ইসলাম (২৫) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষক এবং মদন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়ন এলাকায় আরাফাত (১০) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
 
খারনৈ হাফসা (র.) মহিলা মাদ্রাসা ও আল নূর ইসলামিক একাডেমির শিক্ষক দিদারুলের বাড়ি উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের ধুনন্দ গ্রামে। তার বাবার নাম নুরুল ইসলাম।

মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষকরা জানিয়েছেন, সকালে মাদ্রাসার সামনেই বজ্রপাতে তিনি দগ্ধ হন। মাদ্রাসার শিক্ষক ও আবাসিক শিক্ষার্থীরা তাকে নিকটস্থ চিকিৎসক মখলেসুর রহমানের কাছে নিয়ে গেলে তিনি দিদারুলকে মৃত ঘোষণা করেন। যে কারণে তাকে আর হাসপাতালে নেওয়া হয়নি।

খারনৈ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ওবায়দুল হক ডেইলি স্টারকে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিয়শ্রী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোতাহার হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সকালে মাদ্রাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হলে বাড়ির সামনেই বজ্রপাতে আরাফাতের মৃত্যু হয়।

আরাফাত ওই গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে। সে পাশেই একটি মাদ্রাসার ছাত্র ছিল।

মদন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আলিদুজ্জামান জানিয়েছেন, আরাফাতের পরিবারকে সরকারি নীতি অনুযায়ী আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় গরুর জন্য ঘাস কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে শেফালী বেগম (৩৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার সখিপুর ইউনিয়নের বেপারী কান্দি গ্রামে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুল হক ডেইলি স্টারকে জানান, শেফালী বেগমকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

'পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে,' বলেন তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শেফালী বেগম ওই গ্রামের সোহরাব হোসেন বেপারীর স্ত্রী।

বজ্রপাতে গুরুতর আহত হলে কয়েকজন কৃষক দৌড়ে এসে তাকে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন, জানান তারা।

কুমিল্লার মুরাদনগর, বরুড়া ও দেবিদ্বার উপজেলায় বজ্রপাতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

এর মধ্যে মুরাদনগর উপ‌জেলায় দুইজন, বরুড়া উপজেলায় দুইজন ও দেবিদ্বার উপজেলায় একজন মারা গেছেন।

মুরাদনগর উপ‌জেলার বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান জানিয়েছেন, 'কোরবানপুর গ্রামের দক্ষিণ বিলে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যুর তথ্য পেয়েছি আমরা।'

তারা হলেন—দেওড়া গ্রামের জসিম উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে জুয়েল ভূঁইয়া (৩৫) ও কোরবানপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ার কালীবাড়ি এলাকার মৃত বীরচরণ দেবনাথের ছেলে নিখিল দেবনাথ (৬০)।

মাহফুজুর রহমান জানান, তাদের পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে৷

মাঠে ঘুড়ি উড়ানোর সময় বরুড়া উপজেলার খোশবাস ইউনিয়নের পয়ালগাছা গ্রামে বজ্রপাতে বড়হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির দুই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।

তারা হলো—পয়ালগচ্ছ গ্রামের মৃত খোকন মিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন (১৩) ও একই গ্রামের আব্দুল বারেক মিয়ার নাতি সায়মন হোসেন (১৩)।

তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী নাজমুল হক জানান, বজ্রপাতে আরও একজন আহত হয়েছে৷

দেবিদ্বার উপজেলার সাহারপাড় গ্রামে নানার সঙ্গে ধানখেত থেকে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে কোটকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মিম আক্তারের (১০) মৃত্যু হয়েছে।

দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবুল হাসনাত খান ডেইলি স্টারকে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের শ্রীধরপুর গ্রামে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মাখন রবিদাস (৪৮) নামে এক চা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

মাখন ওই ইউনিয়নের অহিদাবাদ চা বাগানের মৃত শংকুরা রবিদাসের ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মাখন শ্রীধরপুর গ্রামের আলমাছ মিয়ার জমির ধান চুক্তিতে কেটে দিচ্ছিলেন। বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।

উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন আহমদ মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় বজ্রপাতে রিমন তালুকদার (২২) নামে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।

এদিন সকালে উপজেলার আটগাঁও গ্রামের বুড়িগাঙ্গাল হাওরে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

রিমন শাল্লা কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে বজ্রপাতের শব্দে খুলনা ও চাঁদপুরে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।

খুলনায় মারা যাওয়া ওই যুবকের নাম মো. আরিফুল ইসলাম (৩৭)। তিনি রূপসা উপজেলার জাবুসা গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আইচগাতি এলাকায় বঙ্গবন্ধু কলেজের পেছনে আগামীকাল মঙ্গলবার একটি ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

'ওয়াজ মাহফিলের মাইক সংযোগের কাজ করছিলেন আরিফুল। বজ্রপাতের শব্দে ভয়ে পড়ে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে,' ডেইলি স্টারকে বলেন রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান।

খেত থেকে ধান তুলতে গিয়ে বজ্রপাতের শব্দে অজ্ঞান হয়ে যান চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার কচুয়া উত্তর ইউনিয়নের নাহারা গ্রামের গৃহবধূ বিশাখা রানী (৩৫)।

বিশাখা ওই গ্রামের কৃষক হারিপদ সরকারের স্ত্রী।

কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিশাখাকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সোহেল জানান, 'তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। তবে বজ্রপাতের কারণে তিনি হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছেন। উৎস: ডেইলি স্টার।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়