আজিজুল ইসলাম : যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় রবি মৌসুমের শেষ দিকে ধানের ক্ষেতে কারেন্টপোকার আক্রমণে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। কীটনাশক প্রয়োগ করেও পোকা দমন সম্ভব হচ্ছে না, ফলে অনেকে বাধ্য হয়ে কাঁচা ধান কেটে ঘরে তুলছেন। একইসঙ্গে কৃষকরা কালবৈশাখী ঝড়ের আশঙ্কাতেও ভুগছেন।
উপজেলার দরাজহাট, জামদিয়া ও নারিকেবাড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে এমন চিত্র দেখা গেছে। জলেশ্বর বিলের কৃষক আবুল হোসেন জানান, তিনি আড়াই একর জমিতে রড মিনিকেট জাতের ধান আবাদ করেছেন। তবে অর্ধেক ধান পাকার পরই কারেন্টপোকার আক্রমণে তিন বিঘা জমির গাছ শুকিয়ে গেছে। কীটনাশক প্রয়োগ করেও সাফল্য মেলেনি, পাশাপাশি কৃষি অফিস থেকেও কোনো সহায়তা পাননি তিনি।
একই এলাকার কামাল হোসেনও এক একর জমির মধ্যে এক বিঘার কাঁচা ধান কাটতে বাধ্য হন। তিনি অভিযোগ করেন, কারেন্টপোকার আক্রমণের সময় ব্লক সুপারভাইজারদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। জামদিয়া ইউনিয়নের কৃষক বিপুল বিশ্বাস জানান, তার এক বিঘা জমির চার কাঠা ধান নষ্ট হয়েছে। পোকা গাছের রস চুষে নিলে গাছ শুকিয়ে পড়ে এবং ধান আর পাকতে পারে না, এমনকি গরুরাও সেই খড় খেতে চায় না।
নারিকেবাড়িয়া ইউনিয়নের খানপুর গ্রামের আবু সাঈদ, সন্ন্যাসী মন্ডল, অশোক দাস এবং শংকর বিশ্বাসসহ আরও অনেক কৃষক একই সমস্যার কথা জানিয়েছেন। তারা বলছেন, কারেন্টপোকার পাশাপাশি কালবৈশাখীর ভয় থাকায় অনেকে এখন কাঁচা ধান কাটছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এবছর বাঘারপাড়ায় ১৬,৫৭৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে, যার মধ্যে উফশী জাতের ধান বেশি। রড মিনিকেট জাতের ধানের আবাদ হয়েছে সবচেয়ে বেশি জমিতে। কৃষি অফিসার সাইয়েদা নাসরিন জাহান জানান, মাঠের ৭০ শতাংশ ধান ইতোমধ্যে পেকে গেছে এবং কৃষকরা ধান কর্তন শুরু করেছেন।
তিনি আরও জানান, কারেন্টপোকা দমনে জমিতে বিলিয়ে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে। একই সঙ্গে তিনি আশার কথা শোনান যে, আগামী রবিবার থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, যা কারেন্টপোকা নিধনে সহায়ক হবে।