আইরিন হক, বেনাপোল: গনমাধ্যমে রিপোর্টের পর অবশেষে বেনাপোল বন্দরে পূনরায় শুরু হয়েছে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে চলাচলকারী পণ্যবাহী ট্রাক স্ক্যানিং কার্যক্রম। স্ক্যানিং কার্যক্রম চালুর ফলে বন্দরে অনেকটা নিরাপদ বাণিজ্যের পরিবেশ ফিরেছে বলছেন বানিজ্য সংশিষ্টরা।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) থেকে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এই স্ক্যানিং কার্যক্রম শুরু করেন। যা পরিচালনা করছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ফাইবার এ্যাসোসিয়েটস।
এর আগে গত ২০ এপ্রিল আমাদের সময়. কমে এ নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।
স্ক্যানিং মেশিন পরিচালনায় নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফাইবার অ্যাসোসিয়েটসের প্রতিনিধি বনি আমিন বলেন, ২০২৩ সালের ০৫ নভম্বরে বন্দরের বাইপাস সড়কে রাখা মোবাইল স্ক্যানার মেশিনটি যান্ত্রিক ত্রুটির পর থেকে পণ্যবাহী ট্রাক স্ক্যানিং কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ২০২৫ সালের জানুয়ারীতে বন্দর কার্গোভেহিকেল টার্মিনালে নতুন স্ক্যানিং মেশিন বসায় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর।
বেনাপোল বন্দর কার্গোভেহিকেল টার্মিনালে স্থাপিত স্ক্যানিং মেশিনটি কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। সন্দেহ ভাজন পণ্যবাহী ট্রাক ও কিছু পণ্যবাহী ট্রাক বাধ্যতামুলক স্ক্যানিংয়ের নির্দেশনা রয়েছে। সেসব ট্রাক স্ক্যানিং করা হচ্ছে। মিথ্যা ঘোষনার কোন পণ্য বা আমদানি,রফতানি নিষিদ্ধ পণ্য বৈধ পথে প্রবেশ রুখবে এই স্ক্যানিং মেশিন। এছাড়া চেকপোষ্ট কাস্টমসের ও স্ক্যানিং মেশিনটি একই সাথে চালু করা হয়েছে জানান তিনি।
বেনাপোল আমদানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, বানিজ্য নিরাপদ রাখতে স্ক্যানিং মেশিন সচল থাকা খুব জরুরী। এটি চালু করাতে চোরাকারকারীরা পণ্যবাহী ট্রাকে সহজে অবৈধ কোন পণ্য পাচার করতে পারবেনা। সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যবাহী ট্রাকগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে স্ক্যানিং কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বৈধ পথে অনিয়ম ও চোরাচালানের ঝুঁকি অনেক বেড়েছিল। এখন চোরাচালনা কমে আসবে জানান তিনি।
ট্রাক চালক অজয় দাস জানান, স্ক্যানিং চালু হওয়াতে এখন আর কেউ অবৈধ পণ্য ট্রাকে তুলে দেওয়ার সাহস করবে না। কারন পণ্যবাহী ট্রাকে মিথ্যা ঘোষনার একটি সুই রাখলেও সনাক্ত করতে সক্ষম অত্যাধুনিক এই স্ক্যানিং মেশিন। এতে পণ্যবহনকারী চালকদের হয়রানিও কমবে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, বেনাপোল বন্দরের বাইপাস সড়কে আগে মোবাইল স্ক্যানিং মেশিন থাকলেও যান্ত্রিক ত্রুটিতে সেটি এক বছরের বেশি সময় অকেজো ছিল। পরে সেই শূন্যতা পূরণে নতুন একটি স্থায়ী স্ক্যানিং মেশিন বসানো হয়েছে কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালে, তবে সেখানেও পণ্য স্ক্যানিং কার্যক্রম শুরু হচ্ছিলনা। ফলে বিপুল ব্যয়ে স্থাপন করা যন্ত্র পড়ে ছিল অকার্যকর অবস্থায়। এতে নিরাপদ বানিজ্য ঝুকির মধ্যে পড়েছিল। স্ক্যানিং মেশিন মেশিন চালু হওয়ায় বানিজ্যে অনেকটা নিরাপত্তা ফিরেছে।
বন্দর ট্রাফিক বিভাগের পরিচালক শামিম হোসেন জানিয়েছেন, স্ক্যানিং মেশিন চালু করতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছিল। এক বছরেরও বেশি সময় পর বন্দরে স্ক্যানিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে সচ্ছতা ফিরবে বানিজ্যে।