শিরোনাম
◈ দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির জন্য সকলকে কুরআনের দিকেই ফিরতে হবে: জামায়াতে আমীর ◈ দুই উপদেষ্টার এপিএসের দুর্নীতির বিষয়ে যা বলছে দুদক ◈ বাংলাদেশে চরম দারিদ্র্যের হার বাড়তে পারে: বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস ◈ বাংলাদেশকে ৩ ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে ইতালি ◈ সর্বদলীয় বৈঠক পাকিস্তান ইস্যুতে, সরকারের যেকোনো পদক্ষেপে ‘পূর্ণ সমর্থন’ বিরোধীদলের ◈ রাজনৈতিক দলগুলোকে দেশের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তারেক রহমান ◈ পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫: এবার সরকারের কাছে নির্দিষ্ট ৬ দাবি পুলিশের ◈ সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের জামাতা মাহমুদুজ্জামানকে অবসরে পাঠিয়েছে সরকার ◈ ৩০ কেজি গাঁজা ও কাভার্ড ভ্যানসহ এক মাদক কারবারি গ্রেফতার  ◈ ভারতের ভয়ংকর পরিকল্পনা ফাঁস করল পাকিস্তান

প্রকাশিত : ২৪ এপ্রিল, ২০২৫, ০৮:৩৮ রাত
আপডেট : ২৫ এপ্রিল, ২০২৫, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাজশাহীতে ভুয়া মাদ্রাসা চালিয়ে প্রতারণা, স্থানীয়দের ক্ষোভ

ইফতেখার আলম বিশাল : রাজশাহী জেলার পবা উপজেলার বড়গাছী ইউনিয়নের ইটাঘাটী প্রথমপাড়া গ্রামে 'জান্নাতুল ফেরদাউস মহিলা হাফেজিয়া মাদ্রাসা (লিল্লাহ বোর্ডিং ও এতিমখানা)' নামের একটি মাদ্রাসা কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবে নেই পাঠদান বা শিক্ষার্থীর কোনো চিহ্ন। অথচ মাদ্রাসার নাম ব্যবহার করে প্রতিদিন এলাকায় ঘুরে ঘুরে তোলা হচ্ছে হাজার হাজার টাকা, চাল-ডাল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য। স্থানীয়দের অভিযোগ, এটি একটি সংগঠিত প্রতারণার কেন্দ্র যা ধর্মের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে যাচ্ছেন রাজু আহমেদ নামের এক ব্যক্তি।

প্রতিদিন সকাল হলেই তিনটি ইজিবাইক ছুটে বেড়ায় রাজশাহীসহ আশপাশের এলাকায়—মাদ্রাসার নামে সাহায্য সংগ্রহের জন্য। অথচ স্থানীয় কেউ কখনোই মাদ্রাসাটিতে কোনো শিক্ষার্থী দেখেনি। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খোইবর আলী অভিযোগ করেন, রাজু অনুমতি ছাড়াই তার স্বাক্ষর নকল করে তাকে মাদ্রাসার সভাপতি বানিয়ে রেখেছিল, যা জানার পর তিনি তা বাতিল করতে বলেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টিনের বেড়ায় ঘেরা একটি স্থানে ইটের কিছু ঘর থাকলেও সেখানে নেই কোনো শিক্ষার্থী, শিক্ষক, বা পাঠদানের পরিবেশ। রয়েছে শুধু আলু, পেঁয়াজ ও চালের স্তুপ—যা দানের মালামাল হিসেবেই বোঝা যায়। নেই বিছানাপত্র, নেই কোনো শিক্ষা উপকরণ।

মাদ্রাসার নামে ভুয়া রশিদ ছাপিয়ে বছরজুড়ে চলে রাজুর অনুদান সংগ্রহের মহোৎসব। অথচ স্থানীয়রা বলছেন, এই নামে কোনও শিক্ষা কার্যক্রম চলছে না। রাজু নিজেই একাধারে মাদ্রাসার সভাপতি, মহাপরিচালক এবং ক্যাশিয়ার। তার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে পবা থানায় একটি মাদক মামলাও রয়েছে (জি.আর. মামলা নং ২১/২০১৯), যার কারণে তিনি কারাগারেও ছিলেন।

সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হলো—এই ভুয়া মাদ্রাসা নিয়ে কেউ কথা বললেই রাজু ও তার ‘ক্যাডার বাহিনী’ হুমকি-ধামকি দিয়ে মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করে। এমনকি সাংবাদিকদের সাথেও খারাপ আচরণ করা হয়, প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।

স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “রাজু যেভাবে ধর্মকে ঢাল বানিয়ে প্রতারণা করছে, তা থামানো না গেলে আসল মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলোর প্রতি মানুষের বিশ্বাস উঠে যাবে। আমরা চাই, প্রশাসন অবিলম্বে এই প্রতারকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিক।”
এই ঘটনা স্পষ্ট করে দেয়, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে ঢাল বানিয়ে কেউ যদি নিজের স্বার্থ হাসিল করে, সেটি শুধু বেঈমানি নয়, একটি গোটা সমাজব্যবস্থার উপর আঘাত।

প্রশাসনের কাছে স্থানীয়দের একটাই দাবি—রাজু আহমেদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই প্রতারণার জাল ছিন্ন করা হোক।
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়