মোঃ জালাল উদ্দিন, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের এক তরুণের সঙ্গে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার এক তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে টিকটকে পরিচয়ের সূত্র ধরে। পরে আদালতে গিয়ে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করেন তারা। বিয়ের পর চট্টগ্রামের একটি বাসা নিয়ে বাসায় এক রুমের বসবাস শুরু করেন দুজন। একপর্যায়ে নববধূর কাছ থেকে কৌশলে পালিয়ে যান ওই তরুণ। পরে স্বামীর খোঁজে স্বামীর গ্রামের বাড়িতে এসে উপস্থিত হন তরুণী। কিন্তু সেখানেও স্বামীকে পাননি।
সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫ ইং, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের কাটারাই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী তরুণীর বাড়ি ব্রাক্ষণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায়। তিনি উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু মিয়া চৌধুরীর বাড়ির সুলেমান মিয়ার ঘরে অবস্থান করছেন।
জানা যায়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কাটারাই গ্রামের আফতাব আলীর ছেলে ওয়াকিব আলীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল ওই তরুণীর। গত ৬ এপ্রিল চট্টগ্রামে কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। ভুক্তভোগী তরুণীর ভাষ্য, তিনি পরিবারের সঙ্গে চট্টগ্রামে বসবাস করেন। টিকটকে গত জানুয়ারিতে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কাটারাই গ্রামের আফতাব আলীর ছেলে ওয়াকিব আলীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ৩ এপ্রিল ওয়াকিব চট্টগ্রামে যান। ৬ এপ্রিল চট্টগ্রাম সদরের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে তারা বিয়ে করেন। বিয়ের পর চট্টগ্রামের একটি বাসা নিয়ে বাসায় এক রুমের বসবাস শুরু করেন দুজন। পরে তার পরিবারের সঙ্গেই অবস্থান করছিলেন ওয়াকিব।
গত ১৫ এপ্রিল নামাজে যাচ্ছেন বলে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি ওয়াকিব। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। এ অবস্থায় সোমবার স্বামীর সন্ধানে কাটারাই গ্রামে চলে আসেন ওই তরুণী। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে ওয়াকিবের বাড়ির সন্ধান পেলেও স্বামীকে পাননি। পরে তিনি স্থানীয় খলিলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের শরণাপন্ন হন। তরুণীর দাবি, তার স্বামীকে পরিবারের সদস্যরা প্রতিবেশীর বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছেন এবং ওয়াকিবের পরিবারের সদস্যরা তাকে বাড়িতে ঢুকতে দেননি। তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। স্বামীর সন্ধান পেতে বর্তমানে তিনি চেয়ারম্যানের বাড়িতে রয়েছেন।
তরুণীর আরও বলেন, আমার স্বামী ওয়াকিবকে আমার কাছ থেকে দূরে রাখার জন্য শাশুড়ি শরিফা বেগম জাদু করেছেন। ওয়াকিব আমার সঙ্গে থাকতে চায়, কিন্তু তারা দেননি। এখন আমার যাবার আর কোনো জায়গা নাই। আমি ওয়াকিবকে চাই। বিয়ের পর চট্টগ্রামে বাসা নিয়ে দুজন এক রুমের অবস্থান করেছি, আমি তার সঙ্গে গিয়ে কালার হয়ে গেছি। এখন আমাকে কেউ নেবে না।
এ দিকে ওয়াকিবের বাবা আফতাব আলী বলেন, আমার ছেলে ব্যবসার টাকা নয়-ছয় করে রমজানের ঈদের চার দিন পর বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এরপর তার খোঁজ পাইনি। সে পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতো, কিন্তু আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। ছয়-সাত দিন আগে তার খালার বাড়িতে সে ওঠে। খালাদের মাধ্যমে বাড়িতে আসতে চাইছিল। আমি তাকে আসতে দেইনি।
আফতাব আলী তিনি আরও বলেন, মেয়েটি সম্পর্কে আমি জানি না। শুনেছি বাড়িতে এসেছে। আমি তখন বাড়িতে ছিলাম না। আর আমার ছেলের বিয়েরই বয়স হয়নি। আর এই মেয়েকে কীভাবে গ্রহণ করবো। যারা মেয়েটিকে নিয়ে আসছে আমি তাদের বলেছি, ছেলে গ্রহণ করলে এটা আমি জানি না। ছেলে নিজেই চলতে পারে না। আরেকজনকে রাখবে কীভাবে?
সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু মিয়া বলেন, সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় মেয়েটি আমার বাড়িতে আসে। আমার ব্যস্ততা থাকায় সুলেমান মিয়ার ঘরে তাকে রেখে এসেছি। উভয় পক্ষ যোগাযোগ করছেন। বসে সমাধান করার চেষ্টা করব বলে তিনি জানান।