চট্টগ্রামের রাউজানে দুই দিনের মাথায় মোহাম্মদ ইব্রাহিম (৩০) নামের আরও এক যুবদল কর্মী খুন হয়েছেন। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার গাজীপাড়া গ্রামের বাজারের একটি দোকানের সামনে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বাড়ির দেড় কিলোমিটার দূরে একটি দোকানের সামনে বসেছিলেন ইব্রাহিম। হঠাৎ তিনটি অটোরিকশায় করে ১০ থেকে ১২ জনের একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ইব্রাহিমের মাথায় ও বুকে গুলি করে। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। এ সময় তার বাবা মোহাম্মদ আলম ও চাচা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হালিমকে লক্ষ্য করেও গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা। গায়ে গুলি না লাগলেও পালাতে গিয়ে পড়ে আহত হন তারা। হত্যাকাণ্ডের পর অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে করে চলে যায় সন্ত্রাসীরা।
নিহত ইব্রাহিম ইব্রাহিমের বাড়ি আদর্শ গুচ্ছগ্রামে। তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী। তার ছয় বছর ও দুই বছর বয়সী দুটি শিশুসন্তান রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ইব্রাহিমের মাথায় ও বুকে গুলি করা হয়েছে। এ কারণে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে পুলিশ। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের চাচা আবদুল হালিম জানান, ভাতিজাকে তার সামনেই গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। এ সময় এগিয়ে গেলে তাকে লক্ষ্য করেও তিন চারটি গুলি ছোড়ে। তিনি এবং তার বড় ভাই কোনও রকমে পালিয়ে বেঁচে গেছেন। তার ভাতিজা যুবদল করলেও কোনও ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রাউজানে গুলিবিদ্ধ যুবদল কর্মী ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মোহাম্মদ রায়হান নামের এক সন্ত্রাসীর নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
এর আগে গত শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের গরিব উল্লাহপাড়া গ্রামের ভান্ডারি কলোনির একটি বাসায় ভাত খাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা যুবদল কর্মী মোহাম্মদ মানিক আবদুল্লাহকে (৩৬) গুলি করে হত্যা করে। নিহত মানিক আবদুল্লাহও গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী ছিলেন। দুই দিনের ব্যবধানের পর পর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।