শিরোনাম
◈ মারা গেলেন পোপ ফ্রান্সিস ◈ বাংলাদেশের নতুন বাঁধ নিয়ে ভারতের উদ্বেগ, সীমান্তে প্রতিনিধিদল (ভিডিও) ◈ আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে চান শাজাহান খান ◈ চাঁনখারপুল গণহত্যা : সাবেক ডিএমপি কমিশনারসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ◈ এবার ব্যাংক হিসাব তলব মডেল মেঘনা আলমের ◈ করফাঁকির কারণে ২০২৩ সালে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে সরকার: সিপিডি ◈ দেশে তিন স্তরে কমছে ইন্টারনেটের দাম ◈ অবৈধ অভিবাসীদের সহায়তাকারীদের মার্কিন দূতাবাসের হুঁশিয়ারি ◈ সতর্ক সংকেত জারি, আজ বজ্রপাতে মৃত্যুর ঝুঁকি খুবই বেশি ◈ পলাতক সাবেক মন্ত্রী-এমপিরা যুক্তরাজ্যে আ.লীগ নেতার ছেলের বিয়েতে 

প্রকাশিত : ২১ এপ্রিল, ২০২৫, ১১:১৮ দুপুর
আপডেট : ২১ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:০৫ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

টাঙ্গাইলের ৭০০ বছরের নওয়াব শাহী জামে মসজিদে ৯৮ বছর ধরে চলছে অবিরাম কুরআন তিলাওয়াত

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর নওয়াব শাহী জামে মসজিদ। এই মসজিদে ৯৮ বছর ধরে ২৪ ঘণ্টাই চলছে কুরআন তিলাওয়াত। শুনতে আশ্চর্য মনে হলেও এমনটিই হয়ে আসছে ধনবাড়ী উপজেলার ৭০০ বছরের পুরোনো এ জামে মসজিদে। পালাক্রমে এ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন পাঁচজন হাফেজ। এই মসজিদ লাগোয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মধুপুরের মরহুম জমিদার সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরীর কবর। এর পাশেই চলে কুরআন পাঠ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় ছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগেও থেমে থাকেনি কুরআন তিলাওয়াত। সূত্র: যুগান্তর

মসজিদে দায়িত্বরতরা জানান, কবরের আজাব থেকে মুক্তি পেতে ও অনন্ত শান্তির জন্য ১৯২৭ সালে সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী এ মসজিদে সার্বক্ষণিক কুরআন তিলাওয়াতের ব্যবস্থা করেন। ১৯২৯ সালের ১৭ এপ্রিল মারা যান এ নবাব বাহাদুর। মসজিদের এক পাশে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। তার মৃত্যুর পরও এখন পর্যন্ত চলছে এ কুরআন তিলাওয়াত।

স্থানীয় সূত্র জানা যায়, সেলজুক তুর্কি বংশের ইসপিঞ্জার খাঁ ও মনোয়ার খাঁ নামে দুই ভাই ১৬ শতাব্দীতে এক কক্ষবিশিষ্ট এই মসজিদ নির্মাণ করেন। ১১৫ বছর আগে সবশেষ নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী মসজিদটি সম্প্র্রসারণ করে আধুনিক রূপ দেন। সংস্কারের আগে মসজিদটির দৈর্ঘ্য ছিল ১৩ দশমিক ৭২ মিটার এবং প্রস্থ ৪ দশমিক ৫৭ মিটার। সংস্কারের পর মসজিদটি হয় বর্গাকৃতির। করা হয় তিন গম্বুজবিশিষ্ট মুঘলস্থাপত্যের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। মসজিদের মেঝে আর দেওয়াল কাচের টুকরো দিয়ে মোজাইক করা। মেঝেতে মার্বেল পাথরে খোদাই করা সুনিপুণ কারুকার্য। ভেতরের সব জায়গাতেই চীনামাটির টুকরো দিয়ে মোজাইক নকশায় অলংকৃত, যার অধিকাংশ ফুলেল নকশা। মসজিদের ভেতরে ঢোকার জন্য পূর্বদিকের বহুখাঁজে চিত্রিত খিলানযুক্ত তিনটি প্রবেশপথ, উত্তর ও দক্ষিণে আরও একটি করে পাঁচটি প্রবেশপথ রয়েছে। প্রায় ১০ কাঠা জায়গার ওপর নির্মিত মসজিদটির চারদিক থেকে চারটি প্রবেশপথ ও ৯টি জানালা এবং ৩৪টি ছোট-বড় গম্বুজ রয়েছে। বড় ১০টি মিনারের প্রতিটির উচ্চতা ছাদ থেকে প্রায় ৩০ ফুট। মসজিদের দোতলার মিনারটির উচ্চতা প্রায় ১৫ ফুট। ৫ ফুট উচ্চতা এবং ৩ ফুট প্রস্থের মেহরাবটি দেখতে বেশ আকর্ষণীয় এবং দৃষ্টিনন্দন। পূর্বদিকের তিনটি প্রবেশপথ বরাবর পশ্চিমের দেওয়ালে তিনটি মেহরাব রয়েছে। ৩০ ফুট উচ্চতার মিনারের মাথায় স্থাপিত ১০টি তামার চাঁদ মিনারের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে। মসজিদে সংরক্ষিত রয়েছে ১৮টি হাড়িবাতি, যেগুলো শুরুর দিকে নারিকেল তেলের মাধ্যমে আলো জ্বালানোর কাজে ব্যবহার করা হতো।

নওয়াব শাহী জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব ইদ্রিস হোসাইন বলেন, ৭শ বছরের পুরাতন মসজিদ এবং পাশেই কবরে প্রায় ৯৮ বছর কুরআন তিলাওয়াত হয় ২৪ ঘণ্টা। অনেক পুরাতন মসজিদটির ঐতিহ্য ধরে রাখতে সরকারি সহায়তার কথা জানান তিনি।

সরেজমিন দেখা যায়, কবরের পাশে কুরআন তিলাওয়াত অবিরাম চলছে তো চলছেই। একজন পড়ে উঠে গেল অন্যজন কুরআন নিয়ে বসছেন। কুরআনের আয়াতের সেই সুমধুর সুর কবরের চারপাশে প্রতিনিয়তই ধ্বনিত হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে।

ধনবাড়ী এলাকার রজব আলীসহ কয়েকজন জানান, তাদের জন্মের পর অন্তত ৬০ বছর ধরে কুরআন তিলাওয়াত দেখছেন। অবিরাম কুরআন তিলাওয়াতের বিষয়টি দেখতে অনেকেই দূরদূরান্ত থেকে আসেন।

গাজীপুর থেকে আসা কলেজছাত্র আব্দুল করিম বলেন, মিডিয়ার মাধ্যমে মসজিদ সম্পর্কে জানতে পেরেছি। তাই শুক্রবার বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে এসেছি এবং নিজ চোখে দেখতে এসেছি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়