শিরোনাম
◈ মাসে অতিরিক্ত ২৫০ মিলিয়ন ডলার গুনতে হবে মার্কিন শুল্ক থাকলে  ◈ ভারতের সঙ্গে কাশ্মীর নিয়ে দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ বাংলাদেশের কাছে তুলল পাকিস্তান ◈ মেরে না ফেলা পর্যন্ত ভারত, ‘র’ আর আ.লীগের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত থাকবে: হাসনাত আবদুল্লাহ ◈ ‘চীন সরকারের হাসপাতাল নীলফামারীতে হবে’ ◈ বাংলাদেশ ভ্রমণে মার্কিন নাগরিকদের জন্য সতর্কতা ◈ বাসাবাড়িতে নতুন গ্যাস সংযোগ নিয়ে তিতাসের সতর্কবার্তা ◈ দেশের বাজারে আবার বাড়লো স্বর্ণের দাম, দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ◈ প্রশাসন কার পক্ষে,পাল্টাপাল্টি অভিযোগে এনসিপি - বিএনপি ◈ প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের বেতনস্কেলের প্রস্তাব বাস্তবায়নে কাজ চলছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা ◈ জাতীয় সংসদের আসন ৬০০ করার সুপারিশ নারী সংস্কার কমিশনের

প্রকাশিত : ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ০৫:৩৮ বিকাল
আপডেট : ২০ এপ্রিল, ২০২৫, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শিকল দিয়ে হাত–পা বেঁধে গৃহবধূকে ধর্ষণ, প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

স্বামী ঢাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। বাড়িতে ৭০ বছর বয়সী অসুস্থ শাশুড়ি আর দুই বছর বয়সী কন্যাসন্তানকে নিয়ে বসবাস করছেন এক গৃহবধূ। ২২ বছর বয়সী ওই গৃহবধূকে শিকল দিয়ে হাত–পা বেঁধে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তাঁর ওপর অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে।

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর অভিযোগ, দেশি অস্ত্র নিয়ে তাঁর ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে তিন ব্যক্তি। পাশবিক নির্যাতন চালানোর পাশাপাশি ওই দুর্বৃত্তরা ঘরে থাকা টাকা, স্বর্ণালংকারসহ মালামাল লুট করে নিয়েছে। নির্যাতন ও লুট শেষে পালিয়ে যাওয়ার সময় তারা ঘরের জামাকাপড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে নাঙ্গলকোট উপজেলার একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে গতকাল শুক্রবার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়ে অভিযোগটিকে মামলা হিসেবে রেকর্ড করেছে। মামলায় দুজনের নাম উল্লেখ করে একজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। গতকাল রাতেই অভিযান চালিয়ে মূল হোতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার হওয়া তরুণের নাম মো. ইমাম হোসেন (২৪)। তিনিও নাঙ্গলকোটের বাসিন্দা। মামলার প্রধান আসামি তিনি। মামলায় জাহিদুল্লাহ (২৫) নামে একজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তবে তাঁর বিস্তারিত ঠিকানা উল্লেখ করা হয়নি। ভুক্তভোগী গৃহবধূ জানিয়েছেন, ঘটনার সময় ইমাম হোসেনের মুখে জাহিদুল্লাহ নামটি শুনেছেন তিনি। মামলার অজ্ঞাতনামা আরেক আসামি ঘটনার সময় মুখোশ পরা ছিলেন। তিনি গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ।

ভুক্তভোগী গৃহবধূর অভিযোগ, ঘটনার মূল হোতা ইমাম হোসেনের পরিবারের সঙ্গে তাঁর স্বামীর পরিবারের সম্পত্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে পুরোনো বিরোধ আছে। সেই বিরোধকে কেন্দ্র করে তাঁর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে।

আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে ফজলুল হক প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়ে মামলাটি এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল রাতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে ইমাম হোসেনকে নিজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে কুমিল্লার আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশ পুরো ঘটনাটি তদন্ত করছে। এ ছাড়া মামলার অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।

মামলার আরজিতে গৃহবধূ উল্লেখ করেছেন, তাঁর স্বামী ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গাড়িচালক হিসেবে চাকরি করেন। গ্রামের বাড়িতে অসুস্থ শাশুড়ি (৭০), কন্যাসন্তানসহ (২) বসবাস করেন তিনি। তাঁদের সঙ্গে আসামি ইমাম হোসেনের দীর্ঘদিন ধরে শত্রুতা চলে আসছে। ইমামসহ তাঁর লোকজন গৃহবধূ ও পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছেন। ইমাম হোসেন আগেও বেশ কয়েকবার তাঁকে ধর্ষণের হুমকি দেন। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ইমামসহ অজ্ঞাতনামা দুজন দেশি অস্ত্র, লোহার শিকল, তালা–চাবিসহ তাঁদের বসতঘরের দরজা ভেঙে গৃহবধূর কক্ষে ঢুকে পড়েন। এ সময় ইমাম হোসেন গৃহবধূর শিশুকন্যার জামা তাঁর মুখের ভেতর ঢুকিয়ে দেন এবং অপর আসামিদের সহযোগিতায় ওড়না দিয়ে তাঁর মুখ বেঁধে ফেলেন। একপর্যায়ে লোহার শিকল দিয়ে গৃহবধূর হাত–পা বেঁধে তালা মেরে দেন তাঁরা। এরপর ইমাম হোসেনের সহায়তায় মুখোশ পরা এক ব্যক্তি গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। পাশে থাকা অন্যজন গৃহবধূর মাথার চুল কেটে ফেলেন।

ওই গৃহবধূ মামলার আরজিতে আরও লেখেন, তাঁর ওপর পাশবিক নির্যাতনের পর আসামিরা ঘরের স্টিলের আলমারিতে থাকা ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা, স্বর্ণালংকারসহ বেশ কিছু প্রয়োজনীয় দলিলপত্র নিয়ে যান। ঘটনার সময় ইমাম হোসেন বারবার জাহিদুল্লাহর নাম উচ্চারণ করেন। পরে তাঁর অসুস্থ শাশুড়ি টের পেয়ে চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এলে তাঁরা দ্রুত পালিয়ে যান।

আজ সকালে নির্যাতিত ওই গৃহবধূ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার সময় আমার মেয়ে ঘুমে ছিল। আমি বারবার তাদের কাছে মিনতি করেছি, আমার ক্ষতি না করার জন্য। কিন্তু তারা আমার কোনো কথাই না শুনে একের পর এক অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে গেছে। আলমারি থেকে জামাকাপড় নিচে ফেলে যাওয়ার সময় আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। আমি এই লম্পটদের বিচার চাই।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে ওই গৃহবধূ আরও বলেন, ‘যাওয়ার সময় ওই লম্পটরা আমাকে হুমকি দিয়ে বলে গেছে, এসব ঘটনা কাউকে বললে আমাকে মেরেই ফেলবে। একজন আমার ওপর পাশবিক নির্যাতন করে। অন্যরা আমার শরীরে বাজেভাবে স্পর্শ করে। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এমন ঘটনার পর আমি জীবন্ত লাশের মতো বেঁচে আছি।’ উৎস: প্রথম আলো।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়