ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে পর পর কয়েকটি সংঘর্ষের পর সায়দাবাদ থেকে ছেড়ে আসা বরিশাল এক্সপ্রেস নামের একটি বাসের ছাদ উড়ে গেছে। তবে বাস না থামিয়ে ছাদবিহীন গাড়িটি কয়েক কিলোমিটার পথ চালিয়ে নিয়ে যান চালক। এতে আহত হয়েছেন কয়েকজন যাত্রী।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগরের সমষপুরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বাসে থাকা এক যাত্রী জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে এক্সপ্রেসওয়ের কামারখোলা রেল ফ্লাইওভারের উপর ‘বরিশাল এক্সপ্রেস’ নামক দ্রুতগতির বাসটি সামনে থাকা একটি মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দেয়। এ সময় সামনে থাকা আরও একটি কাভার্ডভ্যানে গিয়ে ধাক্কা লাগে। এতে বাসের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে গেলে বাস চালক আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
এ সময় পেছনে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গাড়ি দেখে বাসচালক আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন উল্লেখ করে যাত্রীরা জানান, পরে সমাষপুরে এক্সপ্রেসওয়ের রেলিংয়ের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে বাসটির ছাদ উড়ে সড়কে ছিটকে পড়ে। এতে যাত্রীরা আরও আতঙ্কিত হয়ে বাসটি থামানোর অনুরোধ করেন। কিন্তু তারপরও থামেননি চালক। বরং ছাদবিহীন অবস্থায় প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ চালিয়ে যান।
এরপর পদ্মা সেতু দিয়ে না গিয়ে বাসটি ভিন্ন একটি অভ্যন্তরীণ সড়কে প্রবেশ করে। এ সময় বাস থেকে কয়েকজন যাত্রী লাফিয়ে নেমে যান। একপর্যায়ে পদ্মা সেতু উত্তর থানা এলাকার কুমারভোগের অন্ধকার সড়কে ঢুকে যায়। এ সময় যাত্রীদের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে আসে। পরে কুমারভোগে ছিদ্দিকিয়া মাদ্রাসার সামনে বাসটি আটকে দেন তারা। এ সময় উত্তেজিত জনতা চালককে আটকের চেষ্টা করলে তিনি সটকে পড়েন।
শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা দেওয়ান আজাদ জানান, এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন জায়গা থেকে আহত ৮ জনকে উদ্ধার করেছি। বেপরোয়া বাসটির গতি মাঝেমধ্যে কমলে তারা লাফিয়ে নামেন। এর মধ্যে একজনের মাথা ফেটেছে। একজন চলন্ত বাস থেকে লাফিয়ে কোথায় পড়েছেন তার এখনো হদিস পাওয়া যায়নি।
পদ্মা সেতু উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘বাসটি আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তবে চালক পালিয়ে গেছেন। চালককে আটকের চেষ্টা চলছে।’
হাসাড়া হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুল কাদের জিলানী জানান, গুরুতর আহত একজনকে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আর বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।