পরিকল্পিতভাবে তাঁর স্বামী শাকিব মাহমুদ (২৪) খুন করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার শাকিব মাহমুদ পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানিয়েছেন বলে দাবি পুলিশ কর্মকর্তাদের।
গতকাল সোমবার রাত আটটার দিকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের হাফেজ মহিন উদ্দিনের ওরসের মেলায় নাগরদোলায় তুলে লাকী বেগমকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। তিনি উপজেলার কালাপোল এলাকার মো. মনছুরের মেয়ে। খুনের ঘটনার পর নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল এলাকা থেকে অভিযুক্ত শাকিবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শাকিব নোয়াখালী সদর উপজেলার মান্নান নগরের মঙ্গল হোসেনের ছেলে।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান আজ মঙ্গলবার সকালে বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাকিব জানিয়েছেন তিনি স্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিতভাবে মেলায় নিয়ে গিয়েছিলেন। স্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে পার্শ্ববর্তী একটি বাজার থেকে গতকালই ছুরিটি কেনেন। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি রক্তমাখা অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করেছে।
ওসি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাকিব মাহমুদ দাবি করেছেন তাঁর স্ত্রী টিকটকের জন্য ভিডিও নির্মাণ করতেন, যা তিনি পছন্দ করতেন না। এ ছাড়া স্ত্রী পরকীয়ায় যুক্ত বলেও সন্দেহ ছিল তাঁর। এসব বিষয়ে স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ঝগড়াও হয়। এর জেরে তিনি স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
খুনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে স্ত্রীকে মেলায় নিয়ে যান জানিয়ে ওসি আরও বলেন, সন্ধ্যায় মেলায় ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে স্ত্রীকে সঙ্গে নেন শাকিব। মেলায় একটি নাগরদোলায় দুজন ওঠেন। সেখান থেকে নামার আগমুহূর্তে স্ত্রীর গলায় ছুরি দিয়ে জখম করেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর স্ত্রী লাকী আক্তারের মৃত্যু হয়।
গতকাল রাতে হত্যার ঘটনায় একটি মামলা করেন নিহত লাকীর বাবা মো. মনছুর। মামলায় শাকিব মাহমুদকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে। নিহত লাকী বেগমের মা শেফালী বেগম বলেন, এক বছর আগে তাঁর মেয়ে ও শাকিবের বিয়ে হয়। ১৫ দিন আগে লাকী ও শাকিব তাঁদের বাড়িতে আসেন। গত রোববার দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল। এর এক পর্যায়ে লাকীকে মারধর করেন শাকিব। লাকীর মুঠোফোনও ভেঙে ফেলা হয়। শেফালী বেগম আরও বলেন, ‘আমার মেয়ে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। আমি শাকিবের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’ উৎস: প্রথম আলো।