ঈশ্বরদী (পাবনা) থেকে : পাবনার ঈশ্বরদীতে এবারই প্রথমবারের মতো চাষ হলো মৌরি মসলা। উপজেলার ইস্তা গ্রামের কৃষক আনিসুর রহমান নিজ উদ্যোগে এবং কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ১০ শতক জমিতে এই মৌরি আবাদ করেন। রোববার সরজমিনে দেখা যায়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় এই আবাদ হয়েছে। জমির পাশে একটি সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে। তাতে মৌরির জাত, কৃষকের নাম, জমির পরিমাণসহ প্রদর্শনীর তথ্য দেওয়া আছে।
জানতে চাইলে আনিসুর রহমান জানান, ‘এই এলাকায় আগে কখনো মৌরি চাষ হয়নি। নতুন কিছু করার আগ্রহ থেকেই শুরু করি। কৃষি বিভাগ বারী-১ জাতের বীজ ও পরামর্শ দিয়েছে। ডিসেম্বরের শুরুতে বপন করি। এখন পর্যন্ত গাছের বৃদ্ধি ভালো। আশা করছি ফলনও ভালো হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘খরচ হয়েছে চার-পাঁচ হাজার টাকার মতো। এখনো কাটা হয়নি, তাই লাভের হিসাব মেলানো যাচ্ছে না। তবে যেভাবে গাছ বেড়েছে, তাতে মনে হচ্ছে এই মসলার সম্ভাবনা অনেক।
যদি লাভজনক হয়, আগামীতে আরও বড় পরিসরে আবাদ করব।’ স্থানীয় আরেক কৃষক মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘আমি আগে কখনো ভাবিনি এই জমিতে মৌরি চাষ করা যাবে। আনিসুর শুরু করার পর আমরা প্রতিদিন মাঠে গিয়ে দেখেছি কীভাবে গাছ বড় হচ্ছে। ফলন দেখে উৎসাহ পাচ্ছি আমরাও। যদি ভালো দাম পাওয়া যায়, তাহলে আমি নিজেও আগামী মৌসুমে চাষ করতে আগ্রহী।’
প্রদর্শনী পর্যবেক্ষণে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুজন কুমার রায় বলেন, ‘বীজ ও সার প্রকল্প থেকে দেওয়া হয়েছে। মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, ফলন আশানুরূপ হবে। প্রতি বিঘায় ৪ থেকে ৫ মণ ফলন পাওয়া যেতে পারে।’ ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিতা সরকার জানান, ‘দেশে মসলার চাহিদা অনেক। তাই আমদানিতে কোটি কোটি টাকা খরচ হয়। সেই ব্যয় কমাতেই স্থানীয় পর্যায়ে মসলা উৎপাদনের দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যে ঈশ্বরদীতে কালোজিরা, ধনিয়া ও তেজপাতার আবাদ হচ্ছে। এবার শুরু হলো মৌরি চাষ।’
তিনি আরও বলেন, ‘বারী-১ জাতটি উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। আমরা সেই জাতের বীজ সরবরাহ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে, কৃষকরা আগ্রহী হলে আগামীতে এর আবাদ আরও বাড়ানো হবে।’