ফয়সাল চৌধুরী : দেশের অন্যতম শীর্ষ চাল ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুর রশিদের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক মো: শাকিল (৪২) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছেন পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। বুধবার গভীর রাতে আব্দুর রশিদ বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় এজাহার জমা দেন। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকাল সোয়া ৮টার দিকে মামলাটি রুজু হয়েছে ।
চাল ব্যবসায়ীর বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনার পর বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে, মোটরসাইকেল নম্বর ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে মোটরসাইকেল চালক আবদুস সাকিরকে সকালে তাঁর শ্বশুরবাড়ি রাজবাড়ীর খানখানাপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেন মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন।
পুলিশ সূত্র গেছে, আব্দুর রশিদসহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি ছোড়া হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে রাত থেকেই বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে অভিযানে নামে পুলিশ। মোটরসাইকেল নম্বর ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আবদুস সাকিরকে সকালে তাঁর শ্বশুরবাড়ি রাজবাড়ীর খানখানাপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গুলিবর্ষণের সময় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলও জব্দ করা হয়। এরপর তাঁকে কুষ্টিয়া মডেল থানায় নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন বলেন, এ ঘটনায় জড়িত মোটরসাইকেলচালক কাজী আবদুস সাকিরকে (৪২) গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। সাকির কুষ্টিয়া শহরের চর আমলাপাড়া এলাকার কাজী আব্দুর সামাদের ছেলে। সকালে রাজবাড়ী জেলার সদর উপজেলার খানখানাপুর এলাকায় অবস্থিত শ্বশুরবাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ওসি আরও জানান, থানায় সাকিরকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে গুলি ছোড়ার ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য মিলেছে। আরও তথ্যের জন্য বিকেলে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কুষ্টিয়া আদালতে নেওয়া হয়েছে। তাঁকে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। জড়িত বাকিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে গতকাল বেলা পৌনে ২টার দিকে শহরের গোশালা সড়কে রশিদের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। গুলিতে তাঁর বাড়ির তৃতীয় তলার একটি কাচ ভেঙে যায়। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ঘটনার সময় রশিদ খাজানগর এলাকায় নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি। সদর উপজেলার খাজানগর এলাকায় তাঁর বড় কয়েকটি চালকল আছে।
রশিদের ভাতিজা খাজানগর এলাকার গোল্ডেন অটো রাইস মিলের মালিক ও বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির কুষ্টিয়া শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা যুবদলের সাবেক শিল্পবিষয়ক সম্পাদক শিল্পপতি জিহাদুজ্জামান বলেন, ‘সম্প্রতি কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় বেশ কয়েকটি বড় হাটের ইজারা আহ্বান করা হয়েছে। এর মধ্যে আইলচারা পশুর হাটের দরপত্র কেনা হয়েছে। এই হাটের দরপত্র উত্তোলন করায় চরমপন্থী সংগঠনের পরিচয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। বিষয়টি আমলে না নিয়ে দরপত্র জমা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল।
রশিদ জানান, একটি পশুর হাটের ইজারার দরপত্র কেনার পর থেকে চরমপন্থী সংগঠনের নেতা পরিচয় দিয়ে দরপত্র জমা না দিতে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। কয়েক দিন আগে প্রায় ১ কোটি ৬২ লাখ টাকায় হাটের ইজারা পান আব্দুর রশিদের ভাতিজা জিহাদুজ্জামান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চরমপন্থী নেতা স্বপন ঠাকুর পরিচয় দিয়ে হুমকি দেওয়া হয়। ইজারা প্রত্যাহার করে না নিলে মেরে ফেলার হুমকি দেন ওই ব্যক্তি।