আইরিন হক,বেনাপোল(যশোর) প্রতিনিধি: যশোরের শার্শা উপজেলার ফাতেমাতুজ্জোহরা কাওমী মাদ্রাসার মহিলা আবাসিক রুম থেকে শিক্ষকের লাগিয়ে রাখা দুটি নাইট ভিশন সিসি ক্যামেরা ও শিক্ষকের কক্ষ থেকে মনিটর জব্দ করেছে পুলিশ।
মাদ্রাসাটিতে ছাত্রীদের কক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের ব্যাপারে এক অভিভাবকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বিকেলে এ অভিযান চালায় পুলিশ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাজিব হাসান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিশাত আল নাহিয়ানের নেতৃত্বে অভিযানে সিসি ক্যামেরা ও মনিটর জব্দ করা হয় প্রতিষ্ঠান থেকে। এসময় মাদ্রাসার শিক্ষক আবু তাহেরকে (৪৫) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করলেও পরে মুসলিকা নিয়ে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
পুলিশ ও নির্ভরশীল সুত্র জানায়, কাওমি মাদ্রাসাটির পাঁচতলা ভবনের নিচতলায় দুই শিক্ষক থাকেন। ওপরের চারটি তলায় আবাসিক থেকে মেয়েরা লেখাপড়া করে। ওই মাদ্রাসায় কতজন মেয়ে থাকে তার হিসাব মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ দিতে পারেনি। তবে ৪০ মেয়ের নাম পেয়েছে পুলিশ। সংখ্যাটি ১০০ থেকে ১৫০ হতে পারে ধারনা করা হচ্ছে।
এদিকে মাদ্রাসার মালিক আবু তাহের একই সাথে পরিচালক ও শিক্ষক। তিনি দাবি করেন, নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। তিনি যখন সিসি ক্যামেরা দেখেন, তখন তাঁর স্ত্রী সঙ্গে থাকেন। সিসি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ করেন প্রতিষ্ঠানের নারী প্রধান শিক্ষক।গত বছর মাদ্রাসায় ১৮০ মেয়ে ভর্তি হয়েছিল। এখন ভর্তি চলছে। এ জন্য একটু কম আছে এখন। ১২ জন শিক্ষক আছেন। এর মধ্যে নয়জন নারী ও তিনজন পুরুষ।
যশোরের মানবাধীকার সংগঠন রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষনো মল্লিক জানান, মেয়েদের ঘুমানোর ঘরে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের মানবাধীকার লঙ্ঘন করেছে শিক্ষক। তার বিরুদ্ধে পণ্যগ্রাফি আইনে মামলা হতে পারে। তবে এরা অপরাধ করেও পার পেয়ে যাওয়ায় সমাজে অপরাধের প্রবনতা বাড়ছে।
শার্শা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) কেএম রবিউল ইসলাম জানান, পুলিশ মাদ্রাসা থেকে ১৬টি সিসি ক্যামেরাসহ অন্যান্য যন্ত্র জব্দ করেছে।
জব্দকৃত সিসি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই–বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মেয়েদের শোবার ঘরে ক্যামেরা স্থাপন করে তাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা খর্ব করা হয়েছে। এটা কেউ করতে পারেন না। যখনই ডাকা হবে, তখনই হাজির হওয়ার শর্তে পরে আবু তাহেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।