ফারুকুজ্জামান, কিশোরগঞ্জ : প্রধান শিক্ষক আওয়ামী লীগ নেতা শামীমের গাফিলতির কারণে কিশোরগঞ্জের একটি বিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষার্থী প্রবেশপত্র না পেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। এ ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবার।
১০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ছিল এসএসসি পরীক্ষা প্রথম দিন। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের গাফিলতির কারণে এসএসসি পরীক্ষায় বসতে পারেনি ১০ শিক্ষার্থী। শিক্ষা জীবনের প্রথমে হোছট খেলো কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। যা কোন ভাবেই কাম্য ছিল না দাবী সচেতন মহলের।
গত বুধবার (০৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা বিন্নাটি ইউনিয়নের কয়ারখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জেসমিন আক্তারের মা মোছা. আসমা (৪৫)।
লিখত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা বিন্নাটি ইউনিয়নের কয়ারখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের (সুরুজ খান উচ্চ বিদ্যালয়) প্রধান শিক্ষক আওয়ামী লীগ নেতা শামীম (৪৫), সহকারী শিক্ষক মাজাহারুল (৩৫), মুজাম্মেল (৪০) ও সাখাওয়াত (৪০) কে গাফিলতির কারণে বিদ্যালয়ের ১০ জন শিক্ষার্থীর এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র আসেনি। কিন্তু কয়েকদিন আগেও ওই ১০ জন শিক্ষার্থীর অভিভাবকগণ প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রবেশপত্রের কথা জিজ্ঞাসাবাদ করিলে প্রবেশপত্র আসবে বলে আশ্বস্ত করেছিল।
১০ জন পরীক্ষার্থী কাছ থেকে ফরম পূরনের ফি বাবদ প্রতি পরীক্ষার্থী কাছ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা করে নিয়েছিলেন। কারো কাছ থেকে ৪ হাজার এমনকি ৭ হাজার টাকা করে নিয়েছেন বলেও শুনা যাচ্ছে। প্রবেশপত্র আসছে কিনা বিষয়টি জানার জন্য গত ৮ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে কয়ারখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ প্রবেশপত্র চাইলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরকল গালিগালাজ করে প্রধান শিক্ষক শামীমসহ ওই সহকারী শিক্ষকগণ।
এ বিষয়ে কয়ারখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীম জানান, আমার বিদ্যালয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পাঠদানের অনুমতি/স্বীকৃতি না থাকায় অন্য প্রতিষ্ঠানের নামে রেজিস্ট্রেশন করে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেওয়ানোর ব্যবস্থা করে থাকি। এবছরও সেটি করেছিলাম। কিন্তু যে প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলাম এই প্রতিষ্ঠান প্রধান আমাকে জানান যে, যারা এক সাবজেক্টের বেশি বিষয়ে় অকৃতকার্য হয়েছে তাদেরকে রেজিস্ট্রেশন করানো যায়নি। তাই বাকি শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেওয়়ার জন্য আমি অন্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি।
কিশোরগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার শামছুন নাহার মাকছুদা জানান, এ রকম কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম আমার দপ্তরের তালিকায় নেই। বোর্ডের স্বীতৃতি/পাঠদানের অনুমতি ব্যতিত কোন প্রতিষ্ঠান এভাবে চলতে পারে না। শিক্ষার্থীদের একটা বছর নষ্ট করে দিয়েছে তা খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়ে আমি উর্ধ্বধন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।