বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে আন্তপ্রাথমিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সময় উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। পরে ভিডিওগুলো মুছে দেওয়া হয় এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেয় কর্তৃপক্ষ।
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে আন্তপ্রাথমিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় আসা ছাত্রী, শিক্ষিকা ও নারী অভিভাবকদের ব্যবহৃত বাথরুমে মোবাইলে গোপনে ভিডিও ধারণকালে উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের অফিস সহায়ক (পিয়ন) আবদুর রহিমকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে।
অভিযুক্ত আবদুর রহিম উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের মধ্য চরবাটা গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বড় ভাই আবদুল আলিম পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের প্রধান শাখায় সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত। এ জন্য গুরুতর অপরাধ প্রমাণের পরও আবদুর রহিমের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি মহলের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, উপজেলা পর্যায়ের আন্তপ্রাথমিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বুধবার সকাল থেকে সুবর্ণচর পরিষদ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষিকা, নারী অভিভাবক ও প্রতিযোগী ছাত্রীরা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে পার্শ্ববর্তী পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের একটি কক্ষ ব্যবহার করেন। এ ছাড়া সব প্রতিযোগিতায় ওই রুম ব্যবহার করা হয়।
সূত্র আরও জানায়, সকাল থেকে ওই ব্যাংকের অফিস সহায়ক আবদুর রহিম নিজের মোবাইলে বাথরুমের ভেন্টিলেটর দিয়ে অভিভাবক, শিক্ষিকা ও ছাত্রীদের গোপন ভিডিও ধারণ করেন। দুপুর ১২টার দিকে মুন্সিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক নারী অভিভাবক বিষয়টি বুঝতে পেরে ভিডিও রেকর্ডিং অবস্থায় মোবাইল ফোনটি আটক করেন। পরে শিক্ষকেরা মোবাইলের মালিক অফিস সহায়ক আবদুর রহিমকে আটক করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি পুলিশে খবর দেন।
উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি আলী আক্কাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, মোবাইলটি হাতে আসার পর ছড়িয়ে যাওয়ার ভয়ে শিক্ষকেরা আপত্তিকর সব ভিডিও মুছে দেন। পরে এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে অভিযোগ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আবদুর রহিম জঘন্যতম অপরাধের বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে থানা-পুলিশ মোবাইলটি জব্দ করে।
উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক আলেয়া খাতুন বলেন, অভিযোগের প্রমাণ পেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শে অফিস সহায়ক আবদুর রহিমের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে হেড অফিসে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন মিয়া বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। অভিযুক্তের মোবাইল ফোনটি জব্দ করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু কেউ লিখিত অভিযোগ দিতে রাজি না হওয়ায় অভিযুক্তকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।