সিলেটে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের নামে বেশ কয়েকটি দোকান ও রেস্টুরেন্টে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় একদল দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার পর রাতভর অভিযান চালিয়ে ১৪ জনকে আটক করেছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকালে সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হক ঢাকা পোস্টকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আটককৃতরা হলেন- মো. রাজন, ইমন (১৯), মো. রাকিব (১৯), মো. আব্দুল মোতালেব (৩৫), মিজান আহমদ (৩০), সাব্বির আহমদ (১৯), জুনাইদ আহমদ (১৯), মো. রবিন মিয়া (২০), সৈয়দ আলআমিন তুষার (২৯), মোস্তাকিন আহমদ তুহিন (১৯), মো. দেলোয়ার হোসেন (৩০), মো. রিয়াদ (২৪), মো. তুহিন (২৪) ও আল নাফিউ (১৯)।
ওসি জিয়াউল হক বলেন, গতকাল ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভের সুযোগে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করে একদল দুষ্কৃতিকারীরা। তারা বাটা শোরুমের বেশ কিছু জুতা লুট করে নিয়ে যান। পরে বিভিন্ন ফেসবুক আইডি ও পেইজ থেকে এসব বিক্রির বিজ্ঞাপনও দেওয়া হয়। এসব পোস্ট ও তথ্যের সূত্র ধরে রাতভর অভিযান চালিয়ে জুতাসহ তাদের আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে দিনভর উত্তাল ছিল সিলেট। তৌহিদী জনতার মিছিল থেকে কেএফসি, বাটা জুতার শো-রুমসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় নিন্দার ঝড় ওঠেছে বিভিন্ন মহলে। দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।
তাৎক্ষণিক পুলিশ কোনো পদক্ষেপ না নিলেও সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত সংগৃহীত ভিডিও ফুটেজ দেখে অভিযানে চালিয়ে ভাঙচুর-লুটপাটে জড়িত ৩ জনকে আটক করেছে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।
গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে সোমবার সিলেটে তৌহিদী জনতার ব্যানারে দুর্বৃত্তরা বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। তাৎক্ষণিক পুলিশ উৎসুক জনতার ভিড় থেকে কাউকে আটক করতে পারেনি। তবে পরে সোশ্যাল মিডিয়া ও গণমাধ্যমের বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে জড়িতদের আটক করা হয়েছে। অন্যদের আটক করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, তৌহিদী জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল থেকে নগরের মীরবক্সটুলা কেএফসিতে ভাঙচুর, লুটপাট করা হয়। এ সময় কেএফসির মালামাল বাইরে এনে চুরমার করা হয় এবং কেএফসি ও রয়েল মার্কস হোটেলের ক্যাশ থেকে নগদ টাকা লুটের অভিযোগ ওঠে।
তৌহিদী জনতা ইসরায়েলি পণ্য কোকাকোলো, স্প্রাইটসহ কোমল পানীয় রাস্তায় ফেলে ধ্বংস করেন। ভাঙচুর করা হয় নবনির্মিত রয়েল মার্কস হোটেলও। ভবনের গ্লাসগুলো ভাঙচুর করা হয়। পাশাপাশি কেএফসির আসবাবপত্র, ইলেক্ট্রিক সামগ্রী টিভি, ফ্রিজ, ওভেনসহ সবকিছু রাস্তায় বের করে ভাঙচুর করা হয়েছে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও এক পাশে নীরব দর্শকের মতো দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। এ ছাড়া বাটার সবকটি শো-রুমেও ভাঙচুর, লুটপাট করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। তবে শপিংমল ইউনিমার্টে ভাঙচুরকালে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে হামলাকারীরা চলে যায়। এ সময় ইউনিমার্টের সামনে সেনা সদস্যদের নিরাপত্তা দিতে দেখা গেছে।