যশোরে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে সিরাজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে মারধরের পর চোখ তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন এক নারী ও তার মেয়ের জামাই। পরে ওই ব্যক্তি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
শনিবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিরাজুল ইসলামের মৃত্যু হয়। নিহতের ছেলে রাত ১০টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে দুপুরে যশোর সদরের বাহাদুরপুর জেস গার্ডেন পার্ক এলাকায় মারধরের ঘটনা ঘটে। সিরাজুল যশোর শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকার রবিউল ইসলামের ছেলে। ধর্ষণের অভিযোগ তোলা নারী সিরাজুলের আত্মীয়।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় পক্ষে-বিপক্ষে নানা কথাবার্তা চলছে। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে। প্রকৃত কারণ উদঘাটন ছাড়া আসলে বলা যাচ্ছে না, কেন মারধরের ঘটনা ঘটেছে। তবে ওই নারীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে আসল ঘটনা জানা যাবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুরে সিরাজুল তার আত্মীয় ওই নারীর বাড়িতে যান। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ ওই বাড়ি থেকে মারামারি ও কান্নাকাটির শব্দ পান প্রতিবেশীরা। তারা সেখানে গিয়ে দেখেন লোহার পাইপ দিয়ে সিরাজুলকে মারধর করছেন ওই নারী ও তার মেয়ের জামাই। এর মধ্যে সিরাজুলের দুই চোখ ক্ষতবিক্ষত দেখতে পান তারা। গুরুতর অবস্থায় সিরাজুলকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠান প্রতিবেশীরা। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নিজাম উদ্দিন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠান।
ওই নারী জানান, সিরাজুল দীর্ঘদিন ধরে তাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় দুপুরে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। আত্মরক্ষা করতে গেলে তার পাইপের আঘাত সিরাজুলের চোখে লাগে। তখন তাকে মারধর করা হয়। বিষয়টি দেখে তার মেয়ের জামাই এগিয়ে এসে সিরাজুলকে মারধর করেন।
যশোর হাসপাতালে চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিমাদ্রী শেখর সরকার বলেন, ওই ব্যক্তির দুটি চোখ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। এখানে সেবা দেওয়া সম্ভব নয়। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসনাত বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কী কারণে মারামারির ঘটনা ঘটেছে, পুলিশ বিষয়টির তদন্ত করছে। ওই নারীকে পুলিশের হেফাজতে আনা হয়েছে।’
নিহতের ছোট ভাই মফিজুল ইসলাম ইমন বলেন, ‘আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। রবিবার সকালে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে মূল ঘটনা সাংবাদিকদের জানানো হবে।’
যশোর কোতোয়ালি থানার ওসিকে উদ্ধৃত করে জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর-ই আলম সিদ্দিকী রাতে আহত সিরাজুল ইসলামের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। উৎস: বাংলাট্রিবিউন।