শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৫ মার্চ, ২০২৫, ০৯:২৫ রাত
আপডেট : ২৬ মার্চ, ২০২৫, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চট্টগ্রামে শেষ সপ্তাহে সরগরম ঈদ বাজার, -সবখানেই উপচেপড়া ভিড়

অনুজ দেব বাপু, চট্টগ্রাম : হাতেগোনা কয়েক দিন বাকি ঈদের। শেষ সপ্তাহে চট্টগ্রামে পুরোপুরি সরগরম ঈদ বাজার। বিপণিবিতান ও শপিংমলগুলোর পাশাপাশি ফুটপাতগুলোতেও ভিড় বেড়েছে। শেষ সময়ে সাধ্যের মধ্যে ঈদবাজারের শখ মেটাতে ব্যস্ত ক্রেতারা। প্রিয়জনের মুখে হাসি ফোটাতে ঘুরছেন এ মার্কেট থেকে ও মার্কেট। সকালের দিকে একটু কম ভিড় থাকলেও বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে জমজমাট বিকিকিনি। ক্রেতাদের সামাল দিতে বিক্রেতাদের দম ফেলার সময় নেই। ঈদ বাজারের শেষ সপ্তাহে লক্ষ্য পূরণের আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, নিউ মার্কেট, রিয়াজউদ্দিন বাজার, টেরিবাজার, জহুর হকার্স মার্কেট, মিমি সুপার মার্কেট, আফমি প্লাজা, স্যানমার ওশান সিটি, ফিনলে স্কয়ার, শপিং কমপ্লেক্স, বালি আর্কেড, মতি টাওয়ার, গুলজার টাওয়ার, কেয়ারি শপিং মল, আখতারুজ্জামান সেন্টার, লাকি প্লাজা, আমিন সেন্টার, ইউনেস্কো সেন্টারসহ অধিকাংশতেই ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। এছাড়া ঈদকে ঘিরে নগরীর পাহাড়তলি, হালিশহর, বন্দর হাসপাতাল গেইট, ফ্রিপোর্ট, বন্দরটিলা, অলংকার, বড়পোলসহ অন্যান্য এলাকার মার্কেট এবং ফুটপাতেও বিকিকিনি জমে উঠেছে। ক্রেতাদের মধ্যে বেশিরভাগই পরিবারসহ বের হয়েছেন মার্কেটগুলোতে।  ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন পোশাকে সেজেছে মার্কেট ও শপিং মলগুলো। ক্রেতাদের আকর্ষণ বাড়াতে বিভিন্ন মার্কেটে দেওয়া হয়েছে আকর্ষণীয় মূল্য ছাড়।

ঈদের কেনাকাটায় মার্কেটগুলোতে প্রায় সব ধরনের পণ্যই পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে শার্ট-প্যান্ট, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি-পায়জামা, ট্রাউজার, বাচ্চাদের পোশাক, শাড়ি, শার্ট পিস, প্যান্ট পিস, থ্রি-পিস, বেল্ট, জুতা, গেঞ্জি, লুঙ্গি ইত্যাদিসহ হরেক রকমের পণ্য। এছাড়া ব্যাপক পণ্যের পসরা নিয়ে সেজেছে বাচ্চাদের জুতা ও পোশাকের দোকানগুলোও।

ক্রেতারা বিভিন্ন মার্কেট ও শপিং মল থেকে নিজের পছন্দ অনুযায়ী শাড়ি, থ্রি-পিস, শার্ট ও প্যান্ট, জুতা, স্যান্ডেল, পাঞ্জাবিসহ অন্যান্য জিনিস কিনছেন। একইসঙ্গে কসমেটিকস, ঘর সাজানোর সামগ্রী এবং গহনার দোকানগুলোতেও ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

ক্রেতাদের অভিযোগ, গতবারের চেয়ে কাপড়ের দাম এবার বেশি। বিক্রেতারা জানান, ঈদ গরমে পড়ায় অরগেঞ্জা ও সূতির চাহিদা রয়েছে। বাজারে পাকিস্তানি ও ভারতীয় কাপড়ের পাশাপাশি দেশি কাপড়ের চাহিদাও রয়েছে। তবে ভারতীয় ও পাকিস্তানি কাপড়ের সরবরাহ কম থাকায় দাম তুলনামূলক বেশি। তাই দেশি কাপড়ের দিকেই ঝুঁকছেন ক্রেতারা। টেরিবাজারে থ্রিপিস কিনতে আসা রেশমি সুলতানা বলেন, ভারতীয়-পাকিস্তানি থ্রিপিসের দাম বেশি হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা। তাই বাজেটের কারণে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছি। তবে সম্ভব না হলে দেশি কাপড় কিনে নেব।

আড়ংয়ে পাঞ্জাবী কিনতে আসা ইফতেখার মাহমুদ বলেন, প্রতিবার ঈদে পাঞ্জাবীর জন্য আড়ংই থাকে প্রথম পছন্দ। এবারও ব্যতিক্রম নয়, শুরুতেই এসেছি আড়ং-এ। আশা করি বাজেট অনুযায়ী পাঞ্জাবী পাব। রিয়াজউদ্দিন বাজারে জুতা কিনতে আসা আকরাম হোসেন বলেন, বেশিরভাগ পোশাকই কেনা শেষ। ঈদে পোশাকের সঙ্গে পছন্দসই জুতাটাও জরুরি। তাই পরিচিত দোকানে জুতা কিনতে আসলাম।

বিভিন্ন মার্কেটে পাঞ্জাবি ২৫০ থেকে ৩,৫০০, জিনস, গ্যাবাডিন প্যান্ট ৪০০-১,৫০০, বাচ্চা ও মেয়েদের পোশাক ২০০-২,০০০, ভ্যানিটি ব্যাগ ২০০-১,৫০০ এবং জুতা ও স্যান্ডেল ৩০০ থেকে ১,৫০০ টাকার বেশিও বিক্রি হচ্ছে।

রিয়াজউদ্দিন বাজারের আমতলা থেকে নিউমার্কেট ও স্টেশন রোডের ফুটপাতে বসেছে শত শত হকারের দোকান। এসব দোকানে জুতা, শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি, পায়জামা, শিশুদের পোশাক, লুঙ্গি, ট্রাউজার, জুতা, বেল্ট, ঘড়ি, মানিব্যাগ, চশমাসহ নানা রকমের পণ্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে। যে যার পছন্দমতো পণ্য দামাদামি করে কিনে নিচ্ছেন। জিন্স-গ্যাবার্ডিন প্যান্ট বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০০-৫০০, পাঞ্জাবি মিলছে ২৫০-৮০০ এবং ৫০ থেকে ২৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে রঙ-বেরঙের টি-শার্ট।

আগ্রাবাদ আক্তারুজ্জামান সেন্টারের পাশে চলছে জমজমাট জুতার বিকিকিনি। সেখানে বিদেশি চায়না জুতার পাশাপাশি এক্সপোর্টের বিভিন্ন জুতার জন্য দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় করছেন ক্রেতারা। হাসান মুরাদ নামের একজন ক্রেতা বলেন, আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে বাড়িতে চলে যাব। তাই কিছুটা কম দামে কিনতে এ মার্কেটে এসেছি। তবে এখানেও দেড় হাজার টাকার কমে ভালো কেডস পাওয়া যাচ্ছে না।  

জহুর হকার্স মার্কেটে লোহাগাড়া থেকে আসা ক্রেতা আবদুর সাত্তার বলেন, হকার্স মার্কেটে দামাদামি করে নিলে কম দামে অনেক ভালো জিনিস পাওয়া যায়। তাই টি-শার্ট ও প্যান্টের জন্য এ মার্কেটে এসেছি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়