শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পারিবারিক কলহের জেরে বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন ছেলে। হত্যার পর দৌড়ে পালানোর সময় ছেলেরও মৃত্যু হয়েছে। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ছেলের মৃত্যু হয় বলে ধারণা করছে পুলিশ। রবিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের চেরাগ আলী বেপারী কান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত কৃষক মকবুল হোসেন মোল্লা (৬৫) উপজেলার চেরাগ আলী বেপারীকান্দি এলাকার বাসিন্দা। আর তার ছেলে রুবেল মোল্লা (৩৩) মালয়েশিয়া প্রবাসী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মকবুল হোসেন মোল্লা দুটি বিয়ে করেছিলেন। প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন তিনি। প্রথম স্ত্রীর সন্তান রুবেল মোল্লা। দীর্ঘদিন যাবত বাবা মকবুল ও ছেলে রুবেলের সঙ্গে পারিবারিক কলহ চলছিল। রবিবার বিকেলে বাড়ির আঙ্গিনার কিছু আমগাছ কেটে ফেলে রুবেল মোল্লা। সন্ধ্যায় রুবেলকে আমগাছ কাটার বিষয় জিজ্ঞেস করেন বাবা মকবুল হোসেন।
এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে দা দিয়ে বাবাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন রুবেল। পরে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মকবুলকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। এদিকে বাবাকে কুপিয়ে পালানোর সময় বাড়ির পাশের ফসলি জমিতে পরে মৃত্যু হয় ছেলে রুবেলের। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে রুবেলের মৃত্যু হয়েছে।
চেরাগ আলী বেপারীকান্দি এলাকার বাসিন্দা দীন ইসলাম বলেন, সন্ধ্যায় আমি বাড়িতে ছাগল বাঁধছিলাম। হঠাৎ চিৎকারের শব্দ পেয়ে দৌড়ে রুবেলের বাড়িতে যাই। রুবেল তার বাবা মকবুল হোসেনকে দা দিয়ে কুপিয়ে পালিয়েছে। আহত অবস্থায় তাৎক্ষণিক মকবুল হোসেনকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠাই। সেখানে তার মৃত্যু হয়। পরে স্থানীয় লোকজন নিয়ে রুবেলকে খুঁজতে বের হই। পরে দেখি রুবেল ফসলি জমিতে পড়ে আছে।
নিহত মকবুল হোসেন মোল্লার মেয়ে রুমেলা আক্তার বলেন, আমার বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে রুবেল। রুবেলও মারা গেছে। এ কি হয়ে গেল বুঝতেই পারলাম না।
নড়িয়া থানার ওসি আসলাম উদ্দিন মোল্লা বলেন, আমরা জানতে পেরেছি পারিবারিক কলহের জেরে রুবেল তার বাবাকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। বাবাকে কুপিয়ে পালানোর সময় ফসলি জমিতে পরে ছেলেরও মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে রুবেলের মৃত্যু হয়েছে। লাশগুলোর সুরতহাল শেষ করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। ময়নাতদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।