শিরোনাম

প্রকাশিত : ২২ মার্চ, ২০২৫, ০৮:২২ রাত
আপডেট : ২৩ মার্চ, ২০২৫, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চট্টগ্রাম এবার ভারতীয় কাপড় বাদ দিয়ে দেশীয় কাপড়েই ঝুঁকছেন ক্রেতারা

এম আর আমিন, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে মার্কেটগুলো ক্রেতাদের পদচারণায় সরগরম হয়ে ওঠেছে।ঈদুল ফিতরে প্রতি বছর বিদেশি কাপড়ের মধ্যে বেশি বিক্রি হতো ভারতীয় কাপড়। কিন্তু এবার ভারতীয় কাপড় বাদ দিয়ে দেশীয় কাপড়েই ঝুঁকছেন ক্রেতারা।কেউ বলছেন দেশীয় পণ্যের মান ভালো হওয়ায় ভারতীয় পণ্য কিনছেন না। দেশি কাপড় বিক্রির পাশাপাশি পাকিস্তানি কাপড়ও বিক্রি হচ্ছে বেশী।

একসময় ঈদ মানেই ছিল ভারতীয় কাপড়ের রমরমা ব্যবসা। ভারতীয় সিরিয়াল নাটকের নামে পোশাক কিনতে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়তেন। ঈদে ভারতীয় পোশাক কিনে না দেওয়ায় আত্মহত্যা এমনকি স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ছাড়াছাড়ি পর্যন্ত হয়েছে। তবে বহু বছর পর এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ভিসা জটিলতার কারণে ভারতীয় পণ্য আসতে না পারার কারণে চট্টগ্রাম অনেক মার্কেটে ভারতীয় পণ্য নেই বললেই চলে। ক্রেতারা বলছেন, এখন পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের পণ্য পছন্দ তাদের।


ঈদের কেনাকাটা এমন চিত্রের ভিন্নতা দেখা যাচ্ছে এবারের মার্কেটগুলোতে। দীর্ঘদিনের এ আধিপত্য ভেঙে দাপট বেড়েছে দেশীয় কাপড়ের। তবে অভিজাত মার্কেটে চাহিদার শীর্ষে রয়েছে ভারতীয় ও পাকিস্তানি কাপড়ের। ব্যবসায়ীদের মতে, এবার এলসি (ঋণপত্র) করে কাপড় আনার কারণে দাম কিছুটা বেশি হওয়ায় অধিকাংশ ক্রেতা দেশীয় কাপড় কিনছেন। 

চট্টগ্রাম নগরের টেরিবাজার ও রিয়াজউদ্দিন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতাদের আনাগোন অধিকাংশ ক্রেতাকে অনেক কাপড় দেখে তারপর কোনো একটিতে থিতু হতে দেখা যায়। তবে এ নিয়ে বিক্রয়কর্মীদের মধ্যে একটু অস্বস্তি থাকলেও ক্রেতাদের নজর নতুন ও আকর্ষণীয় ডিজাইনে।

 
রিয়াজউদ্দিন বাজারের বিক্রয়কর্মী হোসেন মিয়া বলেন, ‘ইন্ডিয়ান কাপড় নামের কারণে সবাই ওগুলোই খুঁজে। কিন্তু কিনে দেশি কাপড়। এর মধ্যে অরগেঞ্জার বেশ কিছু ডিজাইন মানুষ পছন্দ করে। এগুলোর হুবহু কপি ডিজাইনে দেশি কাপড়ও আছে। মানুষ ওগুলোই বেশি নিচ্ছে।

চট্টগ্রামে সরেজমিনে দেখা গেছে, সেন্ট্রাল প্লাজা, ইউনেস্কো সেন্টার, সানমার ওশান সিটি, লাকি প্লাজা, সাউথল্যান্ড সেন্টার, বিপণি বিতান, ফিনলে স্কয়ার, আখতারুজ্জামান সেন্টার, সিঙ্গাপুর মার্কেট, গুলজার টাওয়ার, মতি টাওয়ার, মিমি সুপার মার্কেট, আফমি প্লাজা, আমিন সেন্টার, রিয়াজউদ্দিন বাজার, তামাকুমন্ডি লেইন, শাহ আমানত মার্কেট, ঝলক প্লাজা, বিনিময় টাওয়ার, বে শপিং, হকার্সসহ নগরীর সব মার্কেটের সব দোকানে এ বছর ইন্ডিয়ান কাপড় বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে। ইন্ডিয়ান কাপড়ের চাহিদা মেটাচ্ছে দেশি এবং পাকিস্তানি কাপড়ে। 


ঈদের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, মার্কেটগুলোতে লোকজনেরও কেনাকাটা ব্যাপকভাবে বেড়ে চলেছে। শুধু ইফতারের সময় ছাড়া প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। তবে বেচা বিক্রিতে অনেকে সন্তুষ্ট প্রকাশ করছেন। বিক্রেতারা জানান, ক্রেতারা সব সময় ভালো পোশাক পছন্দ করে থাকেন। সেটা হতে পারে দেশি আবার হতে পারে বিদেশি। 


সাইফুল ইসলাম  নামে এক ক্রেতা বলেন, আগে ইন্ডিয়ান পাঞ্জাবি কিনলেও এবার দেশিটা কিনেছি। মার্কেটে ইন্ডিয়ান কালেকশন মোটামুটি আছে, তবে সেটা পর্যাপ্ত নয়। আমাদের দেশি ভালো ফেব্রিক্স পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া আমাদের দেশি কাপড় বিভিন্ন দেশে আমদানি হচ্ছে। মান ভালো বলেই আমাদের দেশি কাপড়ের চাহিদা রয়েছে। 

টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুল মান্নান বলেন,বিদেশি নকশা-পোশাকের চাহিদা বেশি। তবে চলতি বছর ইন্ডিয়ান কাপড় অনেকটাই কম আসছে। পাশাপাশি বিক্রিতেও ভাটা পড়েছে। প্রতিবছরের তুলনায় এ বছর ইন্ডিয়ান কাপড় বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে। ইন্ডিয়ান কাপড়ের চাহিদা মেটাচ্ছে দেশি এবং পাকিস্তানি কাপড়ে। সর্বোপরি দেশি কাপড়ে চাহিদা বেড়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়