নেই পরিবার। শারীরিকভাবেও অক্ষম। অসুস্থ শরীর নিয়ে খেয়ে না খেয়ে রোজা রাখছেন সিলেটের কাজল বেগম। জীবন সংগ্রামে তার গল্প সিনেমাকেও হার মানাবে। কেউ সাহায্য করলে রোজায় তার কপালে জোটে শুঁটকি, আলু ভর্তা আর ভাত। অন্যথায় না খেয়ে সিয়াম সাধনার দিন পার করছেন তিনি।
মোছা: কাজল বেগম (৩৭), বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার ছাতকের ঘিলাছড়া গ্রামে হলেও বর্তমানে তিনি নগরীর আম্বরখানা এলাকার কলোনিতে একটি ছোট্ট ঘরে বসবাস করছেন।
বাবা-মাকে শৈশবে হারিয়ে ১৮ বছর বয়সে স্বামী নয়ন আহমেদের সাথে বিয়ে হলেও সেই স্বামীও তাকে ছেড়ে আরেকটি সংসার গড়েন। এরপর থেকেই একা একা বাসায় কাজ করে সংসার চালাতেন তিনি। তবে আর একা একা ভালো থাকা হলো কই! শরীরের হাতে, পায়ে, পেটে দেখা দিয়েছে পানি জমে যাওয়ার রোগ, সঙ্গে পিঠে মেরুদণ্ডে হাড় ক্ষয়ের সমস্যাও। টাকার অভাবে ডাক্তার দেখালেও করাতে পারেননি ভালো চিকিৎসা।
রোজার মাসের শুরুতে এক কেজি চাল কিনে সেই চাল দিয়ে ভাত খেয়ে সেহরি ও ইফতার করছেন। ভাত, শুঁটকি ভর্তা ও আলু ভর্তা খেয়ে রাখছেন রোজা। ডাক্তার অনেক ওষুধ লিখে দিলেও তা কিনে খাওয়ার মতো নেই কোনো সামর্থ্য। কাজ করার ক্ষমতা নেই, কেউ কিছু দান করলে তা থেকেই কোনোভাবে বেঁচে থাকার চেষ্টা তার।
ইফতারের আগে দু'হাত তুলে আল্লাহর কাছে অশ্রুসিক্ত চোখে মোনাজাত করা ছাড়া তার কিবা করার আছে!
ইফতারের সময় হয়েছে, বাটিতে অল্প কিছু ভাত আর আলু ভর্তা দিয়ে ইফতারে বসেছেন। সারাদিন রোজা রেখে শুকনো ভাত- ভর্তা যেন গলা দিয়ে নামছে না, তাই বারবার পানি দিয়ে তা খাবারের চেষ্টা ।
প্রতিবেশীরা জানান, তিনি ৫ ওয়াক্ত নামাজ-রোজা পালন করেন, তবে তাকে দেখার মতো কেউ নেই। তাকে সাহায্য করলে মানুষটি সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে পারবে।
বিত্তবানদের প্রতি তার চাওয়া—তিনি যেন সুস্থ হতে পারেন এবং রমজান মাসে সব রোজা রাখতে পারেন। সকল বিত্তবানদের তার সাহায্যে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন তিনি।