কল্যাণ বড়ুয়া,বাঁশখালী(চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের বাঁশখালীর পুঁইছড়ি ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকা ও ছড়া থেকে অবৈধ ভাবে বালি ব্যবসা দিন দিন মারাত্মক আকার ধারন করেছে। বিগত দিনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করা হলেও তারা চলে আসার পর পুনরায় ট্রাক নিয়ে হাজির হয় এবং বালি ব্যবসায়ীদের নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে প্রশাসনের অভিযানের খবর রেখে বার বার পালিয়ে গেলে ও এ অবৈধ বালি ব্যবসার কারণে একদিকে রাস্তার বেহাল দশা অপরদিকে ধুলঅ বালির কারণে শ্বাস কষ্ট থেকে করে নানা ধরনের রোগ ব্যাধি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় ও প্রশাসনের সুত্র মতে,বাঁশখালীর পুঁইছড়ি ইউনিয়নের নাপোড়ায় একসময় সরকারি ভাবে বালু মহল লিজ দেওয়া হলেও পরিবেশের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে সেটা বন্ধ করে দেওয়া হয। কিন্ত পুঁজিহীন অতি লাভের আশায় সংঘবদ্ধ একটি চক্র অবৈধ ভাবে বেপরোয়া হয়ে এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
বিগত দিনে প্রশাসনের অভিযানে পালিয়ে থাকলে ও গভীর রাত কিংবা ভোর রাতে বেপরোয়া ভাবে এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় জনগন পরিবেশ বিপর্যেযর শংকা রাস্তা ঘাটের বেহাল অবস্থা এবং ধুলা বালিতে স্কুল কলেজ মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অতিষ্ট হয়ে প্রতিবাদ করলে ও উল্টো প্রভাবশালী এ বালু ব্যবসায়ীরা সাধারন জনগনকে হুমকি দমকি দেওয়ার অভিযোগ করেন স্থানীয় সমাজকর্মী শামিম উল্লাহ আদিল।
তিনি আরো জানান এমনকি মামলা ও থানায় জিডি করে শায়েস্তা করার হুমকি দিচ্ছে স্থানীয় জনগনকে এ চক্রটি। তারা আরো জানান, পুর্ব পুঁইছড়ির পাহাড়ি ছোট ছড়া থেকে বালি উত্তোলন করতে করতে বিশাল আঁকার ধারন করেছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে সাধারন জনগনের বাড়ি ঘর বিলীন হয়ে যাবে। বর্তমানে এ এলাকাটি দুদু চরে পরিনত হয়েছে। প্রতি ট্রাক বালি জ্জ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারায় প্রতিদিন শত শত ট্রাক বালি বিক্রি করছে চক্রটি। স্থানীয় প্রভাবশালী, সাবেক ইউপি সদস্য ও রাজনৈতিক পরিচয়ধারী কয়েকজন এ কাজ চালিয়ে গেলেও তাদের কাছে স্থানীয় জনগন জিন্মি। আর তারা কথায় কথায় বলে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকদের কেনা আছে কেউ কিছু করতে পারবে না।
বাঁশখালীর পুঁইছড়ি ইউনিয়নের অবিলম্বে পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যক্রম যারা জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় এনে এ অবৈধ বালু ব্যবসার চিরস্থায়ী সমাধান করা আহবান জানান স্থানীয় ছাত্র-জনতা এবং ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। এদিকে অভিযান এবং অবৈধভাবে বালি উক্তোলনের ব্যপারে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: জামশেদুল আলম স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, বাঁশখালী উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় স¤প্রতি কৃষি জমিসহ অননুমোদিত মাটি কাটা, বিভিন্ন ছড়া থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন ও রাতের আঁধারে ডাম্পার ব্যবহার করে সেগুলো অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন মাধ্যমে অবগত হয়েছে।
এ সব অপরাধ রোধে ইতোপূর্বে উপজেলা প্রশাসন অসংখ্য অভিযান পরিচালনা করেছে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে এ পর্যন্ত অনেককেই শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। শাস্তির মধ্যে রয়েছে অর্থদণ্ড, কারাদণ্ডসহ ডাম্পার ও স্ক্যাভেটর জব্দ। রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায়ই অপরাধীদের ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়না, পুরো উপজেলা জুড়ে দুষ্কৃতিকারীদের শক্তিশালী নেটওয়ার্কের কারণে। সম্প্রতি পুইছড়ির মীরপাড়া নামক স্থান থেকে সরকারি বালি অবৈধভাবে কেটে নিয়ে যাচ্ছে এরূপ অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা প্রশাসন রাতে বারবার অভিযান পরিচালনা করেও ঘটনাস্থলে কোন আসামীদের পাওয়া যায়নি।
সরেজমিনে তদন্তপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার জন্য বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। একইসাথে অন্যান্য জায়গায়ও যারা বেআইনিভাবে মাটি কেটে গর্ত তৈরি করেছেন তাদের বিরুদ্ধেও একই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান ।