কল্যাণ বড়ুয়া,বাঁশখালী : চট্টগ্রামের আলোকিত পর্যটন স্পট বাঁশখালী ইকোপার্ক দীর্ঘ সময় কোনরুপ সংস্কার না হওয়াতে হতাশায় ছিল পর্যটক থেকে শুরু করে সর্বস্তরের জনগন। তার সাথে চলাচলের একমাত্র সড়কটি একদিকে সরু অন্যদিকে ক্ষতবিক্ষত থাকায় এ ইকোপার্কে আগমনকারি মানুষের ভোগান্তির শেষ ছিল না। অবশেষে দীর্ঘ ভোগান্তির অবসান ঘটাতে ২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১০ ফুট প্রসস্থ করে ৩.৩৪ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার ও সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে।
বাঁশখালী ইকোপার্ক এর বাকী আরো ১.৫ কিলোমিটার সড়ক সড়ক সংস্কার ও সম্প্রসারণ বাকী থাকলে ও তা কখন আবার বরাদ্দ এবং কাজ শুরু হবে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া না গেলে শুরু হওয়া কাজ আগামী জুনের মধ্যে শেষ হবে বলে জানান বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফাহাদ বিন মাহমুদ।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের আলোকিত পর্যটন স্পট বাঁশখালী ইকোপার্ক এর ২০০৩ সাল থেকে আনুষ্টানিকভাবে পার্কের যাত্রা কার্যক্রম শুরু হলে সারাদেশ থেকে এ পার্ক একনজর দেখার জন্য ভিড় জমায়। কিন্ত ২০০৮ সালে প্রলয়ংকরী পাহাড়ি ঢলের পানি তোড়ে বাঁশখালী ইকোপার্কের বামের ছড়ার বাঁধ ভেঙে ইকোপার্কের বেশ কিছু স্থাপনা ও হাইড্রোইলেক্ট্রনিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি তছনছ হয়ে যায়। এ সময় ইকোপার্কের বেশ কিছু স্থাপনা ভেঙে গেলে পর্যটকের সংখ্যা কিছুটা হ্রাস পায়।
এক সময় পাখির কিচিরমিচির শব্দ, পশু পাখির বিচরনে মুখরিত থাকলেও দীর্ঘ সময় আশানুরুপ উন্নয়ন বন্ধ থাকা এবং অধিকাংশ স্থাপনা সংস্কারহীন হয়ে পড়ায় অনেকটা পর্যটক বিমুখ হয়ে পড়ে। আর চলাচলের একমাত্র পার্কে আসার একমাত্র সড়কটি ভাঙ্গন সৃষ্টি হওয়ায় বড় ধরনের কোন গাড়ি বর্তমানে পার্কে প্রবেশ করতে না পারাতে জৌলুশহীন হয়ে পড়ে বাঁশখালী ইকোপার্ক। অথচ এক সময় দক্ষিণ চট্টগ্রামের আলোকিত পর্যটন স্পট হিসাবে পাখির কিচিরমিচির শব্দ, পশু পাখির বিচরনে মুখরিত হওয়া, এলোমেলো অসংখ্য লেক, আঁকাবাকা রাস্তা,
দুইটি ঝুলন্ত ব্রীজ, ৩টি পর্যটন টাওয়ার হতে সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখার জন্য পর্যটকেরা প্রতিনিয়ত ভীড় জমাত এ পার্কে।
এ পার্কের বামের ছড়া ও ডানের ছড়ার পানি দিয়ে কয়েকশত একর জুড়ে হয়ে থাকে বোরো চাষ। সেটা রক্ষণা বেক্ষণ এবং লেকের পানিতে মাছ চাষ করে অনেক টাকা উপার্জন করার সুযোগ থাকলে ও শুধু মাত্র পার্কের প্রবেশ পথ গাড়ি পাকিং টা সরকারি ভাবে লিজ দিয়ে প্রতিবছর ১০/১২ লক্ষ টাকা পেয়ে থাকে মাত্র।
বিশাল পাহাড়ি এলাকা জুড়ে এ ইকোপার্ক হওয়াতে পরিবারের লোকজন নিয়ে খোলামেলা পরিবেশে ঘুরে ফিরে সময় কাটানো যায়। শিশুরা দোলনায় চড়ে ও ঝুলন্ত সেতুতে দৌড়ে সময় অতিক্রম করে। বাঁশখালী ইকোপার্কের মত বিশাল এলাকা জুড়ে পর্যটন স্পট আর কোথাও নেই। এই পর্যটন স্পটকে সরকার যদি যথাযথ ভাবে ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আরো বেশী কার্যক্রম করে তাহলে পর্যটকদের কাছ থেকে আরো বেশী রাজস্ব পাবে সরকার তাতে কোন সন্দেহ নেই। বাঁশখালী ইকোপার্কে আসার একমাত্র সড়ক শীলক‚প মনছুরিয়া বাজার থেকে ইকোপার্ক পর্যন্ত সরু সড়কটি বর্তমানে ১০ ফুট প্রসস্থ করে সংস্কার কাজ শুরু হলেও স্থানীয় জনগন পার্কের বিভিন্ন স্থাপনার সংস্কার করার উদ্যোগ গ্রহন করার জন্য কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
স্থানীয় জনসাধারন বাঁশখালী ইকোপার্কেকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য বনবিভাগ ও সংশ্লিষ্টর প্রতি আহবান জানান । চুনতি ও জলদী অভযারণ্যর বিশাল এলাকা জুড়ে অবস্থিত এ পার্কের ব্যাপারে বাঁশখালী ইকোপার্কের সাবেক কর্মকর্তা ও জলদী অভযারণ্য রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুজ্জমান শেখ জানান, প্রকৃতি সমৃদ্ধ বাঁশখালী ইকোপার্ক এলাকা স্বচক্ষে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবে না এর বিশালতা। এই স্পটটি যথাযথ ভাবে আরো বেশী উন্নয়ন ও পর্যটন উপযোগী করা প্রয়োজন। তাতে করে সরকার আরো বেশী রাজস্ব পেত। বাশঁখালী ইকোঁপার্কের উন্নয়নে একটি প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে তা বাস্তবায়ন করা হলে পুর্বের অবস্থায় ফিরে পাবে বলে তিনি দাবী করেন।
একই কথা বলেন, বাঁশখালী ইকোপার্কে রেঞ্জ কর্মকর্তা মো: ইসরাইল হক। তিনি পার্কের উন্নয়নে অচিরেই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে বলে তিনি জানান। বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফাহাদ বিন মাহমুদ বলেন,বাশঁখালী ইকোঁপার্ক সত্যিই একটি সুন্দর এলাকা। উন্নয়ন কর্মকান্ড ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে আধুনিকতার রুপ পাবে। বর্তমানে ২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১০ ফুট প্রসস্থ করে ৩.৩৪ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার ও সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে। বাঁশখালী ইকোপার্ক এর বাকী আরো ১.৫ কিলোমিটার সড়ক সড়ক সংস্কার ও সম্প্রসারণ বাকী থাকলে ও তা কখন আবার বরাদ্দ এবং কাজ শুরু হবে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া না গেলে শুরু হওয়া কাজ আগামী জুনের মধ্যে শেষ হবে বলে জানান।