জাকারিয়া জাহিদ , কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার চর গঙ্গামতি সমুদ্র সৈকতে প্রতিনিয়ত ভেসে আসছে অজস্র ছোট ছোট মৃত সাদা ঝিনুক। সৈকতের বিশাল এলাজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এসব ঝিনুকের খোলস। সৈকতের ধুধু বালুচরের উপর এসব ঝিনুকের সাদার আস্তরন সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে। শুধু চর গঙ্গামতি সৈকতই নয় দীর্ঘ ২২ কিলোমিটার সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে মৃত ঝিনুকের দেখা মিলেছে।তবে বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবছর বেশি পরিমানে মৃত ঝিনুকের খোলস ভেসে আসায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন গবেষকসহ পরিবেশ কর্মীরা।
চর গঙ্গামতি এলাকার জেলে আবজাল হোসেন বলেন, এক দশক আগেও সৈকতে বড় সাইজের ঝিনুক ভেসে আসতো। সেসব ঝিনুক সংগ্রহ করে খোলস বিক্রি করা যেতো। কিন্তু গত কয়েকদিন পর্যন্ত সৈকতে একেবারে গুড়ি গুড়ি ঝিনুকের খোলস ভেসে এসেছে। বিশাল এলাকাজুড়ে এসব খোলস পড়ে থাকায় দেখতে ভালোই লাগছে। তবে ভেসে আসা খোলসগুলো মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে অথবা সমুদ্রের ঢেউয়ে ফের গভীরে চলে যাচ্ছে। একই এলাকার অপর জেলে মাশারেফ হোসেন বলেন, আমরা আগে এতো বেশি পরিমানে ঝিনুকের খোলস পড়ে থাকতে দেখিনি। এবছর একটু বেশিই মনে হচ্ছে। সাইজে গুড়ি গুড়ি হওয়ায় এগুলো কোন কাজে আসেনা।
কলাপাড়া উপজেলায় পরিবেশ-প্রতিবেশ নিয়ে কাজ করা পরিবেশ কর্মী সাংবাদিক মেজবাহ উদ্দিন মাননু বলেন, প্রতি বছরই সৈকতে মৃত ঝিনুক ভেসে আসে। তবে এবছর প্রচুর পরিমানে ছোট ছোট মৃত ঝিনুক ভেসে এসেছে। এটা নিয়ে আমরা পরিবেশ কর্মীরা অনেকটা চিন্তিত। তবে কেন এভাবে প্রতিবছর ঝিনুক ভেসে আসে বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে তার কারন অনুসন্ধান করার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি ঝিনুকের খোলস সৈকতের পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কিনা বা এসব খোলস সংগ্রহ করে কাজে লাগানো যায় কিনা সে বিষয়ে ক্ষতিয়ে দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষনা ইনস্টিটিউট পরিচালিত খেপুপাড়া নদী উপকেন্দ্রের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অভিজিৎ বসু বলেন, সমুদ্রের পানিতে কয়েকটা স্তর থাকে। এর মধ্যে শামুক এবং ঝিনুক একেবারে নিচের স্তরে থাকে। সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া ও পানিতে লবনাক্ততা বৃদ্ধি সহ পরিবেশ গত নানা কারনে ঝিনুক মরে তীরে ভেসে আসতে পারে। তবে ল্যাব গবেষনা ছাড়া কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসা মৃত ঝিনুকের কারন বলা যাচ্ছেনা।