পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফির বসতবাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় জড়িত মূল পরিকল্পনাকারী মো. শাহাদাত হাওলাদার (২২) এবং তার সহযোগী মো. মাহফুজ মোল্লাকে (২১) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত রোববার রাতে বরিশাল ও পটুয়াখালীতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার করে। আজ সোমবার পটুয়াখালী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
পটুয়াখালী পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ জানান, গত ১২ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ফেসবুক ও ইউটিউব সেলিব্রেটি নুরুজ্জামান কাফির পরিবারের সদস্যরা রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। এসময় অজ্ঞাতনামা কিছু ব্যক্তি সকলের অজান্তে তার বসতঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। ওই ঘরে বসবাসরত নুরুজ্জামান কাফির বাবা, মা, ভাই ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ঘরের পেছনের দরজা ভেঙে বের হয়। খবর দিলে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনার পরদিন মো. নুরুজ্জামান কাফি বাদী হয়ে কলাপাড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ বিভিন্ন তথ্য, উপাত্ত সংগ্রহ করে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গত রোববার রাতে ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী মো. শাহাদাত হাওলাদারকে বরিশাল মেট্রোর কোতয়ালি থানা এলাকা ও অপর সহযোগী মো. মাহফুজ মোল্লাকে পটুয়াখালী সদর থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার মো. শাহাদাত হাওলাদারের বাড়ি বরগুনার আমতলী এলাকায়। তার পিতার মো. নসা হাওলাদার । গ্রেপ্তার অন্যজন মো. মাহফুজ মোল্লার বাড়ি পটুয়াখালী কলাপাড়ার টিয়াখালী এলাকায়। তার পিতার নাম মো. হিরন মোল্লা।
পটুয়াখালী পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ আরও জানান, গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মো. শাহাদাত বরিশালে একটি কলেজে অর্থনীতি বিষয়ে সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও মো. মাহফুজ মোল্লা বরিশালে অপর একটি কলেজে ডিগ্রিতে অধ্যায়নরত। তারা দুজনেই নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্র সংগঠনের সাথে জড়িত। ঢাকার ধানমন্ডিতে অবস্থিত ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভেঙে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় নুরুজ্জামান কাফির তৈরি বিভিন্ন ভিডিও কন্টেন্ট দেখে কাফির প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে কাফির বসতঘর পুড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। পরে ডিজেল কিনে রাতের আধারে কাফিদের বসতঘর ও রান্না ঘরের দেয়ালে, চালে, কাঠে ও টিনের বিভিন্ন জায়গায় ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। যা নিজেদের ব্যবহৃত মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে মোটরসাইকেলযোগে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
পুলিশ সুপার আনোয়ার জাহিদ জানান, এ ঘটনায় কোনো ইন্ধনদাতা, সহায়তাকারী বা অর্থযোগানদাতা যেই জড়িত থাকুক তাদেরকেও গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
