শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৭ মার্চ, ২০২৫, ০২:৩৩ রাত
আপডেট : ০৭ মার্চ, ২০২৫, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ইফতারের শীর্ষে নওগাঁর পাতলা দই

ডেস্ক রিপোর্ট : পাতলা দই নওগাঁবাসীর কাছে বিশেষ ধরনের পানীয়। খেজুর, শরবত, ছোলা, পেঁয়াজুসহ নানা পদ থাকলেও পাতলা দই কিংবা ঘোল না হলে তাদের কাছে ইফতার যেন অপূর্ণ থেকে যায়। ইফতারের সময় পাতলা দই খাওয়ার প্রচলন চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। রোজা রেখে দিন শেষে এক গ্লাস পাতলা দই বা ঘোল তৃষ্ণার্ত রোজাদারদের প্রশান্তির তৃপ্তি এনে দেয়।

রমজান মাসের প্রথম দিন থেকেই নওগাঁ শহরের ফুটপাত থেকে শুরু করে অভিজাত রেস্তোরা ও প্রসিদ্ধ দইয়ের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। দুপুরের পর থেকেই মাটির হাঁড়ির পসরা সাজিয়ে ফুটপাত ও দোকানে পাতলা দই বিক্রি করতে দেখা যায় বিক্রেতাদের। বিশেষ করে শহরের ব্রিজের মোড়, তাজের মোড়, সরিষাহাটির মাড়ে, গোস্তহাটির মোড়, দয়ালের মোড়ের ফুটপাত ও প্রসিদ্ধ দই-মিষ্টির দোকান ছাড়াও শহরের অলিগলিতে ফেরি করে পাতলা দই বিক্রি করতে দেখা যায়।

পাতলা দই কিনতে আসা স্কুল শিক্ষক জাহিদ হোসেন বলেন, দুই ধরনের মাটির পাতিলে বিক্রি হচ্ছে পাতলা দই। একটু বড় সাইজের দইয়ের পাতিল বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা এবং ছোট সাইজের পাতলা দইয়ের পাতিল বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকা পর্যন্ত। গতবারের চেয়ে হাঁড়ি প্রতি এবার ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা। 

আশফাকুল ইসলাম নামের একজন ক্রেতা বলেন, নওগাঁর ঐতিহ্যবাহী খাবার হলো পাতলা দই। এই পাতলা দইয়ের কদর গরম এলেই বাড়ে। যেহেতু গরমের শুরুতেই রোজা শুরু হয়েছে এজন্য আগেই দই বাজারে উঠেছে। তবে গত বছরে তুলনায় এবার দাম একটু বেশি। 

শহরের লিটন ব্রিজের উপর পাতলা দই বিক্রেতা সামছুল হক বলেন, দুধ ও চিনির দাম বেশি হওয়ায় পাতলা দই তৈরি করতে খরচ বেশি পড়ায় দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন।

পাতলা দইয়ের প্রচলন সম্পর্কে নওগাঁর বিশিষ্ট কবি ও গবেষক আতাউল হক সিদ্দিকী বলেন, এখন যেটাকে আমরা ঘোল কিংবা পাতলা দই বলছি, এক সময় এটা মাঠা নামেই বেশি পরিচিত ছিল। ষাট-সত্তরের দশকে শহরের লিটন ব্রিজের ওপরে মাঠার হাঁড়ি নিয়ে বসতেন ঘোষেরা। প্রচণ্ড গরমের দিন লোকজন সেই মাঠা খেতে হুমড়ি খেয়ে পড়তেন। এক গ্লাস মাঠা ৫ থেকে ১০ পয়সা করে বিক্রি হতো। আশি-নব্বইয়ের দশকে শহরের কালীতলা ও চুড়িপট্টি এলাকার মিষ্টির দোকানগুলোতে টক দই বিক্রি শুরু হয়।

নওগাঁর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার আশীষ কুমার সরকার বলেন, পাতলা দই বলি আর ঘোল কিংবা মাঠা বলি তা যুগ যুগ ধরে মানুষ এ পানীয় পান করে আসছে। দুধের ননি থেকে মাখন আলাদা করে ফেলার পর যে চর্বি ছাড়া জলীয় অংশ রয়ে যায় তাই আসলে ঘোল বা মাঠা। এটি অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি পানীয়। এই দইয়ে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন, উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে। যা শরীরের বিভিন্ন উপকারে আসে। এছাড়া উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। হজম শক্তির বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এছাড়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ত্বক ভালো রাখে।

সুত্র : বিডি-প্রতিদিন

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়