শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৬ মার্চ, ২০২৫, ১১:৫৭ রাত
আপডেট : ০৭ মার্চ, ২০২৫, ০৩:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভ্রমন কর জালিয়াতির ঘটনায় ধরা খেল ৬  ভারতীয়  

আইরিন হক, বেনাপোল: বেনাপোল বন্দরে ভ্রমণ কর জালিয়াতির ঘটনায় ৬ ভারতীয় পাসপোর্টধারীকে ধরেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। তবে পরবর্তীতে  এধরনের অপরাধ করবেনা মুসলিকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার( ০৬ ডিসেম্বর) দুপুর ২ টার দিকে অভিযুক্তদের সোনালী ব্যাংক থেকে শাস্তি মুলক ডবল করে ভ্রমন ট্রাক্স কেটে (প্রত্যেককে দুই হাজার টাকার ভ্রমন কর) ছেড়ে দেওয়া হয় । এর আগে গোঁপন খবর পেয়ে বেনাপোল পোর্টথানা পুলিশ তাদের চেকপোষ্ট কাস্টমসের কাছে সোপর্দ করে।
অপরাধী ৬ ভারতীয়ের মধ্যে চার জন নারী ও দুই পুরুষ পাসপোর্টধারী রয়েছে।

অভিযুক্তরা হলেন, কলকাতার আহম্মেদ মুসাইন,সগির হোসেন,জিন্নাত খাতুন,রেশমা খাতুন,নুদরাত আরা ও পারভিন শাহিন।

এদিকে পাসপোর্টধারীদের ভ্রমন করের রশিদ সঠিক কিনা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এনবিআর থেকে বেনাপোল চেকপোষ্ট কাস্টমসে নিদিষ্ট কারোর তদারকি নেই। কাস্টমস বন্দরের নাম মাত্র  দায়িত্বে  প্রায়ই ঘটছে ভ্রমন কর ফাঁকির ঘটনা। অপরাধীদের বিরুদ্ধে শাস্তি মুলক আইনী ব্যবস্থা না থাকায়  সরকার ভ্রমন ক্ষাতে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। ইতিপূর্বেও একাধিকবার ভ্রমনকর ফাঁকির অভিযোগে ভারতীয় কয়েকজন পাঁচপোর্টধারীকে আটক করা  হয়েছিল। তবে নানান অযুহাতে শেষ পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনি ব্যবস্থা নেয়নি কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

অভিযুক্ত  ভারতীয় পাসপোর্টধারীরা জানান, তারা অভাবের কারনে ভারত থেকে কেনাকাটা করে এদেশে এসে বিক্রি করেন। গতকাল বিমানে বাংলাদেশে এসেছিলেন। পরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে ফিরছিলেন। ভ্রমন করের জাল রশিদ তাদেরকে কলকাতা থেকে পাঠিয়েছেন। সীমান্ত পার হবার সময় তাদের পাসপোঁর্টে থাকা ভ্রমন করের রশিদ পরীক্ষা করলে তারা ধরা পড়ে। 

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক মো. সজিব নাজির জানান, দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল চেকপোস্টে ভ্রমণকর জালিয়াতির একটি শক্তিশালী চক্র সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। এ ধরনের একটি গোপন সংবাদ আমাদের কাছে আছে। কিন্তু বিষয়টি কাস্টমস কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব, আমাদের নয়।

বেনাপোলের ব্যবসায়ী আশরাফ হোসেন জানান, ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রীদের ভ্রমণকর চেকিংয়ের কোনো কার্যক্রম নেই বেনাপোল চেকপোষ্টে। কাস্টমসের পক্ষ থেকে প্রতিটি পাসপোর্ট যাত্রীর ভ্রমণকর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাটা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না।

পাসপোর্টধারীদের ভ্রমন কর সঠিক কিনা নাম মাত্র যাচাই করে বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। তবে অনিয়ম ধরা পড়লে আইনী ব্যবস্থা গ্রহনে কেউ দায়িত্ব নেয়না। নতুন করে ট্যাক্স কেটে যাত্রীরা চলে যায়। জালিয়াতির ঘটনায়  যে ৬ জন ভারতীয় পাসপোর্টধারী ধরা পড়েছে তারা একাধিকবার এপথে যাতায়াত করলেও কখনো বৈধ ভ্রমন কর পরিশোধ করেনি। কেবল সোনালী ব্যাংকের  নামে কমপিউটার থেকে ভূয়া রশিদ বানিয়ে যাতায়াত করেছে।

বেনাপোল পোর্টথানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল মিয়া জানান, পোর্টথানা পুলিশ চেকপোষ্টে নিয়মিত  টহলের সময়  জানতে পেরে পাসপোর্টধারীদের সাথে নিয়ে চেকপোষ্ট কাস্টমসে যায়। পরে তারা প্রাথমিক পরীক্ষা করে ভ্রমন ট্রাক্সের রশিদ জাল নিশ্চিত করেন। পরে পূনরায় যাত্রীদের নতুন করে ভ্রমন কর কেটে তারা ভারতে পাঠায়। কাস্টমসের কেউ বাদী না হওয়ায় অভিযুক্ত পাসপোর্টধারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা সম্ভব হয়নি জানান ওসি।। 

বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ আহসানুল কাদের ভূঁইয়া জানান, ভ্রমন কর জালিয়াতি চক্র ধরা পড়লেও তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহন না হওয়ায় দিন দিন এ ধরনের অপরাধ বন্ধ হচ্ছেনা। এতে সরকার বড় অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। চেকপোষ্ট কাস্টমসে ভ্রমন কর যাচায়ের জন্য সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত কাউকে নিযুক্ত করলে জালিয়াতি বন্ধ হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়