চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় গণপিটুনিতে ২ জনের মৃত্যুর পর ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা পিস্তলটি নগরের কোতোয়ালি থানা থেকে লুট হওয়া। হত্যার আগে ওই পিস্তল দিয়ে গুলি ছুড়েছিলেন নিহত ব্যক্তিদের একজন নেজাম উদ্দিন। বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই তথ্য জানান। খবর: মানবজমিন।
রাউজানে এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে খুনের মামলায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জেলা পুলিশ। পুলিশ সুপার বলেন, আধিপত্য বিস্তার ও অভ্যন্তরীণ বিরোধের কারণে খুন হন নেজাম ও সালেক। ঘটনার দিন তারা সাতটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে সেখানে গিয়ে ব্যবসায়ীদের অস্ত্র প্রদর্শন করেছিলেন। তারা চাঁদার জন্য নিয়মিত সেখানে যেতেন বলে পুলিশ তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে। চার থেকে পাঁচ দিন আগেও তারা সেখানে গিয়ে এক ইউপি সদস্যের স্ত্রীকে থাপ্পড় মেরেছিলেন; যার কারণে জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, ঘটনার দিন নেজাম সেখানে গিয়ে অস্ত্র নিয়ে গুলি করেছিলেন। হত্যাকাণ্ডের পর সেখান থেকে যে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছিল, সেটি সিএমপির কোতোয়ালি থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, কোনো অবস্থায় ভাবার সুযোগ নেই, প্রশাসন নির্বিকার হয়ে গেছে। আমরা আমাদের মতো প্রকৃত সত্য ঘটনা উদ্ঘাটনের জন্য যা কিছু দরকার, সবকিছু করব। সে জন্য একটু সময় নিচ্ছি। প্রকৃত ঘটনা কী, সেটা আমাদের উদ্ঘাটন করা দরকার। পুলিশ জানায়, নিহত সালেকের বিরুদ্ধে দুটি হত্যা, বিস্ফোরকসহ পাঁচটি ও নেজামের বিরুদ্ধে একটি মামলা রয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর নগরের আটটি থানা ও আটটি ফাঁড়িতে লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। ওই সময় ৮১৩টি অস্ত্র ও ৪৪ হাজার ৩২৪ গুলি লুট হয়। এসব অস্ত্র ও গুলির বেশির ভাগই এখনো উদ্ধার হয়নি বলে। পুলিশ সুপার বলেন, পুলিশের অনেক অস্ত্র খোয়া গেছে। এ অস্ত্রগুলো কীভাবে কাদের কাছে গেল, সেগুলো অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়। অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে।
গত সোমবার রাতে উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় মসজিদের মাইকে ডাকাত এসেছে ঘোষণা দিয়ে দুই ব্যক্তিকে গণপিটুনি দেয়া হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ওই দুজন নিহত হন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের মধ্যম কাঞ্চনা এলাকার মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন (৪৫) ও একই ইউনিয়নের গুরগুরি এলাকার মোহাম্মদ সালেক (৩৫)। ঘটনায় স্থানীয় এক দোকানিসহ চার ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।